সুপার-ঘূর্ণিঝড়-আম্পান!

  • ব্রেকিং নিউস

    শিক্ষা সে তো অাজ এক কঠিন বাস্তবতা!

    Image result for শিশু শিক্ষা

    "প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তিনি ৩য় শ্রেণী পর্যন্ত পরীক্ষা তুলে দিবেন। এটা ভালো, কিন্তু তিনি করলে, মানে এই শিক্ষাব্যবস্থার মধ্যে করলে, তা নিশ্চিতভাবে আরো খারাপ ফল বয়ে আনবে। কেন? তবে একটু পেছনে গিয়ে পড়ে আসতে হবে:

    ১. আশির দশকে মাধ্যমিক স্তরে হাতেকলমে বিজ্ঞান শেখানোর উপযোগী করে বই বানাতে বিশাল প্রকল্প করা হলো। ফল হলো এক দশকের মধ্যেই বিজ্ঞানের শিক্ষার্থী অর্ধেক হয়ে গেল।


    ২. নব্বই দশকে এমসিকিউ-এর সুবিধার কথা বলে এসএসসিতে এটা চালু করা হলো। ফল হলো পাশের হার ৩৫% থেকে এক ধাক্কায় ৭০% ছাড়িয়ে গেল। ছেলের সাথে বাবাও এসএসসি পাশ করতে লাগলো।

    ৩. নারীর কর্মসংস্থানের কথা বলে প্রাথমিক স্তরে অধিকাংশ নারী শিক্ষক নিয়োগ করা হলো। ফল হলো নিয়োগ-যোগ্যতা শিথিল করে টাকার বিনিময়ে অযোগ্য এসএসসি পাশ করা নারীদের শিক্ষক করে প্রাথমিক শিক্ষা ধ্বংস করা।

    ৪. সকল শিশুর প্রাথমিক শিক্ষা অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক করা হলো। ফল হলো সরকারী স্কুল না বাড়িয়ে কিণ্ডারগার্টেন, এনজিও-স্কুল, মাদ্রাসা ছড়িয়ে ছয়লাব করা, শিক্ষায় বৈষম্য বাড়িয়ে তোলা।

    ৫. নারী শিক্ষার হার বাড়াতে মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষাবৃত্তি দেওয়া হলো। ফল হলো ম্যনেজিং কমিটি ও শিক্ষকদের অসততার সুযোগ সৃষ্টি এবং টাকার লোভে সব মেয়ে পাশ করিয়ে দেওয়া।

    ৬. বৃত্তির টাকা না বাড়িয়ে বৃত্তিপ্রাপ্তির সংখ্যা ব্যাপকভাবে বাড়ানো হলো। ফল হলো বৃত্তিপ্রাপ্তির তাৎপর্যহীনতা আর বৃত্তি পেয়েও নামী স্কুলগুলোতে শিক্ষার্থীদের বেতন-ফি দিতে হওয়া।

    ৭. সকল শিশুকে প্রাথমিক শিক্ষায় শিক্ষিত করার কথা বলা হলো। ফল হলো প্রশ্ন ফাঁস করিয়ে, উত্তর বলে দিয়ে, না লিখলেও নাম্বার দিয়ে শত ভাগ পাশ করিয়ে দেওয়া।

    ৮. নম্বরভিত্তিক মূল্যায়নের সীমাবদ্ধতার কথা বলে জিপিএ-ভিত্তিক মূল্যায়ন ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হলো। ফল হলো লক্ষ লক্ষ জিপিএ ফাইভ দিয়ে দেওয়া।

    ৯. বছরে ৩টি সাময়িক পরীক্ষার পরিবর্তে চাপ কমাতে ২টি পরীক্ষার নির্দেশ দেওয়া হলো। ফল হলো পরীক্ষার ফি থেকে আয় কমা ঠেকাতে অধিকাংশ স্কুলে ক্লাস-পরীক্ষার নামে সাময়িক পরীক্ষার মতো করে আরো ৪-৫টা পরীক্ষা নিয়ে ফি তোলা।

    ১০. নির্দেশ হলো নোট-গাইড থাকবে না, সহায়ক বই থাকতে পারে। ফল হলো সব নোট-গাইড সহায়ক বই হয়ে গেল। তার উপরে এনসিটিবি-র অনুমোদন লেগে গেল।

    ১১. মুখস্তবিদ্যার কুপ্রভাব, ব্লুমের তত্ত্ব ইত্যাদি বহু কিছু বলে কাঠামোবদ্ধ বা সৃজনশীল মূল্যায়ন পদ্ধতি চালু করা হলো। ফল হলো আগে শিক্ষার্থীরা নোট-গাইড ব্যবহার করতো, এখন শিক্ষকেরাও ওগুলো ছাড়া চলতে পারে না।

    ১২. চারুকারু, কেরিয়ার, শারীরিক শিক্ষা, কৃষি, গার্হস্থ্য ইত্যাদি ভালো ভালো কথা বলে মাধ্যমিক স্তরে একবারে ১৪টি বই করা হলো। ফল হলো অঙ্ক, বিজ্ঞান ও ভাষার মতো বিষয়গুলোতে শিক্ষার্থীরা আরো দুর্বল হতে লাগলো।

    ১৩. এখন প্রাথমিক স্তরে তৃতীয় শ্রেণী পর্যন্ত কোনো পরীক্ষা হবে না, মূল্যায়ন হবে। ফল হবে আরো অনেক প্রকল্প, অনেক উপকরণ, অনেক নয়ছয় প্রশিক্ষণ, যার থেকে শিক্ষকেরা আরো কিছুই বুঝবে না, অভিভাবকেরা আরো ফ্যালফ্যাল করে তাকাবে, আগে পরীক্ষায় পাশ করার জন্য শিক্ষক-অভিভাবক-শিক্ষার্থীরা যেটুকু ভাবতো তার কিছুই ভাবতে হবে না। স্কুলগুলো ফোরে গিয়ে একবারে পরীক্ষার সকল বিভীষীকা হাজির করিয়ে শিক্ষার্থীদের উপর লাল ঘোড়া দাবড়িয়ে দেবে।

    আমি বুঝলাম কেমনে? নগ্ন মানুষের উলঙ্গ করে দেখার কিছু থাকে না। এই রাষ্ট্রের নগ্নতা গবেষণা করে খোঁজার কিছু নেই। একে আবৃত করার কথা ভাবুন।"

    লেখকঃ- ইঞ্জিঃ মারুফ অাহমেদ 

    ফেসবুক থেকে সংগৃহিত)

    No comments

    If you have any doubt, please let me know that with your valuable comments.

    পৃষ্ঠা

    সর্বশেষ খবর

    COVID-19 থেকে বাঁচার উপায় !