আর্মেনিয়া-আজারবাইজান ফের লড়াই শুরু!
বিতর্কিত অঞ্চল নিয়ে প্রতিবেশী আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের মধ্যে ফের লড়াই শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে আজারবাইজানের অন্তত একটি হেলিকপ্টার গুলি করে ভূপাতিত করা হয়েছে। পাল্টা দোষারোপ করছে একে অপরকে।
আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী নিকোল পাশিনিয়ান বলেছেন, আজারবাইজান বিমান ও গোলন্দাজ হামলা শুরু করেছে। আজারবাইজান বলেছে, সীমান্তজুড়ে শুরু হওয়া গোলাবর্ষণের জবাব দিচ্ছে তারা, আর্মেনীয়দের গোলায় বেসামরিক হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।
আর্মেনিয়ার আগ্রাসন দমনে আজারবাইজানকে পূর্ণ সমর্থন দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে তুরস্ক। শান্তি চেয়ে দু’দেশকেই যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন কাউন্সিল। বিবিসি জানিয়েছে, ভয়ংকর রণমূর্তি ধারণ করেছে দু’পক্ষই। ইতিমধ্যেই সারা দেশে ‘মার্শাল ল’ জারির ঘোষণা দিয়েছে আর্মেনিয়া।
পাশাপাশি ‘পবিত্র মাতৃভূমি’ রক্ষায় নাগরিকদের সর্বাত্মক প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী পাশিনিয়ান। আর্মেনিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, স্থানীয় সময় রোববার সকাল ৮টা ১০ মিনিট থেকে আরাতসাক রিপাবলিকের (নাগোরনো-কারাবাখ অঞ্চল) রাজধানী স্তেপানাকের্তসহ বেসামরিক এলাকাগুলোতে হামলা চালাচ্ছে আর্মেনিয়া। এ পর্যন্ত দুটি হেলিকপ্টার, তিনটি ড্রোন ও তিনটি ট্যাংক ধ্বংস করেছে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সমানুপাতিকভাবে সাড়া দেব আর পুরো পরিস্থিতির দায়দায়িত্ব আজারবাইজানের সামরিক-রাজনৈতিক নেতৃত্বকে বহন করতে হবে।’ এর আগে আজারবাইজান এক ঘোষণায় বলে, ‘আর্মেনিয়ার সশস্ত্র বাহিনীগুলোর যুদ্ধজনিত ক্রিয়াকলাপ দমন করতে ও বেসামরিক জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমাদের সেনারা সীমান্তজুড়ে পাল্টা-আক্রমণাত্মক অভিযান শুরু করেছে।’
আজারবাইজানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বেশ কয়েকটি গ্রামে তীব্র গোলাবর্ষণে বেসামরিক হতাহতের ঘটনা ঘটেছে এবং অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। লড়াইয়ে তাদের একটি হেলিকপ্টার খোয়া গেলেও এর ক্রুরা জীবিত আছেন বলে জানিয়েছে তারা। পাশাপাশি আর্মেনিয়ার ১২টি এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম ধ্বংস করারও দাবি করেছে তারা। এর আগে ২০১৬ সালেও দু’পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা লড়াইয়ে গড়িয়েছিল। সে সময় লড়াই চার দিন পর্যন্ত স্থায়ী হয়েছিল।
নাগোরনো-কারাবাখ অঞ্চল নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে দেশ দুটির মধ্যে বিরোধ চলছে। সম্প্রতি ওই বিরোধ আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। একসময় আর্মেনিয়া ও আজারবাইজান, উভয় দেশই সোভিয়েত ইউনিয়নের অংশ ছিল।
১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পর দেশ দু’টি স্বাধীন হয়। তারপর থেকে নাগোরনো-কারবাখ অঞ্চল নিয়ে গত চার দশক ধরে বিরোধে জড়িয়ে আছে দুই প্রতিবেশী। আন্তর্জাতিকভাবে অঞ্চলটিকে আজারবাইজানের এলাকা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হলেও এটি আর্মেনিয়ান নৃগোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণে রয়ে গেছে।
জুলাইয়ে দু’পক্ষের মধ্যে লড়াইয়ে অন্তত ১৬ জন নিহত হয়েছিল। এর প্রতিক্রিয়ায় আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় গণজমায়েত মিলিত হয়ে লোকজন ওই অঞ্চলটি দখলে নিতে পূর্ণ সামরিক অভিযান চালানোর দাবি তোলে।
সূত্রঃ যুগান্তর
No comments
If you have any doubt, please let me know that with your valuable comments.