করোনাকে রুখে দিল যেসব দেশ !

বিশ্বময় দাপিয়ে বেড়ানো এ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত প্রতিটি দেশের মানুষ চরম এক মৃত্যু আতঙ্ক নিয়ে দিনযাপন করছেন। কেননা এখন পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ৪৮ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। তবে, ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি দেশ করোনাকে রুখে দিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে।
সোমবার (১৮ মে) ওয়ার্ল্ডো মিটারের দেয়া তথ্যানুযায়ী, এখন পর্যন্ত ভাইরাসটি শনাক্ত হয়েছে মোট ৪৮ লাখ ১ হাজার ৮৭৫ জনের শরীরে। ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন ৩ লাখ ১৬ হাজার ৬৭১ জন। এছাড়া আক্রান্ত হওয়ার পর সুস্থ হয়েছেন ১৮ লাখ ৫৮ হাজার ১৭০ জন।
বর্তমানে ভাইরাসের উপস্থিতি থাকা ২৬ লাখ ২৭ হাজার ৩৪ জনের মধ্যে গুরুতর অবস্থায় রয়েছেন ৪৪ হাজার ৮১৭ জন তবে আশার খবর অনেক দেশ ভাইরাসটির বিস্তার রোধে সফল; সুস্থ হয়েছে ১৮ লাখের বেশি মানুষ।
ভিয়েতনাম:
আক্রান্ত ও সুস্থতার হারের দিক দিয়ে বিবেচনা করলে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ ভিয়েতনাম এক্ষেত্রে সবচেয়ে সফল। প্রাদুর্ভাব শুরুর পর দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৩২০ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ২৬০ জনই এখন সুস্থ। কেউ মারা যায়নি। চিকিৎসা চলছে বাকি ৬০ জনের। ভিয়েতনাম সরকারিভাবে স্বাস্থ্য খাতের বিনিয়োগ ও রোগের চিকিৎসার চেয়ে রোগ প্রতিরোধ করার যে কর্মসূচি বহুদিন ধরে চর্চা করে আসছে করোনা প্রতিরোধে সেটি বড় ঢাল হিসেবে কাজ করেছে তারা।
সংক্রমণ ছড়ানোর আগে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয় দেশটির সরকার। আর সবচেয়ে বড় বিষয় হলো যখন নভেল করোনাভাইরাস মহামারী হিসেবে গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েনি, তার আগেই আগাম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে ভিয়েতনাম গোটা দেশ লকডাউনে যায়। এতে ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে রাখা সহজ হয়েছে।
তাইওয়ান:
করোনা মোকাবিলায় সফল হিসেবে বিবেচিত আরেকটি নাম হলো তাইওয়ান। চীনের নিয়ন্ত্রণে থাকার পরও এই দ্বীপ অঞ্চলটির সরকার জোরালো সব পদক্ষেপ নিয়ে করোনা প্রতিরোধে সক্ষম হয়েছে। সেখানে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত মাত্র ৪৪০ জন। তাদের মধ্যে ৩৯৫ জন সুস্থ এবং ৭ জন মারা গেছেন।
অস্ট্রেলিয়া:
এছাড়া করোনা মোকাবিলায় সফল হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে অস্ট্রেলিয়ার নাম। এ দেশটিতে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত রোগী মাত্র ৭ হাজার। আক্রান্তদের মধ্যে মারা গেছেন ৯৮ জন; যা তুলনামূলক কম। এছাড়া দেশটির ৬ হাজার ৩৬৩ জন কোভিড-১৯ রোগী এখন সুস্থ। নিউজিল্যান্ড: অস্ট্রেলিয়ার প্রতিবেশি নিউজিল্যান্ডও আছে এই তালিকায়। দেশটিতে এখন পর্যন্ত কোভিড-১৯ পজিটিভ হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন ১ হাজার ৪৯৯ জন। আক্রান্তদের মধ্যে ১ হাজার ৪৩৩ জন এখন সুস্থ। মারা গেছে ২১ জন। বাকি ৪৫ জনের চিকিৎসা চলছে।
থাইল্যান্ড:
