যে পদ্ধতিতে আফগানিস্তানে ইসলামী শাসন চায় তালেবান!
আফগানিস্তানে ইসলামী শাসন চায় দেশটির সাবেক শাসকগোষ্ঠী তালেবান। কাতারের দোহায় আফগান সরকারের সঙ্গে শান্তি আলোচনার উদ্বোধনী পর্বে এ কথা জানিয়েছেন গোষ্ঠীটির প্রতিনিধি দলের নেতারা। বলেছেন, শান্তি ফেরাতে সবার আগে ইসলামী শাসন ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে। তবে তালেবানের এ দাবির ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করেনি আফগান সরকার।
সরকারি প্রতিনিধি দলের পক্ষ থেকে কারাবন্দি বিদ্রোহী যোদ্ধাদের মুক্তির শর্তে ‘মানবিক যুদ্ধবিরতি’র আহ্বান জানানো হয়েছে। তবে এ (যুদ্ধবিরতি) ব্যাপারেও কোনো কথা বলেনি তালেবান পক্ষ।
আলোচনার মাধ্যমে একটা চুক্তিতে পৌঁছাতে উভয়পক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। খবর রয়টার্স ও আলজাজিরার। ‘সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধ’র নামে মার্কিন আগ্রাসনের পর আফগানিস্তানে প্রায় দুই দশক ধরে রক্তক্ষয়ী সংঘাত চলছে। কার্যত এই যুদ্ধে কোনো পক্ষই জেতেনি।
বিপরীতে লাখ লাখ বেসামরিক নাগরিকসহ যুদ্ধরত পক্ষগুলোর হাজার হাজার সেনা নিহত হয়েছে। ব্যয় হয়েছে কোটি কোটি ডলার। এখন যত দ্রুত সম্ভব আফগান যুদ্ধ থেকে নিজেদের গুটিয়ে নিতে চায় যুক্তরাষ্ট্র।
সেই লক্ষ্যেই মার্কিন মধ্যস্থতায় আফগান সরকারের সঙ্গে প্রথমবারের মতো মুখোমুখি আলোচনায় অংশ নিচ্ছে তালেবান। কাতারের রাজধানী দোহায় শনিবার অনুষ্ঠিত হয় ‘ঐতিহাসিক শান্তি আলোচনা’র উদ্বোধনী পর্ব।
শনিবার দোহার একটি হোটেলে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আফগান ‘হাই কাউন্সিল ফর ন্যাশনাল রিকনসিলিয়েশন’র চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আবদুল্লাহ। ১৭ দলবিশিষ্ট সরকারি প্রতিনিধি দল নেতৃত্ব দিচ্ছেন তিনি।
তালেবানের পক্ষে গোষ্ঠীটির উপনেতা মোল্লা আবদুল গনি বরদার। আরও উপস্থিতি ছিলেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও। সোমবার থেকে শুরু হবে দুই পক্ষের মধ্যে আনুষ্ঠানিক আলোচনা ও দর কষাকষি।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানের শুরুতে আফগান সরকারের প্রতিনিধি দলের প্রধান আবদুল্লাহ আবদুল্লাহ আশু যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘যুদ্ধের মাধ্যমে কোনো পক্ষই জয়ী হয় না।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, আমরা যদি একটি মর্যাদাপূর্ণ ও স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার কাজে হাত মেলাই এবং সততার সঙ্গে কাজ করি, তাহলে দেশে চলমান দুর্দশার অবসান হবে।’
কয়েক বছর ধরে আফগান সরকারকে ‘যুক্তরাষ্ট্রের হাতের পুতুল’ আখ্যা দিয়ে আলোচনার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে আসছিল তালেবান। এছাড়া আলোচনার আগে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার ও ইসলামী শরিয়া আইন চালুর দাবি জানিয়ে আসছিল গোষ্ঠীটি।
আলোচনার শুরুতেই সেই ইসলামী শাসনের বিষয়টি আগে তুলেছেন নেতারা। তালেবানের উপনেতা মোল্লা আবদুল গনি বরদার বলেন, ‘আমরা আফগানিস্তানকে একটি স্বাধীন, সার্বভৌম ও উন্নত দেশ হিসেবে দেখতে চাই। এবং এটা নিশ্চিতভাবেই হতে হবে ইসলামিক ব্যবস্থার অধীনে। যেখানে এর সব নাগরিক নিজেদের আদর্শের প্রতিফলন দেখতে পাবে।’
আলোচনার মাধ্যমে একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে উভয়পক্ষের প্রতি জোর আবেদন রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী পম্পেও বলেন, ‘আপনাদের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক ব্যবস্থা কি হবে, তা আপনাদেরকেই তৈরি করতে হবে।
সেটা ঠিক করতে হবে খোলা মন নিয়ে আলাপ-আলোচনার মাধ্যম্যই।’ তিনি আরও বলেন, ‘দুই পক্ষকেই একে অপরের কথা বুঝতে হবে। দুই পক্ষকেই নিপুণভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে। পুরো বিশ্ব আপনাদের দিকে তাকিয়ে আছে। তারা আপনাদের সফলতা দেখতে চায়।’
No comments
If you have any doubt, please let me know that with your valuable comments.