সরকারি কর্মকর্তাদের কী বলে সম্বোধন করবেন জানতে চেয়ে আবেদন
সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সম্বোধনে কোনো আইন বা বিধি রয়েছে কি না তা জানতে চেয়ে তথ্য অধিকার আইনে আবেদন করেছেন এক উন্নয়নকর্মী।গত ২০ মে দুপুরে তথ্য অধিকার বিধিমালার বিধি-৩ এর নির্ধারিত ফরম ‘ক’ পূরণ করে এই তথ্য জানতে চান তিনি।এমন আবেদনকারীর নাম সালেহীন চৌধুরী শুভ। তিনি সুনামগঞ্জ শহরের ষোলঘর ওয়াপদা রোডের বাসিন্দা।আবেদনে তিনি জানতে চেয়েছেন, সুনামগঞ্জ কালেক্টরেটে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নাগরিকরা কী বলে ডাকবেন?
সালেহীন চৌধুরী বলেন, সম্বোধন নিয়ে দেশের সাধারণ জনগণ প্রায়ই সরকারি দফতরগুলোতে দুর্ব্যবহারের শিকার হন। ‘স্যার’ সম্বোধন না করলে বিরক্তি ভাব দেখান কর্মকর্তারা। তারা বুঝতে চান না যে, তারা রাষ্ট্রের কর্মচারী।এ বিষয়ে অনেক সাধারণ মানুষেরও তেমন একটা জানা নেই বলে মনে করেন সালেহীন।সে জন্য জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে তিনি সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সম্বোধনে কোনো আইন বা বিধি আছে কি না তা তথ্য অধিকার আইনে জানতে চেয়েছেন।আবেদনটি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সংশ্লিষ্ট শাখায় (ডকেটে) জমা দিয়ে রিসিভড কপিও এনেছেন বলে জানান সালেহীন চৌধুরী।ইতিমধ্যে সালেহীন তার এই আবেদনের কপি নিজের ফেসবুক ওয়ালে আপলোড করেছেন।
তার এমন আবেদনকে দারুন একটি কাজ বলে মন্তব্য করেছেন কেউ কেউ।অনেকেই তথ্যটি দেশের সবারই জানা প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন।আফরোজ রায়হান নামের একজন লিখেছেন, আধুনিক, সময়োপযোগী, বুদ্ধিদীপ্ত, সাহসী উদ্যোগ। অসম মানবিক বাস্তবতার চোখে আঙ্গুল দিয়ে ভবিষ্যতের সুসম পথ দেখাবে আশা করি।এ বিষয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের তথ্য ও অভিযোগ শাখার একজন দায়িত্বশীল কর্মচারী জানান, ডকেটে কেউ তথ্য অধিকার আইনে আবেদন করলে তা স্ক্যান করে তাৎক্ষণিক জেলা প্রশাসকের ইমেইলে পাঠানো হয়। তিনি এসব আবেদন দিনের কার্যক্রম শেষে রাতে দেখেন। বেশি ব্যস্ত থাকলে পরদিন সকালে দেখেন।প্রসঙ্গত কয়েক দিন আগে ‘দিদি’ ডাকায় এক ব্যবসায়ীর মাছের থালায় লাথি মেরে মাছ ড্রেনে ফেলে দেন ফেঞ্চুগঞ্জের সহকারী কমিশনার (ভূমি) সঞ্চিতা কর্মকার। এ নিয়ে স্থানীয়ভাবে বিক্ষোভ করেন ফেঞ্চুগঞ্জের ব্যবসায়ীরা।
বিষয়টি ফেসবুকেও বেশ চর্চিত হয়।
ঘটনাটি দৈনিক যুগান্তরে প্রকাশিত হলে দেশব্যাপী তোলপাড় হয়। পরে জানা যায়, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে ভুক্তোভোগীদের কাছে ক্ষমা চেয়ে বিষয়টি মীমাংসা করেছেন ওই এসিল্যান্ড।
কিন্তু সেই ঘটনার জেরে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের 'স্যার' সম্বোধনে বিষয়টি নিয়ে আলোচনায় মেতে ওঠেন সচেতন নাগরিকরা।
সূত্র-যুগান্তর
সরকার মানে জনগণের প্রতিনিধিদের দ্বারা গঠিত শাসন ব্যবস্থা। যাদের অধিনে কাজ করে সরকারী কর্মকর্তা, কর্মচারীরা মানে সহজ কথায় দেশের চাকররা। যাদের বেতন দেওয়া হয় জনগণের কর, ভ্যাটের টাকায়। সরধারণের ভ্যাটে, করের টাকায় বেতন নিবে অাবার তারাই জনসাধারণের সাথে অমানবিক ব্যবহার করবে। অাসলেই এটা দুঃজনক ব্যাপার । অাগে দেখতাম পুলিশ শুধু এরকম কাজটা বেশি করত। অার এখন বেতন সরকার কয়েক ধাপে অত্যাধিক বাড়িয়ে যেন বেশির ভাগ সরকারী কর্মকর্তা, কর্মচারীদের মানুষ থেকে ভগবান বা দেবতা বানিয়ে দিয়েছে। ব্যাপারটা বর্তমান প্রেক্ষাপটে তাই মনে হচ্ছে। সরকারী অফিস গুলােতে গেলে অাজকাল তাই মনে হয় যে, দেবতা বা ভগবানের কোন মন্দিরে এসেছি অামরা। যেন বিনয়ের সাথে 'স্যার' না বললে এই সরকারের তথা জনগণের কামলা এই সব অসাধু, দূর্নীতিবাজ,ঘুষখোর দেবতারা জনসেবা দানে কুন্ঠিত বোধ করে। তবে অাশার বিষয় হলো যে, এখনোও কিছু হাতে গোনা সৎ সরকারী কর্মকর্তা, কর্মচারী রয়েছেন যাদের সততা ও একনিষ্ট কাজের জন্য পুরো জাতি গর্ববোধ করে।
No comments
If you have any doubt, please let me know that with your valuable comments.