মালয়েশিয়ায় বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে ইরানিদের ব্যাংক হিসাব
মালয়েশিয়ার বিভিন্ন ব্যাংকে ইরানি ব্যক্তি ও তাদের কোম্পানির হিসাব বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে। এক ডজনের মতো ইরানি এভাবে হয়রানির স্বীকার হওয়ার কথা স্বীকার করেছেন বার্তা সংস্থা রয়টার্সের কাছে।ইসলামী প্রজাতন্ত্রটির বিরুদ্ধে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার সুদূরপ্রসারী প্রভাবেই এমন ঘটছে বলে মনে করা হচ্ছে।
অন্যদের তুলনায় ইরানিদের সঙ্গে লেনদেনের ক্ষেত্রে যদিও মালয়েশিয়ার ব্যাংকগুলো অতিরিক্ত সতর্ক। ইরানি নাগরিক ও এক দূতাবাস কর্মকর্তা বলছেন, সাম্প্রতিক মাসগুলোতে দক্ষিণ এশীয় দেশটিতে তাদের ব্যাংক হিসাব বন্ধের ঘটনা ব্যাপক আকার নিয়েছে।বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক বেহরাং সামাদি বলেন, পোপের চেয়েও বেশি ক্যাথলিকের ভূমিকা রাখছে এসব ব্যাংক।
মালয়েশিয়ায় বাস করা ১০ হাজার ইরানির মধ্যে তিনিও একজন। গত আগস্টে তিনি জানতে পারেন সিআইএমবি ব্যাংক তার ১৪ বছরের পুরনো হিসাবটি বন্ধ করে দিয়েছে।এ ইরানি শিক্ষক বলেন, পশ্চিমা দেশগুলোতে ব্যাংক হিসাব খুলতে কোনো সমস্যা হয় না। তারা কেবল অর্থ স্থানান্তরের বিষয়ে স্পর্শকাতর। বিশেষ করে বড় ধরনের অর্থের ক্ষেত্রে তারা নজর রাখে।
সামাদি বলেন, এক মাসের মধ্যে ব্যাংক হিসাব বন্ধ করে দেয়া হবে বলে সতর্ক করে দিলে তিনি নিজের টাকা তুলে নেন। যদিও রোববার অনলাইনের মাধ্যমে নিজের অ্যাকাউন্টে ঢুকতে পেরেছেন এ ইরানি।গত বছরে ইরানের পরমাণু চুক্তি থেকে একতরফাভাবে সরে যাওয়ার ঘোষণা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর পরও তেহরানের সঙ্গে ভালো কূটনৈতিক সম্পর্ক বজায় রেখেছে মালয়েশিয়া।
গত সপ্তাহে দুই দেশের সম্পর্ক কীভাবে জোরদার করা যায়, তা নিয়েও তাদের আলোচনা হয়েছে।চলতি বছরে ইরানি জ্বালানি তেল ট্যাংকারের ট্র্যাকিংয়ের সঙ্গে এই ব্যাংক হিসাব বন্ধের কোনো সম্পর্ক আছে কিনা, তা পরিষ্কারভাবে জানা সম্ভব হয়নি।এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাড়া পাওয়া যায়নি।
বহু ইরানির দাবি, সিআইএমবি ও আরএইচবি ব্যাংক থেকে তাদের স্বদেশীরা নোটিশ পেয়েছেন।সিআইএমবি এক নোটিশ বলছে, অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি যে আপনার সঙ্গে ব্যাংকিং সম্পর্ক রাখতে আমরা অপারগ।তবে ব্যাংকটি এর কোনো কারণ বর্ণনা করেনি। কিন্তু বেশ কয়েকজন বলছেন, নিষেধাজ্ঞার পর নিরাপত্তা কঠোর করতেই ব্যাংক কর্মকর্তারা এমন উদ্যোগ নিয়েছেন।
সিআইএমবি ও আরএইবি এ বিষয়ে মন্তব্য বলতে অস্বীকার জানিয়েছে। তবে কুয়ালালামপুরের ইরানি দূতাবাস বলছে, বিষয়টির সমাধানে তারা কাজ করছে।এখন মালয়েশিয়ার রাজধানীতে বাস করা ইরানিরা এক ধরনের বিস্ময়ের মধ্যে পড়ে গেছেন যে কীভাবে তারা স্কুল ও হাসপাতালের বিল পরিশোধ করবেন।
তাদের একজন বলেন, ব্যাংক হিসাব ছাড়া আমাদের প্রাচীন আমলের কৌশল অবলম্বন করতে হবে। বালিশ কিংবা বিছানার নিচে টাকা রাখতে হবে। কিন্তু আমাদের সঙ্গে যেটি করা হচ্ছে, তা ন্যায়সঙ্গত না।
No comments
If you have any doubt, please let me know that with your valuable comments.