সংঘাতের কিনারে চীন-তাইওয়ান!
‘
এক দেশ, দুই নীতির’ স্বায়ত্তশাসনের প্রস্তাবে চীনের অংশ হওয়াকে তাইওয়ান মেনে নিতে পারে না বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট সাই ইং-ওয়েন।
বুধবার জোরালোভাবে তিনি তার দেশে চীনের সার্বভৌমত্বের দাবি প্রত্যাখ্যান করেন। এর মধ্য দিয়ে দেশ দুটি এ যাবতকালের সবচেয়ে খারাপ সম্পর্কের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
কিন্তু চীনের জবাব হচ্ছে, পুনরেকত্রীকরণ অপরিহার্য। তাইওয়ানের স্বাধীনতা কখনোই সহ্য করা হবে না।
দ্বিতীয় ও শেষ মেয়াদের ক্ষমতার শপথ নেয়ার পর সাই বলেন, চীন-তাইওয়ানের সম্পর্ক এক ঐতিহাসিক সন্ধিক্ষণে। দুই পক্ষেরই দায়িত্ব হচ্ছে, দীর্ঘমেয়াদে সহাবস্থানের উপায় খুঁজে বের করা। বৈরিতা ও বিরোধিতার তীব্রতাও কমিয়ে আনা।
গত জানুয়ারিতে প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্টের নির্বাচনে সাই ও তার দল ভূমিধস বিজয় অর্জন করেছেন। নির্বাচনের সময় ও পরে তারা চীনের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়ার কথা জানিয়েছেন।
তাইওয়ানকে নিজের ভূখণ্ড বলে দাবি করে আসছে চীন। দেশটি বলছে, প্রয়োজনে জবরদস্তি করেও তাইওয়ানকে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসবে তারা। সাই বলেন, শান্তি, সমতা, গণতন্ত্র ও সংলাপের কথা আবারও বলছি।
কাজেই তাইওয়ানকে নিচে নামিয়ে ‘এক দেশ, দুই নীতির’ অধীন নিয়ে যেতে এবং আন্তঃপ্রণালীতে দুই দেশের অবস্থানকে খর্ব করতে চীনের কর্তৃত্ব মেনে নেয়া হবে না। নীতিগতভাবে আমাদের অবস্থান খুবই শক্তিশালী।
চীনের ‘এক দেশ, দুই নীতিতে’ সর্বোচ্চ মাত্রায় স্বায়ত্তশানের নিশ্চয়তার কথা বলা হয়েছে। সাবেক ব্রিটিশ উপনিবেশ হংকংও সেভাবে পরিচালিত হচ্ছে। ১৯৯৭ সালে দেশটিকে চীনের হাতে হস্তান্তর করে ব্রিটেন।
তাইওয়ানকেও সেই প্রস্তাব দিয়েছে চীন, কিন্তু দেশটির অধিকাংশ বড় রাজনৈতিক দল তা প্রত্যাখ্যান করছে। চীনের তাইওয়ান বিষয়ক কার্যালয় জানিয়েছে, তাইওয়ানের ক্ষেত্রে প্রিসিডেন্ট শি জিনপিং ‘এক দেশ, দুই নীতিতে’ অবিচল আছেন।
তাইওয়ানের স্বাধীন বিচ্ছিন্নতাবাদী তৎপরতার কোনো সুযোগ নেই। ‘চীনা জাতির নবযৌবনের জন্য এক ঐতিহাসিক অপরিহার্যতা হচ্ছে পনরেকত্রীকরণ।
জাতীয় সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষায় আমাদের যথেষ্ট ইচ্ছা, আত্মবিশ্বাস ও সক্ষমতা রয়েছে।’ তাইওয়ানের আনুষ্ঠানিক স্বাধীনতায় সাইয়ের ইচ্ছাকে বিচ্ছিন্নতাবাদী তৎপরতা হিসেবে দেখছে চীন। সাই বলেন, তাইওয়ান একটি স্বাধীন দেশ।
যেটাকে চায়না প্রজাতন্ত্র হিসেবে ডাকা হয়। কিন্তু বেইজিংয়ের শাসনে গণপ্রজাতন্ত্র চীনের অংশ হতে চায় না তারা। সাইয়ের পুননির্বাচনের পর থেকেই তাইওয়ানের কাছে সামরিক মহড়া বাড়িয়ে দিয়েছে চীন।
দ্বীপটির আকাশে যুদ্ধবিমান উড়াচ্ছে আর তাইওয়ানের চারপাশে যুদ্ধজাহাজের পরিভ্রমণ অব্যাহত রেখেছে। সাই বলেন, সরু তাইওয়ান প্রণালীতে শাস্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে তারা।
চীন ও তাইওয়ানকে আলাদা করে দিয়েছে এই প্রণালী। তিনি বলেন, চীনের সঙ্গে সংলাপে বসার ও আঞ্চলিক নিরাপত্তায় বাস্তবভিত্তিক অবদান রাখার চেষ্টা আমরা অব্যাহত রাখব।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চীনের সংঘাতের অন্যতম উৎস হয়ে দাঁড়িয়েছে তাইওয়ান। কূটনৈতিক সম্পর্ক না থাকলেও তাইওয়ানকে সমর্থন দিয়েছে যাচ্ছে ট্রাম্প প্রশাসন।
No comments
If you have any doubt, please let me know that with your valuable comments.