চীনের উহানে প্রাদুর্ভাব শুরুর পর প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়ানো প্রথম দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম থাইল্যান্ড। তবে দেশটিতে এই ভাইরাসের সংক্রমণ অনেকটা কম। গতকাল থাইল্যান্ডে নতুন করে কোনো রোগী শনাক্ত হয়নি এবং কেউ মারাও যায়নি। দেশটিকে সফল বলা হচ্ছে। গত ৩১ ডিসেম্বর উহানে প্রথম রোগী শনাক্ত হয়। এর দুই সপ্তাহ পর ১৩ জানুয়ারি থাইল্যান্ডে কোভিড-১৯ রোগী ধরা পড়ে। দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৩ হাজার ২৮ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে ৫৬ জন মারা গেলেও চিকিৎসা শেষে এখন ২ হাজার ৮৫৬ জন সুস্থ।
দক্ষিণ কোরিয়া:
এদিকে চীনের পর করোনার প্রাদুর্ভাব বেশ জোরালোভাবে শুরু হয় দক্ষিণ কোরিয়ায়। কিন্তু দেশটিতে করোনার বিস্তার রোধে অনেকটা সফল হয়েছে। তবে দ্বিতীয় দফায় সংক্রমণ কিছুটা ছড়িয়ে পড়ায় বিপদে পড়েছে দেশটি। সেখানে আক্রান্ত ১১ হাজারের মধ্যে প্রায় ১০ হাজার এখন সুস্থ।
জার্মানি:
চীনের পর করোনা প্রাদুর্ভাবের কেন্দ্র হয়ে ওঠে ইউরোপ। বিশেষ করে ইতালি, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, স্পেন হয়ে ওঠে মৃত্যুপুরী। তবে ব্যতিক্রম ছিল জার্মানি। সেখানে আক্রান্ত বেশি হলেও মৃত্যু অনেক কম সুস্থ বেশি। জার্মানিতে আক্রান্ত ১ লাখ ৭৬ হাজারের মধ্যে ১ লাখ ৫৩ হাজার রোগী এখন সুস্থ।
চীন:
করোনা মোকাবিলায় সফল অর্থাৎ সবচেয়ে কম প্রাণহানির দিক দিয়ে ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাবস্থল চীনের নামও রয়েছে উপরের দিকে। ডিসেম্বরে প্রাদুর্ভাব শুরু হলেও দেশটিতে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন ৮২ হাজার ৯৪৭ জন। আক্রান্তদের মধ্যে চিকিৎসা শেষে এখন ৭৮ হাজার ২২৭ জন সুস্থ। বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৪৮ লাখ ছাড়িয়ে গেছে।
ওয়ার্ল্ডো মিটারের দেয়া তথ্যানুযায়ী, এখন পর্যন্ত ভাইরাসটি শনাক্ত হয়েছে মোট ৪৮ লাখ ১ হাজার ৮৭৫ জনের শরীরে। ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন ৩ লাখ ১৬ হাজার ৬৭১ জন। এছাড়া আক্রান্ত হওয়ার পর সুস্থ হয়েছেন ১৮ লাখ ৫৮ হাজার ১৭০ জন। বর্তমানে ভাইরাসের উপস্থিতি থাকা ২৬ লাখ ২৭ হাজার ৩৪ জনের মধ্যে গুরুতর অবস্থায় রয়েছেন ৪৪ হাজার ৮১৭ জন। ভাইরাসটিতে সবচেয়ে বেশি সংক্রমিত হয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের বাসিন্দারা।
দেশটির মোট ১৫ লাখ ২৭ হাজার ৬৬৪ জন সংক্রমিত হয়েছেন। এদের মধ্যে মারা গেছেন ৯০ হাজার ৯৭৮ জন। এছাড়া সুস্থ হয়েছেন ৩ লাখ ৪৬ হাজার ৩৮৯ জন। শনাক্তের সংখ্যায় দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা রাশিয়ায় সংক্রমিত হয়েছেন ২ লাখ ৮১ হাজার ৭৫২ জন। এদের মধ্যে মারা গেছেন ২ হাজার ৬৩১ জন। শনাক্তের সংখ্যায় এর পরের অব্স্থানে রয়েছে যথাক্রমে স্পেন, যুক্তরাজ্য, ব্রাজিল, ইতালি, ফ্রান্স, জার্মানি, তুরস্ক ও ইরান। এই তালিকার প্রত্যেকটি দেশেই সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা লক্ষাধিক।
Bangladeshi Taka Converter
No comments
If you have any doubt, please let me know that with your valuable comments.