সুপার-ঘূর্ণিঝড়-আম্পান!

  • ব্রেকিং নিউস

    কারবালার ইতিহাসের প্রক্ষাপট


    হযরত আলী রাঃ এর খিলাফাত


    হযরত আলী রাঃ এর খিলাফাত গ্রহনের পর যখন সকলের বায়াত সুসম্পন্ন হয় তখন হযরত তালহা রাঃ, হযরত জুবায়ের রাঃ এবং বড় বড় আরো সাহাবী তার সাথে সাক্ষাত করে ‘হদ’ তথা শরীয়ত নির্ধারিত দণ্ডবিধি প্রতিষ্ঠা এবং হযরত ওসমান রাঃ এর খুনের বদলা নেবার দাবী জানান। 



    হযরত আলী রাঃ এই বলে তাদেরকে বোঝাতে চান যে সন্ত্রাসীদের সাঙ্গ-পাঙ্গ আছে এবং তাদের অনেক সাহায্যকারীও আছে। তাই এই মুহূর্তে এই কাজ বিপদজনক। ফলে এখন তা সম্ভব নয়। তিনি আরও বলেন, আমাকে তোমরা কিছুটা অবকাশ দাও। আমি বিষয়গুলা নিয়ে চিন্তা করি।

    হিজরি ৩৬ সালে আলী রাঃ তার খেলাফার শুরু করেন। এরপর তিনি বিভিন্ন শহরে গভর্নর নিয়োগ শুরু করেন। যার মধ্যে সিরিয়াও ছিল। সে সময় সিরিয়ার গভর্নর ছিলেন হযরত মুয়াবিয়া রাঃ। মুয়াবিয়া যেমন ছিলেন প্রজ্ঞাবান তেমনি ছিলেন রাজনৈতিক ক্ষুরধার সম্পন্ন ব্যক্তি। তিনি যেকোন সমস্যা আঁচ করতে পারলেই পূর্ব থেকেই তার সমাধানের পথ করে রাখতেন। মুয়াবিয়া রাঃ এর সাথে আলী রাঃ এর দ্বন্দের মূল কারণ ছিল, মুয়াবিয়া রাঃ এর অনুসৃত স্বেচ্ছাচারী রাজনীতি।


    মুসলমানদের বিজয় নিশান যখন উর্দ্ধোমুখি। একের পর এক বিজিত দেশগুলো যখন মুসলমানরা দখল করে নিচ্ছে আর সেই দেশগুলোর ধনসম্পদ আরবের কোষাগারে জমা হচ্ছে, তখন মুসমমানরা আরাম আয়েশ আর বিলাসী জীবনের প্রতি ঝুঁকতে থাকে। কিন্তু তাদের এই বিলাসিতার বড় বাধা ছিলেন হযরত আলী রাঃ। কারণ তিনি ছিলেন অত্যন্ত পরিশ্রমী ও নিষ্ঠাবান শাসক। বিলাসিতার সাথে তার কোন সম্পর্ক ছিল না। তার কঠোর নীতি শুধুমাত্র অন্যদের জন্য নয় বরং তার নিজের পরিবার পরিজন, বন্ধু বান্ধব ও সহযোগীদের জন্যও কার্যকর হত।


    যেমন একটি প্রসিদ্ধ ঘটনা হল, তার সহোদর ভাই আকীল যখন তার প্রাপ্য অংশের পর অতিরিক্ত কিছু অংশ বাইতুল মাল থেকে দেবার অনুরোধ করল তখন আলী রাঃ তা দিতে অস্বীকৃতি জানান। ফলে আকীল মুয়াবিয়া রাঃ কাছে গেলেন। মুয়াবিয়া তাকে তিন লক্ষ দিনার দিলেন। এর প্রতিক্রিয়ায় আকীল যে মন্তব্য করেন তাপ্রবাদের মত খ্যাতি লাভ করে। “আমার ভাই আমার আখেরাতের জন্য ভাল আর মুয়াবিয়া আমার দুনিয়ার জন্য ভাল।”


    এরকম সুবিধাভোগী হাজার হাজার লোক আলী রাঃ এর সঙ্গ ত্যাগ করে পরিতোষের আশায় মুয়াবিয়া রাঃ এর দলে ভিড়ে।


    কিশোর বয়সে ইসলাম গ্রহনের কারনে এবং রাসুল সাঃ এর একান্ত সান্নিধ্যে থাকার কারণে ইসলামের সকল হুকুম আহাকাম আলী রাঃ অস্থি মজ্জার মধ্যে মিশে গিয়েছিলো। সাদা সিধে জীবন যাপনই তার চরিত্রের ভূষণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। ইসলামের সর্বোচ্চ গুণাবলী সম্পন্ন হওয়া সত্ত্বেও বৈরি পরিবেশ পরিস্থিতির কারণে হযরত আলী রাঃ তার পুর্ববর্তী দুই খলিফা হযরত আবু বাকার রাঃ ও হযরত ওমর রাঃ এর মতো সফল হতে পারেননি। 




