করোনাভাইরাস: মুম্বাই কলকাতাসহ ৬ শহর ও ১৭০ জেলা হটস্পট!
ভারতে আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। এ অবস্থায় মুম্বাই-কলকাতাসহ ৬টি বড় শহর এবং ১৭০ জেলাকে করোনার হটস্পট ঘোষণা করা হয়েছে। দেশটিতে আগামী ৩ মে পর্যন্ত লকডাউন। তবে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বলছেন, করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে লকডাউন সমাধান নয়।
সরকারকে করোনা পরীক্ষা কার্যকরভাবে বাড়াতে হবে। এদিকে করোনা মোকাবেলায় ভারতকে র্যাপিড অ্যান্টিবডি টেস্ট কিটসহ সাড়ে ৬ লাখ কিট পাঠিয়েছে চীন। বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত ওয়ার্ল্ডওমিটারসের তথ্য অনুযায়ী- ভারতে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ১২ হাজার ৭৫৯ জন, মোট মৃত্যু ৪২৩ জনের। গত ২৪ ঘণ্টায় প্রাণ হারিয়েছেন ২৯ জন। এনডিটিভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, করোনা ঠেকাতে ভারতের ৬৪০ জেলার মধ্যে ১৭০টি জেলাকে হটস্পট হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
পাশাপাশি বিপজ্জনক হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে আরও ২০৭টি জেলা। করোনার সংক্রমণ যেন ওই জেলাগুলোর বাইরে না ছড়াতে পারে, সেদিকে নজর রাখতে সব রাজ্যকে নির্দেশ দিয়েছে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার। এসব জেলায় শুধু করোনা সন্দেহে নয়, ইনফ্লুয়েঞ্জা কিংবা শ্বাসকষ্টজনিত উপসর্গ দেখা দিলেও করোনা পরীক্ষা করা হবে। দেশটির কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, হটস্পটগুলোয় আগামী ২৮ দিন পর্যন্ত অর্থাৎ যতদিন না সব রোগী সুস্থ হয়ে উঠছে কিংবা নতুন করে কেউ সংক্রমিত হওয়া বন্ধ হচ্ছে, ততদিন সব বিধিনিষেধ জারি থাকবে। গ্রামীণ এলাকার হটস্পটগুলো ৩ কিমি. এবং বাফার অঞ্চলে (কমলা জোন) ৭ কিমি. ব্যাসার্ধে থাকবে। মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, রাজ্য ও জেলা প্রশাসনকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে এই সংক্রমণের উৎসের ব্যাপারে। তবে শহরাঞ্চলে এই বিষয়টি খুঁজে বের করা বেশ কঠিন বলে জানানো হয়েছে।
পাশাপাশি রাজ্যগুলোকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে, কোন কোন এলাকায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ছে, সেসব এলাকার করোনা পরিস্থিতি নিয়ে নিয়মিত রিপোর্ট রাখতে। এর ওপর ভিত্তি করেই হটস্পটের তালিকা পরিবর্তন করা হবে। এটি একটি চলমান পদ্ধতি বলে জানানো হয়েছে। ১৭০টি হটস্পটের মধ্যে রাজধানী দিল্লির সব কটি (৯) জেলা, মুম্বাই, কলকাতা, বেঙ্গালুরু আর্বান, হায়দরাবাদ, চেন্নাই, জয়পুর এবং আগরার বেশকিছু এলাকা রয়েছে। তবে এর বাইরেও যেসব এলাকায় দ্রুত হারে সংক্রমণ ছড়াবে বা আক্রান্তের সংখ্যা চার দিনের কম সময়ে দ্বিগুণ হয়ে যাবে, সেগুলোও হটস্পটের আওতায় চলে আসবে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব লব আগরওয়াল বলেন, সংক্রমণের হার কেমন, আক্রান্তের সংখ্যা কী হারে বাড়ছে বা কতটা নিয়ন্ত্রণে আনা গিয়েছে- এসব তথ্য দেয়ার জন্য রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলোকে বলা হয়েছে। লকডাউন করোনাকে হারাতে পারবে না : বৃহস্পতিবার ভারতের কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বলেছেন, করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে লকডাউন সমাধান নয়। সরকারকে করোনার পরীক্ষা কার্যকরভাবে বাড়াতে হবে। তিনি সরকারকে উদ্দেশ করে বলেন, হটস্পট ও নন-হটস্পট- এই দুটো জোন চিহ্নিত করা দরকার।
তিনি বলেন, লকডাউন অল্প সময়ের জন্য ভাইরাসের বিস্তার কমাতে সহায়তা করতে পারে। সরকারের প্রতি আমার পরামর্শ হল- করোনা শনাক্তের পরীক্ষা বাড়ান। তিনি বলেন, সরকার এখন যে পদক্ষেপ নিয়েছে, তা ভারতে করোনার প্রাদুর্ভাবের সঠিক চিত্র তুলে ধরে না। ভারতে সাড়ে ৬ লাখ কিট পাঠাল চীন : করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আবারও চীনের সহযোগিতা পেল ভারত। বৃহস্পতিবার এক টুইটে বেইজিংয়ে নিযুক্ত ভারতীয় রাষ্ট্রদূত বিক্রম মিশ্র জানান, করোনা মহামারী রোধে আরএনএ এক্সট্রাকশন কিট ও র্যাপিড অ্যান্টিবডি টেস্টসহ ভারতে সাড়ে ৬ লাখ কিট পাঠিয়েছে চীন।
বিক্রম টুইটারে লিখেছেন, র্যাপিড অ্যান্টিবডি টেস্ট ও আরএনএ এক্সট্রাকশন কিটসহ সব মিলিয়ে সাড়ে ৬ লাখ কিট আজ গুয়াংজু বিমানবন্দর থেকে ভারতে যাচ্ছে। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে চীন ভারতে ২০ লাখের বেশি কিট পাঠাবে বলে জানা গেছে। যেসব এলাকায় করোনার দ্রুত সংক্রমণ হচ্ছে, সেই হটস্পটগুলোয় পাঠানো হবে কিটগুলো।
No comments
If you have any doubt, please let me know that with your valuable comments.