কবুতরের ঔষধের মাসিক কোর্সঃ
হা এইটা বাধ্যতামূলক নয় , আপনি ভাল লাগলে করবেন না হলে নয় ?
******************
মাসিক কোর্স কেন প্রয়োজন ?????
অনেক সময় অনেক রোগের জীবানু শরীরে সুপ্ত অবস্থায় থাকে, এবং কবুতরকে ভিটামিন এর অভাব জনিত রোগ, ক্রিমি মুক্ত ও সঠিক দৈহিক বৃদ্ধি নিশ্চিত রাখতে মাসিক কোর্সের গুরুত্ব অনেক। নতুবা হটাত রোগের আক্রমনে অনেক বড় ক্ষতি হতে পারে আপনার ভালবাসার কবুতরের ।
*******************
আমরা লাখ টাকা খরচ করতে পারি
কিন্তু প্রতি মাসে ৫০০ টাকার ঔষধ কবুতরকে খাওয়াতে পারিনা ।
হ্যাঁ পারি কখন ???
যখন পুরা পাল মইরা শেষ ।
বেশী নয় এই ৪/৫ টা ওষুধ প্রতি মাসে ৫ দিন করে ,আমরা খাওয়ালে অন্তত মহামারি হবে নাহ ইনশাআল্লাহ ।
*******************
তারিখ অনুযায়ী যদি দিতে বা খাওয়াতে চাই ?????
আমরা একটি মাস ৩০ দিন হিসাবে
১ নং ১-৫ তারিখ পর্যন্ত ।
২ নং ও ৩ নং একসাথে ৬-১০ তারিখ পর্যন্ত।
৪ নং ১১-১৫ তারিখ পর্যন্ত ।
৫ নং ১৬-২০ তারিখ পর্যন্ত ।
৬ নং ২১-২৫ তারিখ পর্যন্ত ।
৭ নং এভিনেক্স ৬০-৯০ দিন পর পর যেকোনো ১-৫ দিন পর্যন্ত ।
**********************
১) HAMECO PH :
সালমোণেল্লার জন্য , চুনা পায়খাণা , সবুজ পায়খাণা , লোম ফুলিয়ে বসে থাকে, খাবার খায় নাহ , ঝিমায় , খাবার খায়ণাহ শুধু পানি খায় ।পানির মতো পাতলা পায়খানা ,বমি করে ।
এইটাই ৯০ %রোগের জনক ।
প্রতি লিটার পানিতে ২ মিলি hameaco PH মিশিয়ে ৫ দিন খাওয়ান । অনেক সময় পানি তিতা লাগায় কম খেতে চায় , তাই পানি পিপাসা লাগিয়ে বা দীর্ঘক্ষণ পানি না দিয়া অশুধ এর পানি দিন তখন পানি খাবে ।
কবুতর কম হলে অই পানি প্রতি কবুতরকে ১০ মিলি করে সিরিঞ্জ এ করে খাওয়ান ।
২) CALPLEX / CALCIUM :
ক্যালসিয়াম এর ঘাটতি পূরণ করবে ।
ভিটামিন ডি/ক্যাল্সিফেরল এর ঘাটতি: হাড় নরম ও বাঁকা হয়ে যায়, ক্যালসিয়াম এর শোষণ কমে যায় তাতে হাড়ের গঠন ও ডিম উৎপাদন ও তা দেওয়ার ক্ষমতা হ্রাস পায়। সমাধান ঃ ভিটামিন ডি ও মিনারেল প্রিমিক্স প্রদান, ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার প্রদান করতে হবে। ক্যালপ্লেক্স (এক্স ভেট জার্মান, স্কয়ার ফার্মা) ২ মিলি/১লিটার পানিতে মিশিয়ে অথবা ইএস-এডিই (স্কয়ার ফার্মা) ১মিলি/২লিটার পানির সাথা ৮ ঘন্টা হিসেবে খাওয়াতে পারেন।)
প্রতি লিটার পানিতে ২ মিলি মিশিয়ে ৫ দিন খাওয়ান ।