    অপরদিকে ইসলামের শেষ দিকে ইসলাম গ্রহনের কারণে মুয়াবিয়া বেশি সময় রাসুল সাঃ এর সহচার্জ পান নাই। ফলে দীর্ঘ সময় ইসলামের সুবার তিনি পাননি।

    মুয়াবিয়া রাঃ এর অনুসৃত স্বেচ্ছাচারী রাজনীতির কথা আলী রাঃ জানতেন এবং তিনি এও জানতেন যে মুয়াবিয়া সিরিয়াতে বেশ জনপ্রিয়। কিন্তু এই ধরনের স্বেচ্ছাচারিতা ইসলাম গ্রহণযোগ্য নয়। তাই তিনি অন্যান্য গভর্নরদের সাথে সাথে মুয়াবিয়া রাঃ কেও সিরিয়ার পদ থেকে অপসারণ করেন। তিনি সেখানে সহল ইবনে হুনাইফকে নতুন গভর্নর নিয়োগ করেন। সহল যখন সিরিয়ার পথে রওনা হন তখন পথিমধ্যে তাবুকে মুয়াবিয়ার ঘোড় সওয়ারের সঙ্গে তার দেখা হয়। সহল মুয়াবিয়াকে আমিরুল মুমীনিন হযরত আলী রাঃ এর বার্তা জানালে মুয়াবিয়া তা অস্বীকার করেন। ফলে সহল হযরত আলী রাঃ এর কাছে ফিরে আসেন এবং বিস্তারিত জানান। অপরদিকে মিশরবাসী তাদের নতুন গভর্নর কায়স ইবনে সাদ এর বায়াত গ্রহন করলেও কিছু কিছু লোক ওসমান রাঃ এর হত্যাকারীদের হত্যা না করা পর্যন্ত বায়াত করবেন না বলে জানায়। বসরাবাসীও এক কথা বলে। লে বিভিন্ন এলাকাতে ফিতনা ও অস্থিরতা বিস্তার লাভ করে এবং পরিস্থিতি অবনতি হতে থাকে। এহেন পরিস্থিতিতে আলী রাঃ সিরিয়ার সাথে লড়াই করতে সংকল্পবদ্ধ হন।


    অপরদিকে হযরত আয়শা রাঃ মক্কা থেকে হজ্জ পালন করে মদিনা ফিরার সময় পথিমধ্যে জানতে পারেন যে হযরত ওসমান রাঃ শহীদ হয়েছেন ফলে তিনি আবার মক্কাতে ফিরে আসেন এবং ওসমান রাঃ এর কিসাস এর জন্য জনমত গড়তে থাকেন। হযরত আলী রাঃ এর উপর চাপ প্রয়োগের জন্য তিনি বসরা অভিমুখেও যাত্রা করেন। কিন্তু সেখানে মুনাফিক আবদুল্লাহ বিন সাবার এজেন্ত হাকিম বিন জাবাল তার দল নিয়ে হযরত আয়শা রাঃ এর উপরে আক্রমন করে। বিভিন্ন ঘটনা প্রবাহে পরিস্থিতি জটিল আকার ধারন করে এবং যুদ্ধ ব্যপকহারে ছড়িয়ে পড়ে।


    এহেন পরিস্থিতিতে হযরত আলী রাঃ সিরিয়া অভিযান স্থগিত রেখে বসরা অভিমুখে রওনা হন। যখন আলী ও আয়শা রাঃ এর আলোচনা যখন একটি চূড়ান্ত রুপের দিকে যাচ্ছিল তখন ইসলামের শত্রু মুনাফিক আবদুল্লাহ বিন সাহার অনুসারীরা মরণ কামড় দেয়। রাতের অন্ধকারে ষড়যন্ত্রকারীদের চরম রক্তক্ষয়ী আক্রমনে উভয় পক্ষে ভুল বোঝবুঝির সৃষ্টি হয় এবং প্রচুর মুসলমান শহীদ হয়। যার মধ্যে হযরত আয়শা রাঃ এর পক্ষে ৯ হাজার এবং হযরত আলী রাঃ এর পক্ষে ১ হাজার জন শহীদ হন। মুনাফিকদের ষড়যন্ত্রে এই প্রথম এক মুসলমান ভাই এর হাতে অন্য মুসলমান ভাই এর রক্ত ঝরলো। ইতিহাসে এই যুদ্ধ জঙ্গে জামাল বা উটের যুদ্ধ নামে খ্যত।


    আমাদের আলোচনার বিষয় বস্তু এটি নয় বলে এই যুদ্ধের বিস্তারিত বর্ণনা এখানে করা হলোনা। শুধুমাত্র সার্বিক পরিস্থিতি অনুধাবনের জন্য আমরা প্রয়োজনীয় বিষয় সংক্ষেপে বর্ণনা করব।


