আজ বিশ্ব মা দিবস ‘মধুর আমার মায়ের হাসি, চাঁদের মুখে ঝরে...’

‘মধুর আমার মায়ের হাসি
চাঁদের মুখে ঝরে
মাকে মনে পড়ে আমার
মাকে মনে পড়ে।’
পৃথিবীতে ‘মা’ শব্দের চেয়ে অতি আপন শব্দ আর দ্বিতীয়টি নেই। সন্তানের কাছে সবচেয়ে আপন ও প্রিয় হচ্ছেন তার মা। মায়ের গর্ভে সন্তান যেমন রক্ত শুষে নিরাপদে ধীরে ধীরে বড় হয়, তেমনি জšে§র পরও তিল তিল করে মা-ই শুধু তার হৃদয়ের ধন সন্তানকে বড় করে তোলেন আগামীর সম্ভাবনাময় একজন মানুষ হিসেবে। নিজে কষ্ট তুচ্ছজ্ঞান করে সন্তানের মুখে হাসি ফোটাতে সব সময়ই ব্যস্ত থাকেন মমতাময়ী মা।
শৈশব-কৈশোরের গণ্ডি পেরিয়ে টগবগে যুবক বা বৃদ্ধের কোটায় পা ফেলার পরও মায়ের কাছে সে নিতান্তই সন্তান। ‘আমার সন্তান যেন থাকে দুধে-ভাতে’- এ প্রার্থনা সর্বদা মায়ের মনেই প্রতিধ্বনিত হয়। মানব জীবনের যত ভালোবাসা আর অটুট বন্ধনের নজির আছে, তার মধ্যে ‘মা-সন্তান’র বন্ধনই সবচেয়ে সুদৃঢ় ও অটুট। মমতাময়ী এ মায়ের প্রতি হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসা আর শ্রদ্ধা জানানোর মধ্য দিয়ে আজ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পালিত হচ্ছে ‘বিশ্ব মা দিবস’। দুনিয়ার লাখো-কোটি মানুষের মতো বাংলাদেশেও মন-প্রাণ উজাড় করে আজকের দিনে মায়ের প্রতি সন্তান জানাবে তাদের অকৃত্রিম শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা। ধনী-নির্ধন সব মা-ই আজকের দিনে শ্রদ্ধায় সিক্ত হোক, দীর্ঘায়ু হোন তারা, এটাই হোক কামনা।
প্রতি বছর মে মাসের দ্বিতীয় রোববারকে ‘বিশ্ব মা দিবস’ হিসেবে পালন করা হয়। এ দিবসের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু ১৯০৭ সালে। ওই বছর এক রোববার যুক্তরাষ্ট্রে আনা মারিয়া নামের এক নারী স্কুলে নিজের বক্তব্যে মায়ের জন্য একটি দিবসের গুরুত্ব ব্যাখ্যা করেন। এভাবেই শুরু হয় মা দিবসের যাত্রা। তবে সার্চ ইঞ্জিন গুগল বলছে, সব দেশে মা দিবস এ একই দিন উদযাপিত হয় না। দিবস উদ্ভবের উৎসভূমি যুক্তরাষ্ট্রে ৭ এপ্রিল পালিত হয় মা দিবস।
বাংলাদেশে এ দিবসটি ঘটা করে পালনের ইতিহাস খুব বেশি দিনের নয়। কিন্তু নাগরিক জীবনে দিনটি পালনের ক্ষেত্রে বেশি সাড়া মিলেছে গত কয়েক বছর। সন্তানের প্রতি মায়ের ভালোবাসা আর মায়ের প্রতি সন্তানের ভালোবাসার মেলবন্ধনেই পালিত হচ্ছে বিশ্ব মা দিবস ২০১৯। এ উপলক্ষে মায়ের পায়ে হাত দিয়ে সালাম করে কিংবা মায়ের ভালোবাসা নিয়েই দিনটি শুরু করবে সন্তানরা। আর যারা প্রাণপ্রিয় মা জননীকে কাছে পাবেন না, তারা হয়তো মুঠোফোনেই মায়ের কাছে দোয়া চাইবেন। তবে যেসব সন্তানের মায়েরা পরপারে পাড়ি জমিয়েছেন, তারা হয়তো মায়ের কবরে ফুল দিয়ে মায়ের জন্য দোয়া করেই দিনটি শুরু করবেন।
এছাড়া মাকে নানা উপায়ে সম্মান জানানোর রীতি আছে। সাধারণত সন্তানরা তাদের মাকে ফুল, কার্ড ও বিভিন্ন ধরনের উপহার দিয়ে থাকেন।
কিছু লোক তাদের মাকে গহনা দিয়ে থাকেন। সন্তানের কেউ কেউ আবার সকালে নাস্তা বা রমজানের সেহরি প্রস্তুত করে মায়ের কাছে উপস্থাপনের মাধ্যমে বিস্মিত করতে পারেন। মাকে নিয়ে আবার অনেকে ঘরের বাইরে নৈশভোজ বা ঘুরতে বের হতে পারেন।
তবে মাকে কেক ও কুকিসহ বিশেষ খাবার উপহার দেয়া অনেকটাই সাধারণ ঘটনা। কোনো কোনো স্কুলে আনুষ্ঠানিকভাবে মা দিবস পালন করা হয়। ওইসব অনুষ্ঠানে মায়ের জন্য নাচ ও গানসহ নানা কর্মসূচি থাকে। শিক্ষার্থীরা মায়ের সম্মানে বক্তৃতাও করে।মা দিবসকে সামনে রেখে বাণী দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বাংলাদেশসহ বিশ্বের সব মাকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। একইভাবে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।
এদিকে আজ বিশ্ব মা দিবসকে বরণ করে নিতে বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন দিনব্যাপী বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। গত এক দশক ধরে আজাদ প্রডাক্টস ‘রত্নগর্ভা মা অ্যাওয়ার্ড’ দিয়ে আসছে। এর ধারাবাহিকতায় আজও তারা রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। এছাড়া আরও কয়েকটি সংগঠন আলোচনা সভা ও বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
No comments
If you have any doubt, please let me know that with your valuable comments.