জিওল মাছ চাষ!
খাল-বিল-ঝিল-ডোবা-এঁদো পুকুর এমনকী ধানখেত—জিওল মাছ চাষ করা যায় সব জায়গাতেই। বিঘা প্রতি ৫০০০-৭০০০টি চারা মজুত করা যায়। চারা ছাড়ার পরদিন থেকে পরিপূরক খাবার দেওয়া দরকার। আমিষ জাতীয় খাবার এই মাছের বেশি পছন্দ। এরা রাতের দিকে খেতে পছন্দ করে। সেজন্য দৈনিক মোট খাবারের ৩/৪ ভাগ সন্ধ্যায় এবং বাকি ১/৪ ভাগ সকালে দিতে হবে। শুঁটকি মাছের গুঁড়ো, মাছ-মুরগির নাড়ি-ভুঁড়ি, গেঁড়ি-গুগলি, শামুক-ঝিনুক, নষ্ট চাল-ডাল-আলু পরিপূরক খাবার হিসাবে ব্যবহার করা যায় নির্দিষ্ট অনুপাতে মিশিয়ে। বিশেষ করে শুকনো মাছের গুঁড়ো ও চালের কুঁড়ো প্রথম মাসে ১:৩, দ্বিতীয় মাসে ১:১ এবং তৃতীয় থেকে পঞ্চম মাসে ৩:১ অনুপাতে দিলে ভাল। দৈনিক খাবারের পরিমাণ হবে প্রথম মাসে ১.৫ কেজি, দ্বিতীয় মাসে ৩ কেজি, তৃতীয় মাসে ৫ কেজি, চতুর্থ মাসে ১০ কেজি এবং পঞ্চম মাসে ৮ কেজি। ৫-৬ মাস পরে মাছ বিক্রয়যোগ্য হবে।
• জিওল মাছের মধ্যে মাগুর, শিঙি, কই, শাল, শোল, ল্যাটার চাহিদা বেশি।
• জিওল মাছ পুষ্টিকর ও সহজপাচ্য। প্রোটিন ও লোহার পরিমাণ বেশি এবং ফ্যাট কম থাকার জন্য রোগীর পথ্য হিসাবে ব্যবহৃত হয়।
• এক বিঘা পুকুর থেকে জিওল মাছের চাষ করে ছ’মাস সময়ে দেড় লক্ষ টাকার বেশি লাভ সম্ভব।
• জিওল মাছ পুষ্টিকর ও সহজপাচ্য। প্রোটিন ও লোহার পরিমাণ বেশি এবং ফ্যাট কম থাকার জন্য রোগীর পথ্য হিসাবে ব্যবহৃত হয়।
• এক বিঘা পুকুর থেকে জিওল মাছের চাষ করে ছ’মাস সময়ে দেড় লক্ষ টাকার বেশি লাভ সম্ভব।
মিশ্র মাছ চাষ পুকুরে: যে পুকুরে পোনা মাছ চাষ হয়, সেই সব জায়গায় তলার মাছ যেমন, মৃগেল ও আমেরিকান রুইয়ের সংখ্যা কমিয়ে দু’গুণ মাগুর অথবা শিঙি মাছের চারা ছাড়া যায়। আলাদা খাবার দিতে হবে না। এরা পোনা মাছের খাবার খায়। বিঘা প্রতি ৬০০ চারা মজুত করা যায়।
চৌবাচ্চায় চাষ: ৮ ফুট x ৪ ফুট x ৩ ফুট মাপের সিমেন্ট বা প্লাস্টিকের ট্যাঙ্কে জিওল মাছের চাষ করা যায়। তলায় ৫ সেমি পুরু মাটির স্তর তৈরি করতে হবে। জল ভরে ৮-১০ গ্রাম ওজনের প্রতি বর্গফুটে ৮-১০টি মাছ মজুত করতে হবে। জল ঢোকানো ও বের করে দেওয়ার জন্য নল থাকতে হবে। পরিপূরক খাবার দিনে দু’বার। ৩-৪ মাস পরে চৌবাচ্চা থেকে ৩০-৪০ গ্রাম ওজনের ১২-১৬ কেজি মাগুর মিলবে।
খাঁচায় চাষ: পুকুর, খাল-বিলে বাঁশ ও নাইলনের জাল দিয়ে তৈরি খাঁচা ডুবিয়ে জিওল মাছ চাষ করা যেতে পারে। খাঁচা যেন মাটির তিন ফুট উপরে এবং কমপক্ষে ৩/৪ অংশ জলে ডুবে থাকে। প্রতি বর্গমিটারে ২০০-৩০০টি চারা খাঁচার উপরে খোলা মুখ দিয়ে ঢোকাতে হবে। প্রতি দিন দু’বেলা নির্দিষ্ট খাবার মণ্ডের আকারে দিতে হবে।
ধান খেতে চাষ: ৪-৫ মাস জল থাকা ধান জমিতে মাগুর চাষ করা যায়। জমির ধারে নালা থাকতে হবে। জল কমে গেলে মাছ সেখানে আশ্রয় নিতে পারে। দেশি ধানের (জলধি, জলপ্রভা প্রভৃতি) সঙ্গে বিঘা প্রতি জমিতে ১০০০-১৫০০ মাগুর চারা মজুত করা যায়। ধান চাষে রাসায়নিক সার, কীটনাশক ব্যবহার না করা ভাল।
No comments
If you have any doubt, please let me know that with your valuable comments.