সুপার-ঘূর্ণিঝড়-আম্পান!

  • ব্রেকিং নিউস

    ফ্রান্সে ডিসেম্বরে করোনা শনাক্তে মহামারীর প্রাথমিক সূত্রের আভাস!

    image-290766-1584596676

    ফরাসি বিজ্ঞানীদের এক গবেষণা বলছে, গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর নাগাদ ফ্রান্সে এক ব্যক্তি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন। ইউরোপীয় দেশটিতে এই মহামারী প্রথম আনুষ্ঠানিকভাবে শনাক্ত হওয়ার মাসখানেক আগের ঘটনা ছিল এটি। মঙ্গলবার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কখন ও কোথা থেকে নতুন করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঘটেছে, তা খুঁজে বের করতে এটা গুরুত্বপূর্ণ সূত্র হতে পারে।- খবর রয়টার্সের

    কোভিড-১৯ রোগী বলে শনাক্ত হওয়া ওই ব্যক্তি একটি ফরাসি টেলিভিশনকে বলেন, আমি এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছি জেনে অবাক। কারণ আমি ফ্লুতে আক্রান্ত বলেই জানতাম। গবেষকদের নেতৃত্বে ছিলেন ফ্রান্সের অ্যাভিসিন অ্যান্ড জিন ভারডিয়ার হাসপাতালের জরুরি ওষুধ বিভাগের চিকিৎসক ডা. ইয়াভিস কোহেন। গত ডিসেম্বর ও জানুয়ারির ২৪ রোগীর নমুনা পরীক্ষা করে তাদের একজনের করোনা শনাক্তের খবর দেন তিনি। কোভিড-১৯ মহামারীর রূপ নেয়ার আগে ওই ব্যক্তির ফ্লু পরীক্ষায় নেগেটিভ এসেছিল।

    অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল জার্নালে গবেষণার ফল প্রকাশ করা হয়েছে। এতে দেখা যায় ৪২ বছর বয়সী ওই ব্যক্তি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। আলজেরিয়ায় জন্ম নেয়া ওই লোক বহু বছর ধরে ফ্রান্সে বসবাস করছেন। পেশায় তিনি একজন মৎস্যব্যবসায়ী। তবে গবেষণার এই ফলকে অবাক করার মতো বলে কিছু দেখছেন না বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মুখপাত্র ক্রিস্টিয়ান লিন্ডমেয়ার।  জেনেভায় জাতিসংঘের ব্রিফিংয়ে অন্যান্য দেশকেও ২০১৯ সালের নমুনাগুলো ফের পরীক্ষা করে দেখতে উৎসাহিত করেছেন তিনি।

    বললেন, এতে মহামারী নিয়ে বিশ্ব একটি নতুন ও পরিষ্কার চিত্র পাবে। রোগের প্রাথমিক উৎসের খোঁজ পাওয়াও সম্ভব হবে।  করোনা শনাক্ত হওয়া আমিরোচ হ্যামার নামের ওই ব্যক্তিকে চিহ্নিত করতে পেরেছে ফরাসি সম্প্রচার মাধ্যম বিএফএম টিভি। প্যারিসের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় শহরতলী বোবিগনির বাসিন্দা তিনি।  চ্যানেলটিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে ওই ব্যক্তি বলেন, গত বছর আমি অসুস্থ হয়ে পড়ি। জ্বর, শুষ্ক কাশি ও অবসাদ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলাম। ভেবেছিলাম, ফ্লু আক্রান্ত হয়েছি। কিন্তু চিকিৎসক সে সময় কিছু শনাক্ত করতে পারেনি।

    এত পরে কোভিড-১৯ আক্রান্তের খবর দেয়ায় অবাক হওয়ার কথা জানান ওই লোক। বর্তমানে তিনি পরিপূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠেছেন। তবে যখন অসুস্থ হয়ে পড়েন, তার বেশ কয়েক মাস আগে তিনি বিদেশ সফর করেন। এর মধ্যে আর কোথাও যাওয়া হয়নি বলে তিনি জানান। কীভাবে, কোথা থেকে সংক্রমিত হয়েছেন, তাও জানা নেই তারা। প্যারিস বিমানবন্দরের কাছে একটি বিপণিবিতানে কাজ করেন তার স্ত্রী।

    এতে বিদেশ থেকে আসা লোকজনের সংস্পর্শে আসতে হচ্ছে তাকে। স্বাধীন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ফরাসি গবেষকদের এই তথ্য আরও তদন্ত করে দেখা দরকার। নটিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আণবিক ভাইরাসবিদ্যার অধ্যাপক জনাথন বল বলেন, এটা করোনার প্রাথমিক সূত্র হওয়া অসম্ভব না। কিন্তু কোনোভাবেই এটা তথ্য-প্রমাণের দিক থেকে চূড়ান্ত না।

    লিডস’ ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল রিসার্চের বিশেষজ্ঞ স্টেফিন গ্রিফিন বলেন, এটা সম্ভাব্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। কাজেই এই তথ্যের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে আমাদের আরও সতর্ক হতে হবে। সোমবার ফরাসি টেলিভিশনকে কোহেন বলেন, এটা এখনই বলা যাবে না যে ওই রোগীই ফ্রান্সে প্রথম করোনা আক্রান্ত কেউ। কারণ তার সর্বশেষ বিদেশ সফর ছিল ২০১৯ সালের আগস্টে আলজেরিয়ায়।

    তার মতে, প্রথম রোগী শনাক্ত হওয়া মহামারীবিদ্যার বিশাল কৌতূহলের বিষয়। এটা সার্স-কভ-২ বা নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে জ্ঞান ও বিস্তার সম্পর্কে নাটকীয় পরিবর্তন ঘটিয়েছে। তিনি ও তার সহ-গবেষকরা এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য তাদের নিবন্ধে তুলে ধরেছেন বলেও জানালেন এই চিকিৎসক। তারা জানান, চীনের সঙ্গে ভাইরাসের সংযুক্তি ও সাম্প্রতিক ছড়িয়ে পড়া নিয়ে তথ্যের অনুপস্থিতি বলে দিচ্ছে যে ডিসেম্বরের শেষ দিকেই ফ্রান্সে করোনার সংক্রমণ ঘটেছিল।

    কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত হয়ে পহেলা মার্চ থেকে ফ্রান্সে ২৫ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। দেশটিতে প্রথম তিন জনের সংক্রমণ ধরা পড়ে ২৪ জানুয়ারি। তাদের মধ্যে বোর্ডিওয়াকে এক, বাকি দুজন প্যারিসের।

    No comments

    If you have any doubt, please let me know that with your valuable comments.

    পৃষ্ঠা

    সর্বশেষ খবর

    COVID-19 থেকে বাঁচার উপায় !