    জঙ্গে জামালের পর হযরত আলী রাঃ এর সবচেয়ে বড় কাজ হয়ে দাড়ায় আমীর মুয়াবিয়াকে তার হাতে বায়াত গ্রহন করানো। এজন্য তিনি তার রাজধানী মদিনা থেকে কুফাতে স্থানান্তরিত করেন।



             
    কিন্তু মুনাফিক আব্দুলাহ বিন সাবার অনুসারীরা কখনই চাইতো না যে আলী ও মুয়াবিয়ার মধ্যে কোন সমঝোতা হোক। আর হযরত আলী রাঃ এর চারপাশে এইসব মুনাফিকরা এমনভাবে গেড়ে বসে ছিল যে তিনি সহজেই এদেরকে সরাতে পারছিলেন না। তিনি খুব ভালভাবেই উপলব্ধি করতে পারছিলেন যে মুসলিম উম্মার ঐক্য ছাড়া এহেন পরিস্থিতিতে ওসমান রাঃ এর কিসাস নেয়া সম্ভব না। তাই আমীর মুয়াবিয়ার বাইয়াত নেয়া জরুরী ছিল।




    হিজরি ৩৭ সনের ১লা সফর আমীর মুয়াবিয়ার সাথে আলী রাঃ এর যুদ্ধ হয়। যদিও এর মাঝে অনেক আলাপ আলোচনা ও সমঝোতার চেষ্টা হয়েছে। কিন্তু মুনাফিকদের কারণে তা সফল হইনি। ইতিহাসে এই যুদ্ধ সিফফিন এর যুদ্ধ বা জঙ্গে সিফফিন নামে পরিচিত। মুসলিম বিশ্বকে স্থায়ীভাবে বিভক্ত করার এক আত্মঘাতী ষড়যন্ত্র ছিল এই যুদ্ধ। মুনাফিকদের ষড়যন্ত্রে এই যুদ্ধে আলী ও মুয়াবিয়ার মধ্যে কোন প্রকার সমঝোতা সম্ভব হইনি। ফলে উভয় পক্ষই সমঝোতা ছাড়াই তাদের স্ব স্ব স্থানে ফিরে যায়।

    কুফায় রাজধানী স্থাপনের পরও তিনি কুফাবাসীদের পক্ষ থেকে কোন সহযোগিতা পাচ্ছিলেন না। এদিকে বিভিন্ন প্রদেশে হযরত ওসমান রাঃ কিসাস এর ব্যপারে দ্বিধা বিভক্ত জনগণ আলী রাঃ এর উপর অসন্তুষ্ট হতে লাগল। আর এই সুযোগকে যথাযথভাবে কাজে লাগান আমীর মুয়াবিয়া। শুধুমাত্র ইরাক ও ইরান ব্যতিত অন্যান্য সকল অঞ্চলে আমীর মুয়াবিয়া তার শাসন প্রতিষ্ঠা করেন। ইয়েমেন, হিজায, সিরিয়া, ফিলিস্থিন, মিশর প্রভৃতি অঞ্চলতখন তার অধীনে।



      
    এভাবে চার বর কেটে যায়। ৪০ হিজরির ১৭ই রমজান শুক্রবার খারিজীদের ষড়যন্ত্রে ফজরের নামাজের সময় হযরত আলী রাঃ শহীদ হন। 




    হযরত মুয়াবিয়া রাঃ এর শাসনকাল      




    রাসুল সাঃ ভবিষৎবাণী করেছিলেন যে, তার মৃত্যুর পর খেলাফতের শাসন চলবে ৩০ বছর। তারপর শুরু হবে রাজতন্ত্র। হযরত হাসান রাঃ এর খেলাফত শেষ হবার সাথে সাথে রাসুল সাঃ এর উল্লেখিত ৩০ বছরের খেলাফত সম্পন্ন হয়।

    আমীর মুয়াবিয়ার রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, দূরদর্শিতা ও যেকোন ঘটনা থেকে শিক্ষা গ্রহন তাকে সবসময়ই রাজনীতির ময়দানে এগিয়ে রাখত। তার এ যোগ্যতা সম্পর্কে তিনি ভালভাবেই অবগত ছিলেন। তিনি বলতেনঃ ৪টি কারণে আলী আমার কাছে পরাভূত হয়েছে।


    ১। আলী নিজের গোপন কথা কারো কাছ থেকে লুকাতে পারতেন না। কিন্তু আমি গোপন কথা কারো কাছে প্রকাশ করতাম না।




    ২। আলী অত্যান্ত ভাবলেশহীন ও নিশ্চিন্ত মানুষ ছিলেন। কোন বিপদে পুরোপুরি আক্রান্ত না হলে তিনি আত্মরক্ষার ব্যবস্থা গ্রহন করতেন না। আর আমি আগে থেকেই বিপদের মোকাবেলা করার জন্য প্রস্তুত থাকতাম।




    ৩। তার বাহিনী তার নির্দেশ মানত না। আর আমার বাহিনী আমার নির্দেশ অমান্যের সাহস পেতনা।

