'নিয়োগপত্র' ছাড়াই যুগের পর যুগ ধরে কাজ করছেন শ্রমিকরা
বছরের পর বছর ধরে কাজ করে যাচ্ছেন একেকজন শ্রমিক। সুযোগ সুবিধা মিলিয়ে কারখানাও বদলাচ্ছেন তারা। তবে, এসবই হয় মুখে মুখে; সারাজীবনেও পান না কোন নিয়োগপত্র। এমন কি অনেকেই জানেন না নিয়োগপত্র কি? এভাবেই চলছে দেশের হালকা প্রকৌশল শিল্প খাত। আর এই আইন না মানার কারণ হিসেবে শ্রমিক-মালিক সুসম্পর্ককেই সবচেয়ে বড় করে দেখতে চান মালিক পক্ষ।এদিকে, কর্মী নিয়োগে প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো না মানলে এই খাতের শক্তিশালী বিকাশ সম্ভব নয় বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদরা। কেরাণীগঞ্জের প্রাণতোষের মতোই কর্মজীবনের অভিজ্ঞতার কথা জানালেন ঢাকার গোলাপবাগের সঞ্জিত দাস আর দোহার নবাবগঞ্জের ফিরোজ রহমান। যুগের পর যুগ ধরে নিয়োগপত্র ছাড়া কাজ করা যে কতটা হতাশা ও ঝুঁকির, তাও বোঝা গেল তাদের কথায়।কেরাণীগঞ্জের প্রাণতোষ বলেন, 'আমরা কাম করতাছি আজকা তিরিশ-পায়ত্তিশ বচ্ছর ধইরা। সপ্তাহে বেতন দ্যায়। কোন এক্সিডেন-মেক্সিডেন হইলে কোনো কাগজপত্র নাই। কাম করলে টেকা দেয় না করলে টেকা দেয় না।'
তবুও এভাবেই চলছে দেশের হালকা প্রকৌশল শিল্পখাত। অনেক শ্রমিক আবার জানেন না নিয়োগপত্র কি?
শ্রম আইন না মানার যুক্তি দেখালেন এখাতের উদ্যোক্তাদের সংগঠনের সভাপতি। শ্রমিক-মালিক আন্তরিক সম্পর্কের কারণেই তারা মাথা ঘামান না নিয়োগপত্র নিয়ে।হালকা প্রকৌশল শিল্প মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক বলেন, 'কর্পোরেট হাউজে যেভাবে এপোয়েনমেন্ট লেটার দেয়া হয়, তারপর ছুটি ছাটার ব্যাপারে অনেক আইন কানুন মেনে চলা হয়, আমাদের এখানে এমন কিছু দেয়া হয় না।'
কর ফাঁকি বন্ধ, শ্রমিক-মালিক স্বার্থ সুরক্ষা ও সম্ভাবনা কাজে লাগিয়ে এখাতের শক্তিশালী বিকাশে আইনি কাঠামো পরিপালনে মালিকপক্ষকে এগিয়ে আসার পরামর্শ অর্থনীতিবিদদের।অর্থনীতিবিদ তৌফিকুল ইসলাম খান বলেন, 'তারা যখন আইনের ভেতর থাকে না তখন করের আওতায় যেতে চায় না। এই খাতকে প্রাতিষ্ঠানিকররণ করতে হবে, এই খাতের বিকাশের জন্য এটি গুরুত্বপূর্ণ।'
বর্তমানে সারাদেশে হালকা প্রকৌশল খাতের ৪০ হাজার কারখানা রয়েছে আর এসব কারখানায় কাজ করে ৬ থেকে ৭ লাখ শ্রমিক।
No comments
If you have any doubt, please let me know that with your valuable comments.