সেই উত্তেজনাকর এলাকায় ৭২ ঘণ্টায় ব্রিজ নির্মাণ করল ভারত!
ভারত ও চীনের সেনা সদস্যদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর তড়িঘড়ি করেই গলওয়ান ব্রিজের নির্মাণ কাজ শেষ করেছে নয়াদিল্লি।
শনিবার ইন্ডিয়া টুডে টিভি জানায়, সংঘর্ষের পর ভারতীয় সেনাবাহিনী তাদের প্রকৌশলী মোতায়েন করে ৭২ ঘন্টায় সামরিক এ স্থাপনার কাজ সমাপ্ত করে।
খবরে বলা হয়, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার (এলএসি) নিকটবর্তী পয়েন্টগুলোতে ভারতীয় সামরিক ইউনিটগুলোকে সহজে প্রবেশাধিকার দিতে কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ এ ৬৮ মিটার লম্বা সেতুটির নির্মাণ কাজ বৃহস্পতিবার বিকালে সমাপ্ত হয়েছিল।
এরপর সেনাবাহিনী দু’ঘণ্টা ধরে যানবাহন চালিয়ে এটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে। চীন কর্তৃপক্ষের চরম উস্কানিমূলক মন্তব্য ও সহিংসতার মধ্যে সেতুটি বেইজিংয়ের বিড়ম্বনার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সোমবার রাতভর সংঘর্ষের পর মঙ্গলবার সকালে নদীর পূর্ব দিকে কয়েক কিলোমিটার উজানে সেনা সদস্যদের লাশ ভেসে ওঠে। এ সংঘর্ষে ২৩ ভারতীয় সেনা নিহত হন।
এরপরই সেনাবাহিনীর পর্বত বিভাগ তাদের আর্মি ইঞ্জিনিয়ার্স ইউনিটকে কোনও বিলম্ব না করে সেতুর নির্মাণকাজ শেষ করার নির্দেশ দিয়েছিল। ‘বেইলি ব্রিজ’ নামের এ সেতুটি পদাতিক যোদ্ধা যানবাহনসহ সকল প্রকারের সামরিক যানবাহন দ্রুত পরিবহনের জন্য ধাতব পদার্থ দিয়ে তৈরি এক প্রকারের বহনযোগ্য সেতু।
ভারতীয় সেনাবাহিনীর নির্দেশাবলী ছিল সুনির্দিষ্ট- যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ব্রিজটি শেষ করতে প্রয়োজনীয় যে কোনো সংস্থান ব্যবহার করুন। ইঞ্জিনিয়াররা ব্রিজটি শেষ করার সঙ্গে সঙ্গে ওই অঞ্চলে পদাতিক সদস্যদের মোতায়েন করা হয়।
শীতল তাপমাত্রায় মঙ্গলবার ও বুধবার দুই দিন রাতে পুরোদমে কাজ চলে। ভারতীয় সেনাবাহিনীর বিভাগীয় কমান্ডার মেজর জেনারেল অভিজিৎ বাপাত সেতুর অগ্রগতি সম্পর্কে একটি নির্দিষ্ট ব্রিফিং পেয়েছিলেন।
তিনি সংঘর্ষের পর দিন ১৬ জুন সকালে চীনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনার জন্য প্যাট্রোল পয়েন্টে ১৪-তে গিয়েছিলেন। এ রক্তপাতের পরে কয়েক দফা আলোচনা হয়েছে।
ওই উপত্যকার মালিকানা দাবি করে ১৯৫০ সাল থেকে সেখানে টহল অব্যাহত রেখেছে চীন। গলওয়ান উপত্যকা দিয়েই এগিয়ে গেছে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা। ভারতের অভিযোগ, চীনা ফৌজ সেই রেখা পেরিয়ে ভারতের জমির অনেকটা কব্জা করেছে। এ নিয়ে গত দেড় মাস ওই অঞ্চলে উত্তেজনা ছিল।
গত ৬ জুন সামরিক জেনারেল পর্যায়ের বৈঠকে দু’দেশেরই নিজস্ব অবস্থান থেকে সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। চীন তা না মানায় ১৫ জুন প্রাণঘাতী সংঘর্ষ বাধে। ওই বৈঠকের সিদ্ধান্ত মানা, না মানা নিয়ে উভয় পক্ষ পাল্টাপাল্টি দোষারোপ করছে।
No comments
If you have any doubt, please let me know that with your valuable comments.