    ৪। তিনি ছিলেন কুরাইশ সমর্থন থেকে বঞ্ছিত আর আমি ছিলাম কুরাইশ সমর্থনপুষ্ট।





    স্বয়ং আলী রাঃ মুয়াবিয়ার সাফল্যের স্বীকৃতি দিতেন। তিনি বলতেন, ”মুয়াবিয়া জনগণকে নিজের দিকে আকৃষ্ট করার অসাধারন ক্ষমতা রাখে। কাজেই তার ব্যপারে সাবধান থেকো।”


    মুয়াবিয়া ছিলেন মুসলমানদের মধ্যে প্রথম রাজা বা বাদশা। তার মাধ্যমে রাজত্ব যুগের শুরু। কিন্তু তিনি ছিলেন রাজাদের মধ্যে উত্তম রাজা।


    হযরত আলী রাঃ মৃত্যুর পর ইমাম হাসান রাঃ ৬ মাসের মত খেলাফত পরিচালনা করেন কিন্তু তার অধিনে তখন পুরা মুসলিম বিশ্ব ছিল না। বেশির ভাগই ছিল আমীর মুয়াবিয়ার অধীনে।


    অনেকের মতে, হযরত আলী রাঃ এর খেলাফতকালে আমীর মুয়াবিয়া তার সিরিয়ার গভর্নর পদ নিরাপদ রাখার জন্যই হযরত ওসমান রাঃ এর কিসাসের দাবী করেছিলেন। তিনি ওসমান রাঃ এর রক্তাক্ত জামা ও তার স্ত্রী হযরত নায়েলার বিচ্ছিন্ন আঙ্গুলগুলো  ঝুলিয়ে রেখে সিরিয়াবাসীর মধ্যে প্রতিহিংসার আগুন জ্বালিয়ে ছিলেন। ফলে সিরিয়াতে তিনি ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠেন। এতে তিনি অন্যান্য অঞ্চল ও আরববাসীর সমর্থন খুব সহজে লাভ করেন। ফলে এই সকল রাজনৈতিক প্যাঁচে আলী রাঃ এর পক্ষে মুয়াবিয়াকে ক্ষমতাচ্যুত করা সম্ভব হয়নি।


    হযরত আলী রাঃ এর মৃত্যুর পরে ইমাম হাসান রাঃ খেলাফত গ্রহন করেন। কিন্তু পুরো পরিস্থিতি তার অনুকুলে ছিলনা। এহেন অবস্থায় আমীর মুয়াবিয়া এক বিশেষ রাজনৈতিক প্রজ্ঞার পরিচয় দেন। তিনি ইমাম হাসান রাঃ কে একটি চিঠি লেখেনঃ


    “খোদাভীতি ও নিষ্কলুষ নৈতিকতার দিক দিয়ে খেলাফতের জন্য আপনার চেয়ে যোগ্য ব্যক্তি আর কেউ নাই। আমি যদি নিশ্চিন্ত হতাম যে, দেশ শাসনের কাজটাও আপনি সুচারুরূপে করতে পারবেন, তবে আমিই সর্বপ্রথম আপনার হাতে বায়াত করতাম। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে আপনার পক্ষে খেলাফতের দাবী ত্যাগ করাটাই সমীচীন হবে। এর বিনিময়ে আপনি যা চাইবেন আমি তাই আপনার সামনে পেশ করব


    এই চিঠির সাথে আমীর মুয়াবিয়া তার নিজের সিলমোহর যুক্ত একটি সাদা কাগজ পাঠিয়ে জানালেন এই কাগজেইমাম হাসান যা লেখে দিবেন আমি তা মেনে নিব।


    আমীর মুয়াবিয়ার চিঠি ও তার উপস্থাপনা ইমাম হাসানকে মুগ্ধ করে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় তিনি মুয়াবিয়ার প্রস্তাব গ্রহণ করাই শ্রেয় মনে করেন। তিনি আমীর মুয়াবিয়াকে চারটি শর্ত দেন। যা মুয়াবিয়া বিনা বাক্যে মেনে নেন।


    হিজরি ৪১ সালে আমীর মুয়াবিয়া হাজার হাজার মুসলমানের উপস্থিতিতে সর্বসম্মত খলিফা নির্বাচিত হন। তার হাতে সর্বপ্রথম বায়াত নেন ইমাম হাসান রাঃ। ইতিহাসে এই সালকে বলা হয় ‘আমুল-জামাআহ’ বা ঐক্যের বছর



      
    কিন্তু ইমাম হোসাইন রাঃ মুয়াবিয়ার হাতে বায়াত অস্বীকার করেন। এ ব্যপারে মুয়াবিয়ার পক্ষ থেকে চাপ সৃষ্টি করা হলে হাসান রাঃ বলেন, আপনি ওর উপর চাপ দিবেন না। কেননা আপনার হাতে বায়াত এর চেয়ে তার কাছে তার আত্মমর্যাদা অধিক প্রিয়। একথা শুনে মুয়াবিয়া নীরব হয়ে যান এবং  ব্যপারে র কিছু বলেননিপরবর্তীতে ইমাম হোসাইন রাঃ মুয়াবিয়ার কাছে বায়াত নেন বলে জানা যায়।


