জাহাজ শিল্পে মার খাচ্ছে চীন!
জাহাজ নির্মাণ শিল্পে মার খাচ্ছে বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ জাহাজ নির্মাতা দেশ চীন। করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে সামুদ্রিক বাণিজ্য হোঁচট খাওয়ায় কমে গেছে নতুন জাহাজের চাহিদা ও বেচাকেনা। ফলে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে হ্রাস পেয়েছে জাহাজ নির্মাণ। এমনকি জুলাই পর্যন্ত চলতি বছরের প্রথম সাত মাসে দেশটির জাহাজ শিল্পের তিনটি সূচকের সবগুলোই নিচে নেমে গেছে। চীনের উহান থেকে সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে মহামারী করোনাভাইরাস।
প্রাণঘাতী এ ভাইরাসের আতঙ্ক ও উত্তেজনার মধ্যেই বিশ্বব্যাপী নজর কেড়েছে চীনেরই একটি দুর্ঘটনার ছবি। বিভিন্ন গণমাধ্যমে ছাপা হওয়া ছবিটি হচ্ছে- ‘চীনা নৌবাহিনীর (পিএলএ-নেভি) কপ্টারবাহী সর্বাধুনিক টাইপ-০৭৫ এমফিবিয়াস শিপ মানে জল-স্থলে সমানতালে চলতে পারা যুদ্ধজাহাজ আগুনে জ্বলছে। সাংহাই ডকইয়ার্ডে থাকা এই রণতরী থেকে আকাশে ছড়িয়ে পড়েছে কালো ধোঁয়া।’ জাহাজ নির্মাণ শিল্পে বর্তমান বিশ্বে নেতৃত্বদানকারী দেশটির রণতরী থেকে আকাশ কালো করা ওই ধোঁয়া কি তবে ইঙ্গিত দিচ্ছে, ধোঁয়ায় ঢাকা পড়ছে চীনের এই শিল্প! নিজেদের গ্রহণযোগ্যতা হারাতে বসেছে ক্রেতা দেশগুলোর কাছে! চলতি বছর ১১ এপ্রিলের সকালে চীনা নেভির ওই রণতরীতে আগুন লাগে।
এই আগুন অবশ্য একটি বিতর্ক তৈরি করেছে, সেটি হচ্ছে চীনের ওই রণতরী তৈরির উপাদান কতটা মানসম্পন্ন ছিল, জাহাজ নির্মাণ সংশ্লিষ্টদের কাজ ও দক্ষতার মান কতটা ছিল, জাহাজের নিরাপত্তা মান কতটা বা ডকইয়ার্ডগুলোর কাজ আন্তর্জাতিকমানের কিনা ইত্যাদি। ১৯৯০ দশকে শুরু করে বিশ্বে জাহাজ নির্মাণ শিল্পে এখন নেতৃত্ব দিচ্ছে চীন। চীনের জাহাজ নির্মাণ শিল্প দেশটির বেসামরিক অর্থনীতি ও প্রতিরক্ষা শিল্পের মধ্যে একটি গভীর যোগসূত্রের দৃশ্যমান রূপ।
স্টকহোম ইন্টারন্যাশলনাল পিস রিসার্চ ইন্সটিটিউটের (এসআইপিআরআই) তথ্য অনুযায়ী, চীনের প্রচলিত অস্ত্র বিক্রি ২০০৮ সালে সাড়ে ৬৪ কোটি ডলার থেকে বেড়ে ২০১৮ সালে ১০৪ কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে।
এর মধ্যে দেশটির তৈরি ফ্রিগেট, সামুদ্রিক টহলযান, সাবমেরিন, যুদ্ধজাহাজসহ সামরিক সরঞ্জামের বড় ক্রেতা শ্রীলংকা, পাকিস্তান, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়াসহ এশিয়া ও আফ্রিকার বেশির ভাগ দেশ। চীনের ওই রণতরীতে ধোঁয়ার বিষয়টি পরিষ্কার না হলে এসব ক্রেতা দেশের কাছে ধোঁয়াশা তৈরি হবে। চীনের প্রতি তাদের বিশ্বাসযোগ্যতা কমে যাবে।
এরই মধ্যে অবশ্য করোনা-পরবর্তী পরিস্থিতিতে অনেক দেশ চীনের শিপইয়ার্ডগুলোর সঙ্গে তাদের ব্যবসা-চুক্তি বাতিল করেছে। চীনের শিল্প ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, প্রথম প্রান্তিকে চীনের শিপইয়ার্ডগুলো ৭৯.৫৫ মিলিয়ন ডেড ওয়েট টন অর্ডার পেয়েছে, যা আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ৫.৬ শতাংশ কম।
সূত্র : সিলন টুডে
No comments
If you have any doubt, please let me know that with your valuable comments.