কারবাখে যুদ্ধবিরতির আহ্বান তিন পরাশক্তির, প্রত্যাখ্যান তুরস্কের!
বিতর্কিত নাগোরনো ও কারাবাখ অঞ্চল নিয়ে আজারবাইজান এবং জাতিগত আর্মেনীয়দের মধ্যে সংঘাত চলছে। পঞ্চমদিনের মতো চলা সংঘাত বন্ধে বৃহস্পতিবার যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছেন ফ্রান্স, রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টরা। তবে এ তিন পরাশক্তির পদক্ষেপ প্রত্যাখ্যান করেছে তুরস্ক। আঙ্কারা বলছে, এই তিন বড় শক্তির শান্তি পদক্ষেপে কোনো ভূমিকা না নেওয়া উচিত। খবর-রয়টার্স।
ফ্রান্স, রাশিয়া এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পার্বত্য ছিটমহল নিয়ে কয়েক দশকের পুরনো দ্বন্দ্বের মধ্যস্থতা করার জন্য ‘অর্গানাইজেশন ফর সিকিউরিটি এন্ড কো-অপারেশন’ (ওএসসিই) মিনস্ক গ্রুপ ১৯৯২ সালেও চেষ্টা করেছিল।
নাগোরনো-কারাবাখ আজারবাইজারের ভেতরে হলেও আর্মেনীয় নৃগোষ্ঠীর লোকজন অঞ্চলটি নিয়ন্ত্রণ করে আসছে, আর্মেনিয়া তাদের সমর্থন দিচ্ছে। ১৯৮৮-৯৪ সাল পর্যন্ত যুদ্ধের মধ্য দিয়ে অঞ্চলটি আজারবাইজান থেকে বিচ্ছিন্ন হলেও স্বাধীন দেশ হিসেবে এখনো কারো স্বীকৃতি পায়নি। বৃহস্পতিবার এক যৌথ বিবৃতিতে ফ্রান্স, রাশিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টরা বলেছেন, আমরা সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর সামরিক বাহিনীর মধ্যে অবিলম্বে সংঘাত বন্ধ করার আহ্বান জানাচ্ছি।
এতে বলা হয়, সেইসঙ্গে আর্মেনিয়া এবং আজারবাইজানের নেতাদেরকেও অবিলম্বে আস্থার সঙ্গে এবং কোনো পূর্বশর্ত ছাড়াই ওএসসিই মিনস্ক গ্রুপের আওতায় কার্যকর আলোচনা শুরুর প্রতিশ্রুতি দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। তবে তিন দেশের বিবৃতির পরেই তুর্কি পার্লামেন্টে প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যিপ এরদোগান তাদের বিরোধিতা করেছেন।
এরদোগান বলেন, যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও ফ্রান্স প্রায় ৩০ বছর এ সমস্যাটিকে অবহেলা করেছে। এখন তাদের যুদ্ধবিরতির জন্য জড়িত হওয়া অগ্রহণযোগ্য। তিনি বলেন, আর্মেনিয়ার দখলদাররা নাগোরনো-কারাবাখ থেকে সরে গেলেই স্থায়ী যুদ্ধবিরতি অর্জিত হতে পারে।
এর আগে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন কারাবাখ সংকট নিয়ে দেশের নিরাপত্তা পরিষদের সঙ্গে আলোচনা করেছিলেন বলে জানিয়েছেন ক্রেমলিনের মুখপাত্র। তাছাড়া, এই সংঘাতে মধ্যস্থতাকারী ‘অর্গানাইজেশন ফর সিকিউরিটি এন্ড কো-অপারেশন’ (ওএসসিই) মিনস্ক গ্রুপ লড়াই বন্ধে কিভাবে সহায়তা করতে পারে তা নিয়ে পুতিন এবং ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোও আলাপ করেছেন বলে জানিয়েছে ক্রেমলিন।
পাহাড়ী অঞ্চল নাগোরনো-কারাবাখ নিয়ে ২০১৬ সালের পর আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের মধ্যে সম্প্রতি গত রোববার থেকে তীব্র লড়াই চলছে। এতে এরইমধ্যে প্রায় ১শ’ মানুষের প্রাণ গেছে; যাদের মধ্যে বেসামরিক লোকজনও রয়েছে।
অঞ্চলটিকে ঘিরে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের সংঘাত ভূখণ্ডটির বাইরের কিছু অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ায় সাবেক এ দুই সোভিয়েত প্রজাতন্ত্রের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদে ও বড় পরিসরে যুদ্ধ বেধে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। দীর্ঘমেয়াদে লড়াই চললে তা দক্ষিণ ককেশাসের স্থিতিশীলতার ওপর বড় ধরনের প্রভাব ফেলবে।
No comments
If you have any doubt, please let me know that with your valuable comments.