    আমীর মুয়াবিয়া ২০ বছরব্যাপী তার শাসনকাল পরিচালনা করেন। এ সময় তিনি ইসলামী রাষ্ট্রের আয়তন বৃদ্ধি করেন। তিনি নৌ-বাহিনী প্রতিষ্ঠা করেন এবং রোমান খ্রিস্টানদেরকে পরাজিত করেন। মুসলমানদের মধ্যে তিনিই প্রথম ডাক প্রথার প্রচলন করেন। এক কথায় বলা যা, মুয়াবিয়ার শাসন আমল ইসলামের অন্যতম স্বর্ণযুগ ছিল।


    হিজরি ৫০ সনের একটি ঘটনা। মুগীরা ইবনে শুবা তখন কুফার গভর্নর। মুয়াবিয়া মুগীরাকে বরখাস্ত করার চিন্তা করছেন। বিষয়টা মুগীরা আঁচ করতে পারে। তিনি কুফা থেকে দামেস্কে চলে আসেন এসে মুয়াবিয়াকে বলেন, আমি মদিনাতে হযরত ওসমান রাঃ এর শাহাদাতের ঘটনা দেখেছি। খিলাফতকে কেন্দ্র করে মুসলমানদের মধ্যে যে দাঙ্গা হাঙ্গামা শুরু হয়েছিল তা আমি এখনও ভুলতে পারি নাই। আমার মতে, আপনি আপনার পুত্র ইয়াযিদকে পরবর্তী খলীফা মননয়ন করেন। এর মধ্যে মুসলিম উম্মার কল্যাণ নিহিত রয়েছে। মুগীরার কথাটি মুয়াবিয়ার পছন্দ হল। তিনি মুগীরাকে স্বস্থানে বহাল রাখলেন।




    ইয়াযিদকে খলীফা করার বিষয়টি মুয়াবিয়া আগে কখনও চিন্তা করেননি। মুগীরার কথা শুনার পর প্রথমবার তিনি বিষয়টা নিয়ে চিন্তা করলেন। যদিও প্রথমে তিনি বিষয়টা নিয়ে দ্বিধান্বিত ছিলেন কিন্তু মুগীরা তাকে এ বিষয়ে উৎসাহিত করলো এবং আশ্বস্ত করতে লাগলো যে সকলেই ইয়াযিদের নিকট বায়াত গ্রহণ করবে। এই কু-পরামর্শের মাধ্যমে মুগীরা আসলে তার কুফার গভর্নর পদ রক্ষা করেন। এরপর মুগীরা দামেস্ক থেকে কুফাতে এসে ইয়াযিদের ব্যাপারে জনমত সৃষ্টি করতে থাকেন।

    ইয়াযিদকে খলীফা করার ব্যপারে মুয়াবিয়া তড়িঘড়ি সিদ্ধান্ত নেয়া ঠিক মনে করেননি। তাই তিনি বিভিন্ন অঞ্চলের নেতৃস্থানীয়দের সাথে এ ব্যপারে আলাপ আলোচনা করেন। সকলেই এ ব্যপারে তাকে সমর্থন দেয়। শুধু বাকি থাকে মক্কা মদিনার নেতৃবৃন্দ।




    কিন্তু মক্কা মদিনার নেতৃবৃন্দ এ ব্যপারে আপত্তি তোলেন। তাদের বক্তব্য ছিল আবদুল্লাহ ইবনে ওমর, আবদুল্লাহ ইবনে জুবায়ের, আব্দুর রাহমান ইবনে আবু বাকার, ইমাম হোসাইন রাঃ এর মত সাহাবিরা তখনও জীবিত। ধার্মিকতা ও প্রসাসনিক দক্ষতার দিক থেকে তারা ইয়াযিদের থেকে অনেক বেশি যোগ্য। তাছাড়া পিতা কতৃকপুত্রের মনোনয়ন নিঃসন্দেহে ইসলামী আদর্শ বিরোধী।

    এখানে উল্লেখ্য যে, সে সময় সকলেই জানত যে ইমাম হাসান ও মুয়াবিয়ার মধ্যে সন্ধির আর একটি শর্ত ছিল, মুয়াবিয়ার পর ইমাম হাসান মুসলিম উম্মার পরবর্তী খলীফা হবেন। কিন্তু এই শর্তটি ইমাম হাসান লিখিত চুক্তির মধ্যে লিপিবদ্ধ করাননি।


