রাশিয়া মহাকাশে ‘অ্যান্টি স্যাটেলাইট’ অস্ত্র উৎক্ষেপণ !
রাশিয়া মহাকাশে ‘অ্যান্টি স্যাটেলাইট’ অস্ত্র উৎক্ষেপণ করেছে বলে অভিযোগ করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। এটি এমন এক ধরনের অস্ত্র, যেটি মহাকাশে স্যাটেলাইটে আঘাত করার অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা যায়। যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ কমান্ডের প্রধান জেনারেল জে রেমন্ড এক বিবৃতিতে জানান, রাশিয়া সম্প্রতি মহাকাশভিত্তিক অ্যান্টি স্যাটেলাইট অস্ত্রের ধ্বংসাত্মক পরীক্ষা চালিয়েছে-তার প্রমাণ পাওয়া গেছে।
গত ১৫ জুলাই রুশ স্যাটেলাইট কসমস-২৫৪৩ থেকে কোনো এক বস্তু নতুন কক্ষপথে প্রবেশ করেছে। কসমস-২৫৪৩ স্যাটেলাইট ২০১৯ সাল থেকেই কক্ষপথে রয়েছে। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, কোনো বস্তু বলতে সম্ভবত রাশিয়ার আরেকটি স্যাটেলাইটকে বোঝানো হচ্ছে। খবর বিবিসি ও সিএনএন। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এর আগে জানিয়েছিল, তারা মহাকাশে রুশ যন্ত্রপাতি পরীক্ষা করার উদ্দেশ্যে নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করছে।
মহাকাশে রাশিয়ার পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ নিয়ে প্রথম অভিযোগ তুলল যুক্তরাজ্যও। আর এ অভিযোগ এমন একটা সময় উঠল যখন ব্রিটিশ পার্লামেন্টের নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা সংক্রান্ত ইনটেলিজেন্স অ্যান্ড সিকিউরিটি কমিটির (আইএসসি) এক রিপোর্টে উঠে আসে যে, যুক্তরাজ্যকে পশ্চিমা বিশ্বের সবচেয়ে বড় লক্ষ্যবস্তুর একটি বলে মনে করে রাশিয়া।
যুক্তরাজ্যের মহাকাশবিষয়ক অধিদফতরের প্রধান হার্ভে স্মিথ বলেন, রাশিয়ার সাম্প্রতিক স্যাটেলাইটের ‘চরিত্রগত বৈশিষ্ট্য অস্ত্রের মতো’। তিনি বলেন, ‘এ ধরনের কার্যক্রম মহাকাশের শান্তিপূর্ণ ব্যবহারকে ঝুঁকির মুখে ফেলে এবং মহাকাশকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করার ঝুঁকি তৈরি করে, যার ফলে যে কোনো স্যাটেলাইট ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।’
রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, চীনসহ ১০০টির বেশি দেশ মহাকাশ সংক্রান্ত একটি চুক্তির অংশ, যে চুক্তি অনুযায়ী মহাকাশ শুধু শান্তিপূর্ণ কার্যক্রমের উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা যাবে। মহাকাশে বা কোনো স্যাটেলাইটের কক্ষপথে কোনো ধরনের অস্ত্র স্থাপন করা যাবে না বলেও উল্লেখ রয়েছে ওই চুক্তিতে।
গত ফেব্রুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্র অভিযোগ তুলেছিল, দুটি রুশ স্যাটেলাইট একটি মার্কিন স্যাটেলাইটের কাছাকাছি প্রদক্ষিণ করেছিল। আবার ভূপৃষ্ঠ থেকে স্যাটেলাইট আটকে দিতে পারে-মস্কো এমন অস্ত্রের পরীক্ষাও চালিয়েছিল গত এপ্রিলে। গত কয়েক দশকে অ্যান্টি-স্যাটেলাইট-জাতীয় অস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছে শুধু চারটি দেশ-ভারত, চীন, যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া।
এর আগে অ্যান্টি স্যাটেলাইট সমরাস্ত্র বিমান বা রকেটে করে বহন করা হয়েছে। তবে মস্কো নিশ্চিতভাবে এমন স্যাটেলাইট তৈরির চেষ্টা করছে যেটি দিয়ে আরেকটি স্যাটেলাইট ধ্বংস করা যায়।
বর্তমান বিশ্বে তথ্য সংগ্রহ, যোগাযোগ, যাতায়াতের ক্ষেত্রে দিকনির্দেশনা ও পূর্বাভাস দেয়ার মতো কাজে স্যাটেলাইটের ওপর নির্ভরতা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে, তাই অ্যান্টি স্যাটেলাইট অস্ত্রের প্রতি আগ্রহও বাড়ছে। এ ধরনের অস্ত্র নিষিদ্ধ করা সংক্রান্ত কোনো চুক্তি বা আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা না থাকলেও বেশ কয়েকটি দেশ এই ধরনের সমঝোতা করার আহ্বান জানিয়ে আসছে।
No comments
If you have any doubt, please let me know that with your valuable comments.