৩) PRITHI WS / B COM VIT -/THIAVIN / VITAMIN B1,B2,B6 :
ভিটামিন বি ১/ থায়ামিনঃ
ঘাড়ের পক্ষাঘাতের ফলে ঘাড় পেছন দিকে করে আকাশের দিকে মুখ করে থাকে, চলনে অসঙ্গতি পরিলক্ষিত হয়। পা, ডানা ও ঘাড়ে পক্ষাঘাত হয়। থায়ামিন টি সি এ সাইকেল এর এক টি গুরুত্ব পূর্ণ উপাদান যা কার্বোহাইড্রেট মেটাবলিজম ও শক্তি উৎপাদনে সহায়তা করে।
সমাধান ঃ
ভিটামিন বি ১ সমৃদ্ধ প্রিমিক্স ও মিনারেল প্রদান। প্রিথি ডাব্লিউ (স্কয়ার ফার্মা।)এস ১ গ্রাম/ ১ লিটার পানির সাথে মিশিয়ে ৮ ঘণ্টা হিসেবে খাওয়াতে পারেন।
ভিটামিন বি ২/ রাইবোফ্ল্যাভিনঃ ছানার পা পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়। পরে নখ বা আঙ্গুল বাঁকা হয়ে যায়। ছানার দৈহিক বৃদ্ধি ব্যাহত হয়।
সমাধানঃ ভিটামিন বি ২ সমৃদ্ধ প্রিমিক্স ও মিনারেল প্রদান করতে পারেন। প্রিথি ডাব্লিউ এস (স্কয়ার ফার্মা।) ১ গ্রাম/ ১ লিটার পানির সাথে মিশিয়ে ৮ ঘণ্টা হিসেবে খাওয়াতে পারেন।
ভিটামিন বি ৬/পাইরোডক্সিন: ছানার বৃদ্ধি ব্যাহত হয়, ক্ষুধামন্দ্যা দেখা দেয়, প্যারালাইসিস ও পেরোসিস হতে পারে। সমাধানঃ ভিটামিন বি ৬ সমৃদ্ধ প্রিমিক্স ও মিনারেল প্রদান করতে পারেন। প্রিথি ডাব্লিউ এস (স্কয়ার ফার্মা))১ গ্রাম/ ১ লিটার পানির সাথে মিশিয়ে ৮ ঘণ্টা হিসেবে খাওয়াতে পারেন।
৪) E SELL / VITAMIN E :
ভিটামিন ই/টোকোফেরল : ডিমের উর্বরতা কমে যায়। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস পায়। এনসেফালোম্যালাশিয়া রোগ হয়, পক্ষাঘাতের ফলে চলতে অসঙ্গতি দেখা দেয়। বুক ও পেটের নিচে তরল পদার্থ জমে, ইডিমা হয়। সমাধান ঃ সেলিনিয়ামসহ ভিটামিন ই প্রদান করতে হবে। ভিটামিন ই সমৃদ্ধ খাবার খাওয়াতে হবে। ই সেল পাউডার/লিকুইড (স্কয়ার ফার্মা) ১মিলি/১লিটার পানির সাথে মিশিয়ে ৮ ঘণ্টা হিসেবে খাওয়াতে পারেন।
৫) Rena WS / MULTI VITAMIN :
বিভিন্ন ভিটামিন এর ওভাব রোধ করবে ।
যেমন , বি ১ ,বি ২ ,এ্ ,সি ,কে , বি ৯ , বি ১২ ।
প্রতি লিটার এ ২ গ্রাম মিশিয়ে ৫ দিন খাওয়ান প্রতি মাসে ।
৬)হামদর্দ এর কারমিনা ঃ
হজম শক্তি বাড়ায় , রুচি বাড়ায় , খাবারে অনীহা কমায় ।
প্রতি লিটার পানিতে ২ মিলি ঔষধ দিয়ে ৫ দিন খাওয়ান ।
*****AVINEX -/ELCARIS/ POULNEX
কৃমির লক্ষণ ঔষধ খাওয়ানোর নিয়ম ঃ
ক্রিমির কিছু লক্ষন -