    ইমাম হাসানের মৃত্যুর পর যখন মুয়াবিয়া ইয়াযিদকে পরবর্তী খলীফা করার ব্যপারে জনমত তৈরির চেষ্টা করছিলেন তখন মদিনাবাসীর অনেকেই তা গ্রহণ করতে পারছিলেন না কিন্ত তীক্ষ্ণ বুদ্ধি সম্পন্ন মুয়াবিয়া বিষয়টি আঁচ করতে পেরে তাদেরকে আয়ত্তে আনার জন্য বিভিন্ন উপঢৌকন ও ঋণ বিতরন শুরু করেন। কিন্তু আবদুল্লাহ ইবনে জুবায়ের ও হোসাইন ইবনে আলী রাঃ এই ধরনের আচরণ মেনে নিতে পারেননি।



    সেই বছরই আমীর মুয়াবিয়া হজ্জ সম্পন্ন করেন এবং ইয়াযিদের ব্যপারে সংখ্যাগরিষ্ঠদের বায়াত গ্রহণ করেন। শুধু তিন চারজন ব্যক্তি অর্থাৎ আবদুল্লাহ ইবনে জুবায়ের, হোসাইন ইনবে আলী ও প্রমুখ ব্যতিত বাকি সকলেই বায়াত সম্পন্ন করেন। মুয়াবিয়া তাদেরকে তাদের অবস্থার উপর ছেড়ে দেন এবং বায়াতের ব্যপারে তাদের উপর চাপ প্রয়োগ করেননি। এরপর তিনি দামেস্কে ফিরে আসেন।




    হিজরি ৬০ সনের রজব (৬৮০ খ্রীঃ এর এপ্রিল) মাসের প্রথমদিকে মুয়াবিয়া অসুস্থ হয়ে পরেন। তিনি ইয়াযিদকে অসিওত করে বলেনঃ আমার মৃত্যু ঘনিয়ে এসেছে। আমাকে বল, তুমি আমার পরে মুসলমানদের সাথে কিরুপ আচরণ করবে? ইয়াযিদ উত্তর দেয়ঃ আমি আল্লাহর কিতাব ও রাসুলের সুন্নত অনুসরন করব।




    মুয়াবিয়াঃ সুন্নতে সিদ্দিকীর উপর আমল করা উচিত। কেননা হযরত আবু বাকার রাঃ মুরতাদদের সাথে লড়েছেন এবং এমন অবস্থায় ইন্তেকাল করেছেন যে সমস্ত উম্মত তার উপর সন্তুষ্ট ছিল।

    ইয়াযিদঃ না, শুধু আল্লাহর কিতাব ও রাসুলের সুন্নতই যথেষ্ট


    মুয়াবিয়াঃ বৎস! সিরাতে ওমরের অনুসরন কর। কেননা তিনি শহরগুলো আবাদ করেছেন। সেনাবাহিনী শক্তিশালী করেছেন এবং তাদের মধ্যে গনিমতের মাল বিতরন করেছেন।


    ইয়াযিদঃ না, শুধু আল্লাহর কিতাব ও রাসুলের সুন্নতই যথেষ্ট।


    মুয়াবিয়াঃ বৎস! সিরাতে ওসমানকে অনুসরণ করবে। কেননা তিনি তার জীবনে মানুষের অভূতপূর্ব কল্যাণ সাধন করেছেন এবং আল্লাহর পথে অকাতরে ধন সম্পদ বিলিয়েছেন।


    ইয়াযিদঃ না, শুধু আল্লাহর কিতাব ও রাসুলের সুন্নতই যথেষ্ট।




    মুয়াবিয়া এই সকল কথা শুনে বলেনঃ তোমার এই সমস্ত কথাই আমার এ বিশ্বাস জন্মেছে যে, তুমি আমার উপদেশ অনুযায়ি কাজ করবে না। হে ইয়াযিদ! তুমি ধম্ভ করোনা। আমি তোমাকে আমার আনুগত্যের অঙ্গীকার করছি এবং সকল লোক তোমার আনুগত্যের অঙ্গীকার করেছে।  


    এইবার একটা জরুরী কথা শোন। আবদুল্লাহ ইবন ওমরের পক্ষ থেকে তোমার ভয়ের কোন কারণ নেই। কারণ সে দুনিয়া বিমুখ। হোসাইন ইবনে আলীকে কুফাবাসীরা অবশ্যই তোমার বিপক্ষে দাড় করাবে। যদি তুমি তার উপর জয়ী হও তাহলে তাকে হত্যা করো না বরং তার সাথে আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রেখ। আবদুল্লাহ ইবন জুবায়ের হচ্ছে ফেরেকবাজ। কাবুতে পেলে তাকে হত্যা করবে। সব সময় মক্কা ও মদিনাবাসীর সাথে সৌজন্যমূলক ব্যবহার করবে। কুফাবাসী যদি প্রতিদিন তাদের কর্মকর্তা পরিবর্তন করতে বলে তাহলে তাই করবে। সিরিয়াবাসীকে সবসময় সাহায্যকারী মনে করবে এবং তাদের বন্ধুত্বের উপর ভরসা রাখবে।

