মধ্য ব্রহ্মপুত্রের সিধাই চরে গণউন্নয়ন কেন্দ্রের ‘ম্যাজিক’
রেকর্ড ভাঙা বন্যার পানিতে চর-দ্বীপচর তলিয়ে। চারদিকে শুধুই দুর্ভোগ দুর্দশার করুণ চিত্র। কিন্তু অবিশ্বাস্য হলেও সত্য মধ্য ব্রহ্মপুত্রের বুকে বানের আঁচ লাগেনি গাইবান্ধার সিধাই চরের এক কোণে। একটি বেসরকারি সংগঠনের কল্যাণে স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে দুধে-ভাতে স্বাভাবিক জীবন যাপন করছে বিচ্ছিন্ন এই দ্বীপ চরের বাসিন্দারা।চারদিকে বন্যার পানি। ব্রহ্মপুত্র নদের মাঝে জেগে আছে সবুজে ঘেরা সিধাই চরের একটি অংশ। অবাক হলেও সত্যি বানের জল ছুঁতে পারেনি এই চর। যেখানে ক্যারামের গুটিতে যৌবন খুঁজে পায় তরুণরা। খালি গায়ে খেলাধুলার মধ্যে শৈশবের আনন্দ আঁকড়ে ধরে আছে শিশুরাও। প্রতিদিনের মতো স্বাভাবিক কাজ কর্মে ব্যস্ত এখানকার মানুষ। এত বড় প্লাবন একটুও টলাতে পারেনি তাদের।
সবুজ পাতার ফাঁকে মাচায় ফুটে আছে হলদে রঙের কুমড়ো ফুল। দু একটা কুমড়ো চোখে পড়ে কোনো কোনো বাড়ির উঠোনেও। নিজেদের স্বাবলম্বী করতে ছোট ছোট পুকুরে যত্ন করে বড় করছে মাছের পোণা। নানা সামাজিক ব্যাধি সম্পর্কেও সচেতন এখানকার নিরক্ষর মানুষগুলো।উন্নয়নকর্মী এলিজা বেগম বলেন, আবহাওয়া পরিবর্তনের সাথে তাদের মানিয়ে নেওয়া জন্য আমরা কাজ করি। তাদের কৃষি বিষয়ে, জীবন জীবিকার উন্নয়নে সচেতনতামূলক কাজ করি।
উন্নয়নকর্মী রোকনদ্দৌলা বলেন, তারা এখন সব বিষয়ে জানে, বন্যার পূর্ব প্রস্তুতি কি নিতে হবে। বন্যা আসলে কি করতে হবে, কোথায় আশ্রয় নিতে হবে। ভিটেমাটি উঁচু করে বসতি স্থাপন করার মধ্য দিয়ে বন্যার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে চরের মানুষকে রক্ষায় গত বছর পরীক্ষামূলকভাবে বিনা খরচে বসতভিটা উঁচু করে দেয় বেসরকারি সংগঠন গণউন্নয়ন কেন্দ্র। তাদের এই উদ্যোগ ছড়িয়ে দিলে আষাঢ়-শ্রাবণের প্লাবন থেকে এই অঞ্চলের মানুষকে নিরাপদ রাখা সম্ভব বলে মনে করেন সমাজকর্মী গাইবান্ধা গণ উন্নয়ন কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক এম আব্দুস সালাম।
তিনি বলেন, এটা একটা মডেল হতে পারে। এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠান বা সরকারের ইউনিয়ন পরিষদ সকলে এটাকে দেখে এধরনের গ্রাম তৈরি কার উদ্যোগ নিতে পারে। এবছরই মাত্র সাড়ে চার লাখ টাকা ব্যয়ে বসতবাড়ি উঁচু করে দেয় বেসরকারি সংগঠনটি। যাদের কল্যাণে জীবনের স্বাভাবিক ছন্দ ফিরে পেয়েছে ২০ পরিবারের শতাধিক শিশু, নারী, পুরুষ।
No comments
If you have any doubt, please let me know that with your valuable comments.