সুপার-ঘূর্ণিঝড়-আম্পান!

  • ব্রেকিং নিউস

    অতিবৃষ্টিতে মাথায় হাত শরীয়তপুরের আলু চাষিদের!

    শরীয়তপুরে আলুক্ষেতে পানি জমে পচন

    অতিবৃষ্টিতে শরীয়তপুরে আলুক্ষেতে পানি জমে পচন ধরার কারণে কৃষকরা আলু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। পানির দরে আলু বিক্রি করতে হচ্ছে। এতে লাখ লাখ টাকার ক্ষতির মুখে পড়েছে আলু চাষিরা।কৃষকদের অভিযোগ, সমস্যা সমাধানে কৃষি বিভাগ কোনো পরামর্শই দিচ্ছে না।শরীয়তপুর সদর উপজেলার চর সোনামুখী এলাকার কৃষক এনামূল হক, রহিমা বেগম ও কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে শরীয়তপুর জেলার সদর উপজেলার রুদ্রকর ইউনিয়নের পশ্চিম সোনামুখী, চর লক্ষ্মীনারায়ণ, পূর্বসোনামুখী, রুদ্রকর, জাজিরা উপজেলার সেনেরচর মুলনা নড়িয়া উপজেলার চরআত্রা, নোয়াপাড়া, ভেদরগঞ্জ উপজেলার শিবসেন, কাচিকাটা, ডামুড্যা উপজেলার দশমন তারা, চর হানিফের বিল, আনন্দ বাজার, চরমালগাঁও, ভাদরী কান্দি, সাতিয়ানি ও গোসাইরহাট উপজেলার নাগের পাড়া উপজেলায় ১ হাজার ৬৪৫ হেক্টর জমিতে আলু চাষ করা হয়েছে।

    আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আলুর বাম্পার ফলন হয়েছিল। আলু চাষে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৪৭ হাজার ৭০৫ মে. টন। হঠাৎ করে ৪-৫ দিন পূর্বে একটানা বৃষ্টির কারণে আলুক্ষেতে পানি জমে যায়। পানি কাদা থাকায় আলু ঘরে তুলতে পারছে না কৃষক। কাদা ও ভিজে মাটিতে আলুতে পচন ধরেছে।সরেজমিন দেখা গেছে, শতকরা ৭৫ ভাগ আলুতেই পচন ধরেছে। জমি থেকে যে আলু তোলা হয়েছে তাতেও পচন ধরেছে। হাটবাজার ভিজে আলু বিক্রি হচ্ছে না। তাই কৃষকরা আলু জমি থেকে তুলে খামার দিয়ে রেখেছে। পাইকাররা আলু কিনছে না। বিপাকে পড়েছেন শরীয়তপুরের আলু চাষিরা।তাদের দাবি, ঋণ করে আলু চাষ করেছে তারা। এবার আলুর বাম্পার ফলন হলেও বর্তমানে আলু বিক্রি করা সম্ভব হচ্ছে না। আলুর দাম কমে গেছে। বৃষ্টির আগে প্রতি মণ আলু ৪০০ টাকা দরে বিক্রি হতো। এখন ১৫০ থেকে ২০০ শত টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর এতে আলু বিক্রি করা হলে কৃষকের চাষাবাদের খরচই মিটবে না। কৃষকরা ঋণ পরিশোধ করতে পারবে না।শরীয়তপুরের প্রায় ৫ হাজার কৃষক লোকসানে পড়েছে। এ নিয়ে কৃষকের মধ্যে হতাশা ও দুশ্চিন্তা বিরাজ করছে।অনেক কৃষক অভিযোগ করে বলছেন, আলু চাষ করে এত বড় লোকসানে পড়ার পরেও কৃষি বিভাগ থেকে আমাদের কোনো সাহায্য সহায়তা করেনি।

    এ ব্যাপারে ডামুড্যা উপজেলার সিতলকাঠি এলাকার আলু চাষি নুরুল হক মাদবর বলেন, আমি সাড়ে তিন একর জমিতে আলু চাষ করেছিলাম। আলুর বাম্পার ফলন হয়েছিল। হঠাৎ করে অসময়ে বৃষ্টি হওয়ার কারণে আমরা আলু ঘরে তুলতে পারিনি। ক্ষেতে পানি জমে আলুতে পচন ধরেছে। আমাদের এত বড় দুর্যোগে কৃষি বিভাগ থেকে কোনো খোঁজখবর বা পরামর্শ দেয়নি। আলু চাষ করে বিরাট লোকসানে আছি।দশমন তারা এলাকার আলু চাষি আ. রাজ্জাক বলেন, আড়াই বিঘা আলু চাষ করেছিলাম। বাম্পার ফলন হয়েছিল। চার দিনের বৃষ্টিতে আমাদের সব শেষ করে দিয়েছে। ঋণ পরিশোধ করব কী করে, তা ভেবে পাচ্ছি না।ভেদরগঞ্জের কাচিকাটা এলাকার আলু চাষি সোলায়মান শেখ বলেন, ৫ গণ্ডা জমিতে আলু চাষ করেছিলাম ব্র্যাক থেকে লোন করে। বৃষ্টিতে আলু পচে গেছে। আলু তুলতে পারিনি। এখন কী করে ঋণ পরিশোধ করব, এ চিন্তায় অস্থির।

    শরীয়তপুর কৃষি বিভাগের উপপরিচালক মে. রেফাতুল ইসলাম বলেন, আমাদের জেলার সবচেয়ে বেশি আলু চাষ হয় নড়িয়া উপজেলার চরআত্র ও নওপাড়া। সেখানে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা তালিকা অনুযায়ী কৃষকদের ক্ষয়ক্ষতি অবস্থা জানতে পেরেছি। সেখানে আমাদের কর্মকর্তারা কাজ করছে। সে তালিকা আমি ঢাকায় পাঠিয়েছি। তবে কিছু কিছু এলাকায় কর্মকর্তারা যায়নি বলে আমি অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।

    No comments

    If you have any doubt, please let me know that with your valuable comments.

    পৃষ্ঠা

    সর্বশেষ খবর

    COVID-19 থেকে বাঁচার উপায় !