    এরপর মুয়াবিয়ার অবস্থার দ্রুত অবনতি হতে থাকে। হিজরি ৬০ সনের ২২ রজব তিনি ইন্তেকাল করেন।




    ইয়াযিদ ইবনে মুয়াবিয়ার সিংহাসন গ্রহণ


    মুয়াবিয়ার মৃত্যুর পর ইয়াযিদ সিংহাসনে আহরণ করেন। যেহেতু তার বাবা পূর্ব থেকেই সকল বিষয় তার জন্য নির্ধারণ করে রেখেছিলেন তাই সিংহাসন আহরণে তাকে বেগ পেতে হইনি।


    ইয়াযিদ ছিল সাহিত্যপ্রেমী ও শিকারী। রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার খুব কাছে ছিল বলে তার রাজনীতি সম্পর্কে কিছু ধারণা ছিল। কিন্তু তার বাবার মত তীক্ষ্ণবুদ্ধি ও দূরদৃষ্টি তার ছিলনা। 


    ইসলামী খেলাফতে দ্বীনদার ও যোগ্যতাই যেখানে খলীফা হবার মাপকাঠি সেখানে ইয়াযিদের মত কম যোগ্যতাসম্পন্নকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় মেনে নেয়া ছিল খুবই দুরুহ। কিন্তু আমীর মুয়াবিয়া এমনভাবে তার ছেলের সিংহাসন আহরণের ব্যবস্থা করেছিলেন যে অনেকের মনে ক্ষোভ থাকলেও প্রকাশ্যে কেও তার বিরোধিতা করেনি।


    খেলাফতের যোগ্যতা যে ইয়াযিদের ছিলনা তা তার পরবর্তী শাসন আমলের মধ্যেই প্রমানিত হয়েছে। বিদ্রোহ দমনের নামে যত্রতত্র আক্রমন, গনহত্যা, তার কর্মচারী কর্মকর্তাদের সদাচারের পরিবর্তে স্বেচ্ছাচারিতার অবাধ অনুমতি, ইমাম হোসাইন রাঃ কে হত্যা ও মক্কা মদিনাতে আক্রমন; এই সব নিয়েই ইয়াযিদের তিন বছরের শাসন আমল কেটে যায়।


    ক্ষমতা গ্রহনের পর ইয়াযিদ মদিনার গভর্নর ওলীদ ইবনে উকবাকে আমীর মুয়াবিয়ার ইন্তেকালের খবর জানিয়া চিঠি লিখেন আর নির্দেশনা দেন হযরত হোসাইন ইবনে আলী, আবদুল্লাহ ইবনে ওমর ও আবদুল্লাহ ইবনে জুবায়েরের কাছ থেকে অবিলম্বে বায়াত আদায় কর তারা বায়াত না করা পর্যন্ত তাদেরকে যেতে দিও না।    


    ইয়াযিদের চিঠি পাওয়া মাত্রই ওলীদ মদিনার পূর্বতন শাসক মারওয়ান ইবনে হাকামকে ডেকে চিঠি দেখান ও পরামর্শ চান। মারওয়ান বলেন, এই সাহাবিত্রয়দেরকে ডেকে বায়াতে বাধ্য করা উচিত। আবদুল্লাহ ইবনে ওমার ক্ষমতার দাবিদার নয়। তো উনি যদি বায়াত নাও নেন তাতে ক্ষতি নাই। ক্ষতির আশংকা আছে ইমাম হোসাইন ও আবদুল্লাহ ইবনে জুবায়ের এর পক্ষ থেকে। কাজেই তাদেরকে এক্ষুণি ডাকুন এবং বায়াত নিতে বাধ্য করুন। যদি রাজি হয় ভাল নতুবা তাদেরকে জীবিত বাইরে যেতে দিবেন না। 


    ওলীদ একজন বালককে দিয়ে ইমাম হোসাইন ও আবদুল্লাহ ইবনে জুবায়েরকে ডেকে পাঠালেন। অসময়ে ডাক পেয়ে দুইজনেই অনুমান করলেন যে মনে হয় আমীর মুয়াবিয়া মারা গেছেন এবং তাদেরকে বায়াতের জন্য ডাকা হচ্ছে। 


    ইমাম হোসাইন কয়েকজন লোক সাথে নিয়ে ওলীদের কাছে গেলেন। লোকদেরকে বললেন, ”তোমরা দরজার উপর বসে থাকবে। যদি আমি তোমাদেরকে ডাকি অথবা আমি উচ্চ কণ্ঠে কথা বলি তাহলে ভিতরে চলে আসবে। আর এধরনের কিছু না হলে দরজা থেকে সরবে না যতক্ষণ আমি বাইরে না আসি।”


