গরিবের জন্য কিছু করার এটাই সেরা সময়: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের নিবন্ধ !
আমরা ভারতীয়রা সরকারের সম্ভাব্য অব্যবস্থাপনা নিয়ে উদ্বিগ্ন। অর্থ ভুল কোনো ব্যক্তির হাতে চলে যেতে পারে এবং এতে কেউ কেউ অধিক ধনী হয়ে যেতে পারে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে ভারতে সম্পূর্ণ অথবা আংশিক লকডাউন চলবে। জনজীবন গভীর সংকটে। শঙ্কার বিষয় হল- এই সময়ে দেশের বিরাট অংশের মানুষ দরিদ্র বা অনাহারের গহ্বরে প্রবেশ করবে, সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।
অন্যথায় লকডাউনের বিধিও লঙ্ঘিত হবে। কারণ, ওই শ্রেণির মানুষের হারানোর কিছু নেই। তেমন ঘটনা ঘটলে তা হবে ট্র্যাজেডি। তাই সমাজের ওই অংশের মানুষের ন্যূনতম চাহিদা পূরণে সরকারকে সতর্ক থাকতে হবে। ভারতে মজুদ করা খাদ্যভাণ্ডার কম নয়। ২০২০ সালের মার্চের মধ্যে ফুড কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়ার (এফসিআই) মজুদ করা খাদ্যশস্যের পরিমাণ ৭.৭ কোটি টন, যা এই বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। এমনকি ওই খাদ্যশস্যের পরিমাণ বাফার স্টকের (প্রতি তিন মাস অন্তর যে পরিমাণ খাদ্যশস্য মজুদ রাখা হয়) তিন গুণ।
এর ওপর রবিশস্য মজুদ হলে তার পরিমাণ আরও বাড়বে। দেশে এমন জরুরি পরিস্থিতিতে মজুদ থাকা খাদ্যশস্য থেকে জনসাধারণকে বিলিয়ে দেয়াই বুদ্ধিমানের কাজ হবে। ইতোমধ্যে আগামী তিন মাসের জন্য প্রত্যেক ব্যক্তিকে মাসে পাঁচ কেজি করে খাদ্যশস্য গণবণ্টনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তিন মাস যথেষ্ট সময় নয়। কারণ, লকডাউন শিগগির খুললেও অর্থনীতির চাকা সচল হতে আরও সময় লাগবে। এ ক্ষেত্রে রেশন বিলি করতে পরিচয় শনাক্তের প্রতিবন্ধকতা দূর করতে হবে। কারণ, যাদের কার্ড রয়েছে তারাই শুধু রেশন পাচ্ছেন।
অথচ এর বাইরেই বহু মানুষ রয়েছেন। উদাহরণস্বরূপ, ঝাড়খণ্ড রাজ্যেই এখনও ৭ লাখ মানুষ রেশন কার্ড পাননি। এ ছাড়াও বৃদ্ধভাতার মতো বহু আবেদনও ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়ার ফাঁসে আটকে রয়েছে। শুধু রেশন বিলিই নয়, ভিন রাজ্যে আটকে পড়া শ্রমিকদের জন্য ক্যান্টিন চালাতে হবে। স্কুলপড়ুয়া শিশুদের বাড়ি বাড়ি খাবার পৌঁছে দিতে হবে। এ ব্যাপারে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলোকে কাজে লাগাতে হবে। বহু মানুষের আয় এখন শূন্যে নেমে গেছে। এ সময় খাবার নিশ্চিত করা গেলেও কৃষকদের বীজ কিনতে টাকার দরকার। মুদিখানার দোকানদারের নানা পণ্য কিনতে অর্থের প্রয়োজন। অনেকের মাথায় রয়েছে ঋণ পরিশোধের চিন্তা।
এই সব বিষয়কে কখনও উড়িয়ে দেয়া যাবে না। এ ক্ষেত্রে খুব কমসংখ্যক মানুষের হাতেই অর্থ পৌঁছে দিতে পেরেছে সরকার। আর তার অঙ্কও কম। লকডাউনের শুরু থেকেই একশ’ দিনের কাজ বন্ধ। তাই অনেকের হাতেই টাকা নেই। যদি সাহসী কাজ কিছু করার থাকে বা চ্যালেঞ্জ নেয়ার থাকে, তাহলে এটাই সেরা সময়। দুই নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন, অভিজিৎ বিনায়ক ব্যানার্জি ও রিজার্ভ ব্যাংক অব ভারতের সাবেক গভর্নর রঘুরাম রাজন
No comments
If you have any doubt, please let me know that with your valuable comments.