অস্ত্র ফেলে ক্রিকেটের ব্যাট-বল হাতে তালেবান যোদ্ধারা
যোদ্ধাদেরও বিনোদনের খোরাক জোগায় ক্রিকেট। আফগানিস্তানের দিকে তাকালে তা স্পষ্ট হয়ে ওঠে। যুদ্ধ মৌসুমের প্রাক্কালে অস্ত্র (একে-৪৭) ফেলে ক্রিকেট খেলায় মেতে ওঠেন তালেবান যোদ্ধারা। ব্যাট-বলই একমাত্র বিনোদনের উৎস তাদের।
প্রতি যুদ্ধ মৌসুম শুরু হওয়ার আগে ক্রিকেট ম্যাচের আয়োজন করেন আফগান যোদ্ধারা। সেসব ম্যাচে মাঠে দর্শক হিসেবে উপস্থিত থাকেন তাদেরই নিয়ন্ত্রিত গ্রামগুলোর অধিবাসী। এ সময়ে সব বিভেদ ভুলে ক্রিকেটীয় কারিকুরি দেখাতে মহাব্যস্ত থাকেন তারা। যতটা পারেন এ থেকে আনন্দ লুফে নেন।
নানগড়হারের তালেবান কমান্ডার মোল্লা বদরুদ্দিন জানিয়েছেন, গেল শীতকালে ক্রিকেট টুর্নামেন্ট আয়োজন করেন যোদ্ধারা। তাতে প্রচুর দর্শক সমাগম হয়। শুধু তাই নয়, রশিদ-নবীরা আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেললে দল বেঁধে রেডিওতে ধারাভাষ্য শোনেন তারা বলেও জানান তিনি।
ক্রিকেট খেলার প্রতি ভীষণ আবেগ রয়েছে তালেবান যোদ্ধাদের উল্লেখ করে মোল্লা বদরুদ্দিন বলেন, আমি ক্রিকেট ভালোবাসি। আফগানিস্তান জাতীয় ক্রিকেট দল অন্য দলের বিপক্ষে খেললে আমরা রেডিও শুনি। দারুণ আগ্রহ ও পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে ধারাভাষ্য শুনি। সোশ্যাল মিডিয়ায় স্কোর চেক করি। আমরা ফেসবুক ফলো করি। লাইভ আপডেট খেয়াল রাখি।
যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তানে ক্রিকেটের অনুপ্রবেশ ঘটে ১৯ শতকের শেষ ভাগে। '৯০-এর দশকে সেখানে খেলাটির প্রচলন ঘটান পাকিস্তানের ক্রিকেটপ্রেমী শরণার্থীরা। পরে দেশটিতে ফুটবল ও ক্রিকেট খেলা নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন তালেবানরা।
তারা বিশ্বাস করতেন, এসব খেলা মানুষকে নামাজ থেকে দূরে রাখে। তবে ভেতরে ভেতরে দেশটিতে ক্রিকেট বিপ্লব ঘটে যায়। পরে খেলাটিকে স্বীকৃতি দেন স্বাধীনতাকামী যোদ্ধারা। এখন সন্ত্রাসকবলিত দেশটিতে ব্যাট-বলের খেলা ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এরই মধ্যে রশিদ খান, মোহাম্মদ নবী, মুজিব-উর-রহমান, মোহাম্মদ শাহজাদের মতো বিশ্ব মাতানো ক্রিকেটার উপহার দিয়েছেন আফগানরা। ফুটবলও সমান জনপ্রিয় সেখানে।
No comments
If you have any doubt, please let me know that with your valuable comments.