বান্ধবীর বাবার বিয়ে ঠেকাতে গিয়ে মারধরের শিকার জাবির ৫ শিক্ষার্থী
বান্ধবীর বাবার বিয়ে ঠেকাতে এসে সিরাজগঞ্জের তাড়াশে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) পাঁচ শিক্ষার্থী গ্রামবাসীর মারধরের শিকার হয়েছেন। এ সময় ওই বান্ধবীও মারধরের শিকার হয়েছে। রবিবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে উপজেলার সবুজপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে। সংবাদ পেয়ে সোমবার ভোররাত ৩টার দিকে বান্ধবীসহ ৫ শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করে থানায় আনার পর দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠিয়ে দিয়েছে পুলিশ।
মারধরের শিকার শিক্ষার্থীরা হলেন- গাজীপুরের মাহবুবুল হকের ছেলে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ ৪২তম ব্যাচের রাকিবুল ইসলাম, বগুড়ার সান্তাহারের জালাল উদ্দিনের ছেলে নাট্যতত্ব বিভাগের আরিফ মেহেদী, গাজীপুরের আব্দুর রহমানের মেয়ে নাট্য তত্ত্ব অনুষদের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ক্যামেলিয়া চুঁড়া, ঢাকার মোহাম্মদপুর এলাকার স্বপন মাহফুজের ছেলে রেদোয়ান মাহফুজ, ঢাকার মিরপুরের কমল বড়ুয়ার ছেলে দিপংকর বড়ুয়া দিপ্ত এবং তাড়াশের সবুজপাড়া গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সামাদের মেয়ে রিশা আইরিন (২২)। স্থানীয়রা জানান, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী রিশা আইরিনের মা অসুস্থ থাকায় বাবা মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সামাদ দ্বিতীয় বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেন। এ কথা শুনে রিশা শারমিন বাড়িতে ছুটে আসেন এবং তার বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ বন্ধুকে বাবাকে বোঝানোর জন্য সহযোগিতা চান। বান্ধবীর ডাকে সাড়া দিয়ে পাঁচ বন্ধু রবিবার সন্ধ্যায় তার তাড়াশের বাড়িতে আসেন। রাতে রিশা বন্ধুদের নিয়ে তার বাবার সঙ্গে কথা বলতে গেলে তাদের মধ্যে কথা-কাটাকাটি ও এক পর্যায়ে হাতাহাতি হয়। এক পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সামাদ গ্রামবাসীকে ডাক দেয় এবং মেয়েসহ ৬ জনকে মারধর করে। এসময় গ্রামবাসী উত্তেজিত হয়ে ৬ জনকেই গণধোলাই দেয়। সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শিক্ষার্থীদের উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন।
তাড়াশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান জানান, মেয়ে ও তার বন্ধুরা মুক্তিযোদ্ধাকে লাঞ্চিত করেছিল। এ নিয়ে হাতাহাতি হয়। গ্রামবাসী মারপিট করে তাদেরকে আটকে রেখেছে সংবাদ পেয়ে ভোরে ৫ জনকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়। প্রাথমিক চিকিৎসাও দেয়া হয়। দুপুরে আলোচনা করে তাদের স্ব-স্ব জিম্মায় ছেড়ে দেয়া হলে সবাই ঢাকায় চলে যায়। এ বিষয়ে মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সামাদ বলেন, আমার স্ত্রী শামসুন্নাহার দীর্ঘ ১৫ বছর যাবত অসুস্থ। তাই নিরুপায় হয়ে দ্বিতীয় বিয়ের চিন্তা করেছি। বিষয়টি জানতে পেরে মেয়ে তার বন্ধুদের ডেকে এনে আমাকে লাঞ্ছিত করেছে।তবে রিশা শারমিন বলেন, বাবা আমাদের ও মায়ের ব্যাপারে সম্পূর্ণ উদাসীন। এ অবস্থায় তিনি দ্বিতীয় বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেন। বাবাকে বোঝাতে বন্ধুদের ডেকে এনেছিলাম। কিন্তু বাবা আমাকে ও আমার বন্ধুদের গ্রামের মানুষ দিয়ে মারধর করে অন্যায়ভাবে পুলিশের হাতে তুলে দেন।

Bangladeshi Taka Converter
No comments
If you have any doubt, please let me know that with your valuable comments.