উদ্বোধনের আগেই আড়াই কোটি টাকার ব্রিজে ফাটল!
সিলেটের জৈন্তাপুরে প্রায় আড়াই কোটি টাকা ব্যয়ে নব নির্মিত একটি ব্রিজ উদ্বোধনের আগেই মূল পিলারে বড় ধরনের ফাটল দেখা দিয়েছে।এছাড়া ব্রিজের গার্ড ওয়াল বৃষ্টির কারণে পানিতে ভেসে গেছে। ব্রিজটি কয়েকদিনের মধ্যেই উদ্বোধনের কথা রয়েছে।এরইমধ্যে এতে ফাটল ধরায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ব্রিজ নির্মাণে নানা অনিয়ম-দুর্নীতির তথ্য বেরিয়ে এসেছে।এছাড়াও অভিযোগ উঠেছে, স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদফতর কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে।
জানা গেছে, ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর এলজিইডির বাস্তবায়নে ২ কোটি ৩৭ লাখ টাকা ব্যয়ে মুক্তাপুর (জৈন্তাপুর ইউপি হেডকোয়ার্টার) ঢুলটিরপাড় ২নং লক্ষ্মীপুর বাজারে চিকারখালের ওপর ব্রিজ নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ইমরান আহমদ এমপি।এ ব্রিজটি নির্মাণ হলে জৈন্তাপুর উপজেলা সদরের সঙ্গে কয়েকটি এলাকার সরাসরি যোগাযোগ স্থাপিত হবে।
কিন্তু ব্রিজটি উদ্বোধনের আগেই পিলারে ফাটল দেখা দেয়।এলাকাবাসীর অভিযোগ, কাদামিশ্রিত নিম্নমানের বালু-পাথর, সিমেন্ট ও নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করায় এ ফাটল দেখা দিয়েছে। ব্রিজের পাইলিং কাজও স্থানীয় এলজিইডি কর্তৃপক্ষের সঠিক তদারকিতে করা হয়নি।আক্ষেপের সুরে তারা আরও জানান, মন্ত্রীর ঐকান্তিক চেষ্টায় আমরা ব্রিজটি পেয়েছিলাম, কিন্তু এলজিইডির খামখেয়ালিপনার কারণে আবারও ব্রিজটি নদীতে বিলীন হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। উদ্বোধনের আগেই যে ব্রিজে ফাটল ধরে সেটা পেয়ে আমরা কি করব!
বর্ষা নামলে ২ কোটি ৩৭ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত এ ব্রিজ নদীতে তলিয়ে যাবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন তারা।খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এ ব্রিজের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তাদের ইচ্ছামতো ব্রিজের পাইলিং ৮০ ফুটের স্থলে কোনো কোনো পিলারে ৩৫-৪০ ফুট গভীরে পাইলিং করে ঢালাইয়ের কাজ সম্পন্ন করেছে।এলাকাবাসী বিষয়টি উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার অফিসে একাধিকবার মোবাইল ফোনে জানালেও বিষয়টি নিয়ে কোনো কর্ণপাত করেনি স্থানীয় প্রকৌশল অধিদফতর জৈন্তাপুর।এমন দুর্ভাগ্যের জন্য এলাবাসী জৈন্তাপুর অফিসের সহকারী প্রকৌশলী তানভীর আহমদকে দোষারোপ করেন।
তাদের অভিযোগ, সহকারী প্রকৌশলী তানভীর আহমদ নানা দুর্নীতির কারণে এ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। তিনি এসব দুর্নীতি করে আঙুল ফুলে কলা গাছে পরিণত হচ্ছেন।এলাকাবাসীর এমন অভিযোগ অস্বীকার করে তানভীর আহমদ বলেন, সঠিক নিয়মে কাজ হয়েছে। এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। পানির স্রোত বেশি হওয়ায় গার্ডার ভেঙে যায় এটি ব্রিজের কোনো ক্ষতি হবে না। এছাড়া পাইলিং পিলার ফাটলের বিষয়ে আমার কোনো দোষ নেই। বিষয়টির জন্য স্যারের সঙ্গে কথা বলেন।
এ ব্যাপারে এলজিইডির জৈন্তাপুর উপজেলা প্রকৌশলী মো. হাসানুজ্জামান বলেন, ৩০ থেকে ৩৫ ফুটে গভীরে পাইলিং করা হয়নি। প্রতিটি পাইলিংকাজ ৮০ ফুট সম্পন্ন করে ঢালাই কাজ করা হয়েছে। তবে ফাটলের বিষয় আমার জানা ছিল না। এ ফাটল দেখে আতঙ্কিত হবার কিছু নেই। এটি প্লাস্টারিং করলে সমাধান হয়ে যাবে।
এদিকে স্থানীয় সাংসদ প্রতিমন্ত্রী ইমরান আহমদ দ্রুত সরেজমিনে পরিদর্শন করে তদন্তপূর্বক সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।
সূত্র-যুগান্তর
No comments
If you have any doubt, please let me know that with your valuable comments.