আর্মেনিয়া-আজারবাইজান সীমান্তে তুমুল সংঘর্ষ, নিহত বেড়ে ৯৫!
বিতর্কিত অঞ্চল নাগোরনো-কারাবাখকে কেন্দ্র করে রোববার থেকে শুরু হওয়া আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের মধ্যে গোলাগুলিতে অব্যাহত রয়েছে। গত দুদিনের যুদ্ধে ৮৪ সেনাসদস্যসহ ৯৫ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। নিহতদের মধ্যে ১১ জন বেসামরিক লোকও রয়েছে। খবর রয়টার্স, বিবিসি ও ডয়েচে ভেলের।
সংঘর্ষে দুই শতাধিক সেনা আহত হয়েছেন। সোমবার সন্ধ্যা নাগাদ উভয়পক্ষ পরস্পরের বিরুদ্ধে ভারী গোলাবর্ষণ অব্যাহত রাখে। ২০১৬ সালের পর দেশ দুটির মধ্যে আবার নতুন করে গত রোববার থেকে সীমান্ত বিরোধ নিয়ে সংষর্ঘ শুরু হয়। আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষায় সোমবার আংশিক সেনা মোতায়েনের ঘোষণা দেন।
দেশটির প্রসিকিউটরের কার্যালয় জানায়, সোমবার তাদের দুজন বেসামরিক ব্যক্তি নিহত হয়েছে। লড়াইয়ের শুরুতে প্রথম দিন রোববার আজারবাইজানের পাঁচজন বেসামরিক নাগরিক নিহত হন ও ৩০ জন আহত হন। এদিকে নাগোরনো-কারাবাখ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সোমবারের গোলাবর্ষণে তাদের ৫৩ সেনা নিহত হয়েছেন।
এর আগের দিন রোববার ৩১ কর্মকর্তা নিহত হন ও ২০০ জন আহত হন। তবে রোববার হারানো কিছু এলাকা সোমবার পুনরুদ্ধারে সক্ষম হয়। ২০১৬ সালের পর থেকে দেশ দুটির মধ্যে এটিই সবচেয়ে তীব্র লড়াইয়ের ঘটনা। এবারের লড়াইকে ‘জীবন-মরণ যুদ্ধ’ বলে ঘোষণা দিয়েছেন নাগোরনো-কারাবাখ নেতা আরায়িক হারুতিউন্যান।
তবে এই যুদ্ধ দীর্ঘমেয়াদে গড়ালে প্রতিবেশী শক্তিশালী দুই রাষ্ট্র রাশিয়া ও তুরস্ক মুখোমুখি অবস্থানে চলে আসতে পারে। আর্মেনিয়ার সঙ্গে দীর্ঘ দিনের সামরিক সখ্যতা রয়েছে রাশিয়ার। অন্যদিকে আজারবাইজানে তুর্কি জাতিসত্তার লোকজন থাকায় আঙ্কারার সমর্থন পাচ্ছে আজারবাইজান।
এদিকে আর্মেনিয়া-আজারবাইজান সংঘাত দেখতে চায় না বলে চীন জানিয়েছে। সংঘাতপূর্ণ দুই দেশের মধ্যে বিরোধ রাজনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে নিষ্পত্তির আহ্বান জানিয়েছে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও দুই দেশকে শান্তি বজায় রাখার পরামর্শ দিয়েছেন। ১৯৮০’র দশকের শেষ দিকে কারাবাখ অঞ্চলে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়। ১৯৯১ সালে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের মুহূর্তে সংঘর্ষ চূড়ান্ত আকার ধারণ করে। ১৯৯৪ সালে দুপক্ষের মধ্যে যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠার আগ পর্যন্ত এ সংঘর্ষে ৩০ হাজার মানুষ প্রাণ হারায়। কারাবাখ অঞ্চলটি আজারবাইজানের ভেতরে হলেও আর্মেনিয়ার সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা নিয়ে তা নিয়ন্ত্রণ করছেন আর্মেনীয় বংশোদ্ভূতরা।
No comments
If you have any doubt, please let me know that with your valuable comments.