    নিজের অনুগতদেরকে পাহারাতে রেখে ইমাম হোসাইন রাঃ ভিতরে অবস্থানরত ওলীদ ও মারওয়ানের কাছে গেলেন। ওলীদ তাকে মুয়াবিয়া রাঃ এর ইন্তেকালের খবর জানালেন এবং ইয়াযিদের চিঠি পড়ে শুনালেন। ইমাম হোসাইন রাঃ ইন্নালিল্লাহ পড়লেন এবং মুয়াবিয়ার জন্য দোয়া করলেন এরপর বললেন আমার মত ব্যক্তি গোপনে বায়াত করতে পারেনা। আপনি এই উদ্দেশ্যে সাধারন মানুষের সমাবেশ আহবান করুন। আমিও তাদের সাথে আসব। সকলে যা সমীচীন মনে করবে সেটাই হবে।


    ইমাম হোসাইনের এহেন উত্তরে ওলীদ ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেল এবং তাকে যাবার অনুমতি দিল। ইমাম হোসাইন চলে যাবার পর মারওয়ান ওলীদকে বললঃ তুমি হোসাইনকে চলে যাবার অনুমতি দিয়ে ভুল করলে। বিনা সংঘাতে তুমি আর হোসাইনকে বাগে আনতে পারবে না। ওলীদ বললঃ তুমি বল কি? তুমি কি সত্যি চাও আমি হোসাইনকে হত্যা করি? আল্লাহর কসম, কেয়ামতের দিন যাকে হোসাইনের খুনি হিসাবে আসামী করা হবে তার আর নিস্তার থাকবে না।


    এদিকে আবদুল্লাহ ইবনে জুবায়ের ওলীদের কাছ থেকে একদিনের সময় চাইলেন এবং রাতের মধ্যেই মদিনা ত্যাগ করে মক্কার উদ্দ্যেশে রওনা হলেন। ওলীদ তার খোজে কয়েকজন লোক পাঠালো কিন্তু তারা তাকে খুজে পেলনা। পরদিন রাতে ইমাম হোসাইনও তার পরিবার নিয়ে মক্কার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন। এর কিছুদিন পর আবদুল্লাহ ইবনে ওমর ও আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাসও মক্কায় চলে আসেন।


    এদিকে ইয়াযিদ হারিস ইবনে হুরকে মক্কার শাসনকর্তা নিয়োগ করেন। ইতোমধ্যে আবদুল্লাহ ইবনে সাফওয়ান ইবনে উমাইয়া; যিনি ছিলেন মক্কার গন্যমান্য ব্যক্তিদের অন্যতম। তিনি আবদুল্লাহ ইবনে জুবায়ের এর হাতে বায়াত নেন। এরপর মক্কার গন্যমান্য ও অভিজাত প্রায় দুই হাজার ব্যক্তিও আবদুল্লাহ ইবনে জুবায়েরের হাতে বায়াত নেন। আবদুল্লাহ ইবনে জুবায়ের হারিসকে বন্দী করে মক্কার শাসনভার নিজের হাতে তুলে নেন। ইমাম হোসাইন রাঃ মক্কাতে অবস্থান করলেও তিনি ও তার পরিবার আবদুল্লাহ ইবনে জুবায়েরের কাছে বায়াত নেননি। আবদুল্লাহ ইবনে জুবায়েরও তাদেরকে বায়াত নিতে বলেননি।


    আবদুল্লাহ ইবনে জুবায়ের এর সাথে ইমাম হোসাইন এর প্রায়ই দেখা হত এবং তারা বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনাও করতেন। অবস্থা এমন মনে হতো, যেন ইবনে জুবায়ের জনগণের কাছ থেকে প্রকৃত অর্থে খিলাফতের বায়াত গ্রহণ করেননি বরং তার বায়াতের উদ্দেশ্য ছিল ইয়াযিদের খিলাফতের স্বীকৃতি না দেয়া।


    এদিকে ইবনে জুবায়ের ও ইমাম হোসাইন এর মক্কায় গমনের ঘটনা ওলীদ ইয়াযিদকে অবগত করেন। ইয়াযিদ সঙ্গে সঙ্গে ওলীদ ইবনে উতবাকে পদচ্যুত করে তার স্থানে আমর ইবনে আসকে মদিনার গভর্নর নিয়োগ করেন। অপরদিকে ইয়াযিদ মক্কায় হারিসের অবস্থা অবগত হয়ে আমর ইবনে আসকে অবিলম্বে মক্কায় গিয়ে আবদুল্লাহ ইবনে জুবায়েরকে গ্রেফতারের নির্দেশ দেন। আমর ইবনে আস এক বিশাল বাহিনী মদিনাতে প্রেরণ করেন। কিন্তু সেই যুদ্ধে আবদুল্লাহ ইবনে জুবায়ের জয়ী হন এবং মদিনা থেকে আগত সেনাবাহিনীর সেনাপতিকে বন্দী করেন।

    No comments

    If you have any doubt, please let me know that with your valuable comments.

    পৃষ্ঠা

    সর্বশেষ খবর

    COVID-19 থেকে বাঁচার উপায় !