Thursday, September 18.

সুপার-ঘূর্ণিঝড়-আম্পান!

প্রয়োজন না থাকলেও কিনুন, একটু লোকসান হোক না!

 image-432179-1623795035

বয়স ৭০ পেরিয়েছে অনেক আগেই। বিধবা নিঃসঙ্গ জীবন। চলতে ফিরতেও কষ্ট হয়। এই বয়সেও কারো কাছে হাত পাততে রাজি নন এই বৃদ্ধা।   কিন্তু খাওয়াবে কে? ছেলে-মেয়ে কেউ তো নেই। স্বামী মারা গেছেন সেই কবে! তাই বলে ভিক্ষার থালা হাতে নেননি তিনি।   
 
শাকসবজি,বাড়ির ফলমূলসহ বিভিন্ন জিনিস বাজারে বিক্রি করে জীবিকার নির্বাহ করে আসছেন।   এমন সংগ্রামী আত্মমর্যাদায় পূর্ণ বৃদ্ধার নাম রাধে রাণী।  লালমনিরহাট জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার মদাতি ইউনিয়নের চামটারহাট গ্রামের বাসিন্দা তিনি।   
 
জীবন-জীবিকার জন্য যখন যা সামর্থ্যে জুটে, তাই একাট্টা করে নিয়ে বাজারে মাটিতে বসে পড়েন রাধে রানী।  প্রতিদিনের মত গত সোমবারও স্থানীয় চামটারহাট বাজারে আম বিক্রি করতে আসেন রাধে রানী। আম বিক্রি করে যে অর্থ জমবে তা দিয়ে তরকারি, তেল, লবন ও সাবান কিনবেন। কখন বিক্রি হবে তার আম সে জন্য অপেক্ষা করছেন।  
 
বেলা যত গড়িয়ে যাচ্ছে পেটের ক্ষুধা ততোই বাড়ছে। আমগুলো টাকায় রূপান্তরিত হয়ে শাড়ির আঁচলে উঠেলেই আজকের দিন বাঁচেন তিনি। রান্নার উপকরণ কিনবেন, বাড়ি যাবেন, রাঁধবেন। তারপর পেটে দুমুঠো খাবার জুটবে।  
 
কিন্তু আমের এই ভরা মৌসুমে বৃদ্ধার দিকে কেউ তাকায় না। ব্যস্ত মানুষেরা পাশ কেটে চলে যাও। কেউ বা একটু দাঁড়ায়। আমগুলো নেড়ে দেখে। অতঃপর মুখ বাঁকিয়ে চলে যায়। কেউ বা দাম জিজ্ঞেস করে। কিন্তু মাটিতে পড়ে থাকা আমের দাম মনপুত হয় না তাদের। দামাদামি করে চলে যায়।  
 
বৃদ্ধার উৎকণ্ঠা দূর থেকেই দেখছিলেন স্থানীয় যুবক সাব্বির আহমেদ লাভলু। মায়া হয় তার। বৃদ্ধার কাছে গিয়ে আমের দাম জিজ্ঞেস করেন তিনি। যদিও এ মুহূর্তে আমের প্রয়োজন নেই বাড়িতে। আম সব কিনে নেন তিনি।  বৃদ্ধাও টাকা হাতে পেয়ে খুশি। কাঙ্ক্ষিতমূল্যে সবগুলো আম বিক্রি হয়ে যাওয়ায় খুশিতে চোখে পানি চলে এসেছে তার।

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে সাব্বির আহমেদ লাভলু  বলেন, ‘মাঝেমাঝে দেখতে পাই বিভিন্ন বাজারে বয়স্ক কিছু মানুষ কচুরলতি,কলা,আম, বাড়ির চাষের শাক-সবজি  বা সামান্য কিছু জিনিস নিয়ে বসে আছেন। যে বয়সে তাদের বিছানায় বিশ্রাম করার কথা সেই বয়সে বাজারে ক্রেতা ধরতে আসেন তারা। 
 
খুব খারাপ লাগে ভাবতে যে, বয়সের ভাড়ে নুয়ে পড়া এসব বৃদ্ধরা ঘন্টার পর ঘন্টা বসে থাকেন পণ্য বিক্রির আশায়। অনেকেই তাদের পণ্য কম দামে কেনার জন্য দামাদামি করে থাকেন। অথচ বড় বড় দোকানে আমরা তেমন দর কষাকষি করি না। আসুন এমন বিক্রেতা দেখলে প্রয়োজন না থাকলেও তাদের কাছে কিনি। যা দাম চাইবে তাই দিয়েই কিনি। একটু লোকসান হলে হোক না। আপনার হৃদয় শান্তি পাবে নিশ্চিত।’ 
 

সূত্রঃ যুগান্তর

No comments

If you have any doubt, please let me know that with your valuable comments.

পৃষ্ঠা

সর্বশেষ খবর

COVID-19 থেকে বাঁচার উপায় !

CovidUpdated1