এটিই যেন হয় শেষ বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড: সিনহার মা!
কক্সবাজারের টেকনাফে পুলিশের গুলিতে নিহত অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা মেজর সিনহা মো. রাশেদের মা নাসিমা আক্তার বলেছেন, আর কোনো মায়ের বুক যেন খালি না হয়। এটিই যেন হয় শেষ বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের ঘটনা।
সোমবার রাজধানীর উত্তরায় নিজ বাসায় এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন। এদিন অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তারা সিনহার মাকে সান্ত্বনা দিতে তার বাসায় যান। এ সময় নাসিমা আক্তার বলেন, আমি চাই– এটিই যেন হয় দেশে বিচারবহির্ভূত হত্যার শেষ ঘটনা। আর কোনো মায়ের বুক যেন খালি না হয়। এ বিষয়ে সবাই যেন সচেতন হন।
এ সময় তিনি বলেন, সিনহা পরবর্তী প্রজন্মের কথা ভাবত। দেশের জন্য কাজ করাই ছিল তার লক্ষ্য। এ জন্য তার কাজের প্রতি আমার সমর্থন ছিল। ব্রিফিংয়ে সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস বলেন, প্রধানমন্ত্রী সিনহা হত্যার বিচারের আশ্বাস দিয়েছেন। আমরা আশা করছি, দ্রুততার সঙ্গে বিচারকাজ সম্পন্ন হবে।
তিনি আরও বলেন, সিনহাকে বলেছিলাম– দেশের জন্য কাজ করে মানুষের হৃদয়ে জায়গা করে নিতে। মৃত্যুর পর তার প্রতি মানুষের সে ভালোবাসা দেখেছি– সে ছিল ‘প্রিন্স অব পিপলস হার্ট’। অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তাদের সংগঠন রিটায়ার্ড আর্মড ফোর্সেস অফিসার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন-রাওয়ার চেয়ারম্যান মেজর (অব.) খন্দকার নূরুল আফসারও ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, সিনহাকে ঠাণ্ডা মাথায় গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।
এ ঘটনায় কক্সবাজার পুলিশ সুপার (এসপি) এবিএম মাসুদ হোসেনকে প্রত্যাহারের দাবি জানান তিনি। তিনি বলেন, মেজর (অব.) সিনহা হত্যাকাণ্ডের তদন্ত যে গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে, তাতে আমরা সন্তুষ্ট। তবে বিচার প্রক্রিয়া যাতে দ্রুত হয় সেটি আমরা চাই। তিনি দাবি করে বলেন, কক্সবাজারের টেকনাফ থানার সংশ্লিষ্ট সব পুলিশ সদস্যের অস্ত্র সিজ (জব্দ) করতে হবে।
এর পাশাপাশি যাতে এটিই বিচারবহির্ভূত শেষ হত্যাকাণ্ড হয়, আর কোনো মায়ের বুক যাতে খালি না হয়, সেটি নিশ্চিত করার দাবি জানান তিনি। ৩১ জুলাই রাত সাড়ে ১০টার দিকে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান।
পরে গত বুধবার তার বড় বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস ৯ পুলিশ সদস্যকে আসামি করে আদালতে মামলা করলে আদালত মামলাটি টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নথিভুক্ত করার আদেশ দেন। পাশাপাশি র্যাথব ১৫-এর কমান্ডারকেও তদন্ত করার নির্দেশ দেন। পরে বৃহস্পতিবার বিকালে এ মামলায় ওসি প্রদীপসহ সাত আসামি আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। বর্তমানে সবাই কক্সবাজার জেলা কারাগারে রয়েছেন।
No comments
If you have any doubt, please let me know that with your valuable comments.