পাঞ্জশির ঘিরে ফেলেছে তালেবান, যেভাবে সমাধান চায় মাসউদ বাহিনী!
পুরো আফগানিস্তান হাতের মুঠোয় নিলেও এখনো নিয়ন্ত্রণের বাইরে রয়েছে দেশটির পাঞ্জশির প্রদেশ। সোমবার তালেবানের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পাঞ্জশির দখলে তাদের কয়েকশ যোদ্ধাকে পাঠানো হয়েছে।
প্রয়াত তালেবানবিরোধী কিংবদন্তি তাজিক নেতা আহমদ শাহ মাসউদের ছেলে আহমদ মাসুদের নেতৃত্বে থাকা প্রায় নয় হাজার যোদ্ধার এ দুর্ধর্ষ ন্যাশনাল রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্টকে কাবু করতে সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়বে তালেবান। তবে তার আগে মাসুদের সঙ্গে আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছে তালেবান।
গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ক্ষমতা ভাগাভাগি বা অংশগ্রহণমূলক সরকারের শর্তে আলোচনায় সম্মত রয়েছে পাঞ্জশিরও। রয়টার্স, আলজাজিরা।
এএফপির এক প্রতিবেদন জানা গেছে, ‘তালেবানের আরবি ভাষার টুইটার অ্যাকাউন্টে বলা হয়েছে, ইসলামি আমিরাতের কয়েকশ মুজাহিদিনি পাঞ্জশির যাচ্ছেন তা নিয়ন্ত্রণে আনতে। স্থানীয় সরকারি কর্মকর্তারা শান্তিপূর্ণভাবে তালেবানের হাতে নিয়ন্ত্রণ দিতে অস্বীকৃতি জানানোর পর তাদের পাঠানো হচ্ছে।’
তালেবান মুখপাত্র জবিহুল্লা মুজাহিদ সোমবার আফগান সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘আমরা পাঞ্জশির ঘিরে ফেলেছি।’ তালেবানবিরোধী নেতা আহমেদ মাসউদ হুশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, তালেবান যদি শক্তি প্রয়োগ করে আমরাও প্রস্তুত আছি লড়াই করার জন্য। পাশাপাশি তালেবানদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে রাজি আহমেদ মাসউদ।
এই বোঝাপড়া তখনই সম্ভব যদি তালেবান চায় তো। তবে যুদ্ধের জন্য তৈরি তার দল সে কথাও জানান তরুণ এই আফগান নেতা। তিনি বলেন, আমরা তালেবানদের এটাই বোঝাতে চাই যে সামনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য বোঝাপড়া করাই একমাত্র রাস্তা। ধ্বংসের জন্য যুদ্ধ চাই না। তালেবানরা চাইলে বোঝাপড়া হতে পারে। আশির দশকে সোভিয়েতবিরোধী প্রতিরোধে আফগানিস্তানের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নেতা ছিলেন আহমেদ শাহ মাসউদ। পাঞ্জশিরের বাঘ নামেই তাকে চিনত গোটা আফগানিস্তান। তারই ছেলে আহমেদ মাসউদ। তালেবানবিরোধী আন্দোলনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন তিনি।
তালেবান মুখপাত্র সোহাইল শাহিন বলেছেন, তারা সবার সঙ্গে সুসম্পর্ক চান এবং দেশের সব নৃ-গোষ্ঠীর অংশগ্রহণে সরকার গঠন করবেন। কাতারের রাজধানী দোহার রাজনৈতিক কার্যালয় থেকে ইরানের প্রেস টিভিকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেছেন সোহাইল শাহিন। এদিকে সাবেক আফগান কর্মকর্তাদের উদ্ধৃত করে নিউইয়র্ক টাইমস বলেছে, পাঞ্জশির উপত্যকায় তালেবানবিরোধী ২০০০ থেকে ২৫০০ যোদ্ধা আছে এবং তাদের হাতে সাধারণ হালকা রাইফেল রয়েছে।
কাবুল থেকে পালিয়ে যাওয়া আফগান ভাইস প্রেসিডেন্ট আমরুল্লাহ সালেহ রয়েছেন মাসউদের সঙ্গে। আফগান বাহিনীর একটা অংশও যোগ দিয়েছে তাদের সঙ্গে। এই বাহিনীর সামনে পড়ে গত কয়েকদিনে বেশ কয়েকবার পিছু হটেছে তালেবান। সেই পাঞ্জশির দখলে এবার সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপাতে চাইছে তারা।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, যদি তালেবান পূর্ণ মাত্রায় আক্রমণ চালায়, মাসউদের যোদ্ধাদের সংগ্রাম করতে হবে। যদিও তালেবান সেখানে বাধার মুখে না পড়ে ক্ষমতার দখল নিতে পারবে না। যেমনটি দেশের অন্যান্য অংশে ঘটেছে; যদি তালেবান পুরোপুরি আক্রমণ চালায়, সেখানে জড়ো হওয়া তালেবান বিরোধীদেরও বেশ শক্তি ক্ষয় করতে হবে। এখন পর্যন্ত তালেবান পাঞ্জশিরে প্রবেশ করেনি, সে কারণে এখন পর্যন্ত যে প্রতিরোধ হয়েছে তা মৌখিকভাবে।
No comments
If you have any doubt, please let me know that with your valuable comments.