কুড়িয়ে পাওয়া শিশুঃ রাজকুমারীর মূল্য ঠিক হল ২০ লাখ টাকা
৫০ দিন আইনি লড়াই শেষে আদালতে কুড়িয়ে পাওয়া রাজকুমারীর মূল্য ঠিক হল ২০ লাখ টাকা।জামালপুর পারিবারিক আদালতের সহকারী জজ ফারহানা আক্তার রাজকুমারীর নামে ২০ লাখ টাকা ফিক্সড ডিপোজিট করে ব্যাংক রসিদ জমা দেয়ার আদেশ দিয়েছেন। রায়ে বলা হয়েছে, যিনি এই অর্থ ব্যাংকে জমা রাখতে পারবেন তিনিই রাজকুমারীর দায়িত্ব নিতে পারবেন। শিশুটি এখন বকশীগঞ্জের ভ্যান চালক সুমন দম্পতির জিম্মায় রয়েছে।আদালত শিশুটিকে আরও ৪৫ দিনের জন্য সুমন দম্পতির জিম্মায়ই রাখার আদেশ দিয়েছেন। সুমন দম্পতিসহ আরও একটি পরিবার শিশুটির দায়িত্ব নিতে আদালতে দ্বারস্থ হয়েছেন।
গত ২৯ মার্চ বকশীগঞ্জ পৌর শহরের শ্মশান ঘাটে কে বা কারা নবজাতক কন্যা শিশুটিকে রেখে যায়। কান্নাকাটির শব্দ শুনে ওই এলাকার মদকপাড়ার আছর আলীর স্ত্রী সন্ধি বেগম শিশুটিকে বাড়িতে নিয়ে যায়। পরে জানাজানি হলে বকশীগঞ্জ থানার পুলিশ শিশুটিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন। কুড়িয়ে পাওয়া ফুটফুটে নবজাতক শিশুটির নাম রাখা হয় রাজকুমারী।এ নিয়ে দৈনিক যুগান্তরসহ বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হয়। সংবাদ প্রকাশের পর ভ্যানচালক সুমনসহ একাধিক সামর্থ্যবান পরিবার রাজকুমারীর দায়িত্ব নিতে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। সর্বশেষ রাজকুমারীকে পেতে জামালপুর পারিবারিক আদালতে যান বকশীগঞ্জ পৌর শহরের বাসিন্দা ব্যাংকার সামিউল হকের স্ত্রী ফারহানা ইয়াসমিন রিপা ও পৌর শহরের কামারপট্টি মোড়ের ভ্যান চালক সুমন মিয়া। মামলায় ব্যাংকার সামিউল হকের স্ত্রী ফারহানা ইয়াসমিন রিপার পক্ষে সাক্ষ্য দেন বকশীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম বিজয়। সুমন মিয়ার পক্ষে সাক্ষ্য দেন উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম জুমান, পৌরসভার মেয়র নজরুল ইসলাম সওদাগর ও মহিলা কাউন্সিলর রহিমা। পরে গত ২০ মে বিজ্ঞ সহকারী জজ ফারহানা আক্তার রাজকুমারীর মামলার রায় দেন। রায়ে রাজকুমারীর দায়িত্ব নেয়ার বিনিময়ে সিটি ব্যাংকে তার নামে ২০ লাখ টাকা ফিক্সড ডিপোজিট করে দেয়াসহ ৩টি বিশেষ শর্ত দেয়া হয়।
ব্যাংকে টাকা জমা দেয়াসহ যাবতীয় কাজ শেষ করতে ৪৫ দিনের সময় বেঁধে দেয়া হয়। ফারহানা ইয়াসমিনের আইনজীবী ছিলেন জামালপুর আইনজীবী সমিতির সভাপতি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট বাকী বিল্লাহ ও অ্যাডভোকেট ইসমাইল হোসেন সিরাজী। সুমন দম্পতির পক্ষে ছিলেন সাবেক পিপি মাহফুজুর রহমান মন্টু ও অ্যাডভোকেট আনিসুজ্জামান। তবে সুমন প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, রাজকুমারীকে নিতে এত টাকা আমি কোথায় পাব? তবে ফারহানা ইয়াসমিন রিপার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
No comments
If you have any doubt, please let me know that with your valuable comments.