অনেক দিন ধরে পাতলা পায়খানা, বেশি পানি পান করা, ডানা ঝুলে যাওয়া, ওজন কমে গিয়ে বুকের হাড্ডি বের হয়ে আসা, চুপচাপ বসে থাকা শুধু খাওয়ার সময় উঠা, উতপাদন কম হয়া, ডিম না দেয়া, পায়াখানার সাথে ক্রিমি আসা বা পরা ।
১) কখন করাবেন কোর্স ঃ
ঠাণ্ডা আবহাওয়ায় , খালি পেটে করান ।
গরমের দিনে করালে খুব ভোরে বা অনেক রাতে যখন খাবার হজম হয়ে যায় , প্রয়োজনে অই দিন খাবার একটু আগে দেওয়া ভাল তাতে রাতে খাবার আগে হজম হবে ।
অবশ্যই সুস্থ কবুতরকে করাতে হবে ।
অথবা গরমের দিনে হাল্কা বৃষ্টি হচ্ছে এমন আবহাওয়ায় দেওয়া ভাল ।
একটানা ৩/৪ দিন বৃষ্টি হয় তখন না দেওয়া উচিৎ ।
২) দৈহিক ওজন অনুসারে ঔষধের পানির পরিমাপ নির্ণয়ঃ
কবুতরের আনুমানিক ওজন ২০০-৩০০ গ্রাম হলে ১০ মিলি ।
দৈহিক ওজন ৩০০-৫০০/৭০০ গ্রাম হলে ১৫-২০ মিলি করে খাওয়ান ।
৩) কি কি ঔষধ দিতে বা খাওয়াতে পারি ঃ
Elcaris vet (square )
Poulnex (Novartis )
Avinex ( Reneta )
৪) ঔষধ তৈরির নিয়মাবলি ও পরিমাপ ঃ
এভিনেক্স ১ লিটার পানিতে ২ গ্রাম ঔষধ মিশিয়ে অই পানি প্রতি কবুতরকে ঠাণ্ডা আবহাওয়ায় খালি পেটে ১০ মিলি করে সিরিঞ্জ দিয়ে খাইয়ে দিন ।
দৈহিক ওজন ৩০০-৫০০ গ্রাম হলে ১৫-২০ মিলি করে খাওয়ান ।
৫) কৃমির ঔষধ খাওয়ানোর পদ্ধতি ঃ
ঔষধ এর পানি দিয়ে রাখলে অনেক সময় অনেকে বেশি পানি খায় , অনেকে কম খায় , অনেকে খায়নাহ তাই ঝামেলা হয় ।
যেহেতু ৬০/৯০ দিন পর পর তাই একটু কষ্ট হলে ও ধরে সিরিঞ্জ দিয়ে খাওয়ানো ভাল ।
৬) কতক্ষন পর কি করতে হবে ঃ
ঔষধ খাওয়ানোর ৩ ঘণ্টা পর লিভার টনিক / লিভা ভিট বা লিভা টন বা হামদারদ এর ইকটার্ন দিনার ২ মিলি আর ইলেকট্রমিন স্যালাইন ২ গ্রাম করে ১ লিটার পানিতে মিক্স করে খেতে দিন । কৃমির ওষুধ দেওয়ার পর বমি করতে পারে । আল্লাহ্ ভরসা ভয় পাবেন নাহ । আর ওষুধ দেওয়ার ৫ ঘণ্টা পর খাবার দিন এর আগে না দেওয়া ভাল । আর অই দিন ৩/৫ ঘণ্টা পর কবুতরের খাঁচা , খাঁচার নিচের ময়লা , ট্রে পরিষ্কার করুন ।
আর লিভার টনিক ও স্যালাইন ওষুধ দেওয়ার দিন , আরও দুইদিন খাওয়ান ।
৭) এক কোর্স থেকে আরেক কোর্স এর মেয়াদ ঃ
৬০-৯০ দিনের মধ্যে একবার করে এই কোর্স করা ভাল ।
8) কাদের জন্য নিশেধ ঃ
২/১ দিনে ডিম দিবে বা ২/৭ দিনের বাচ্চা আছে এমন কবুতর বা অসুস্থ কবুতর কে এই কোর্স করা যাবে নাহ ।
৯)যারা বাদ পরবে তাদের কি করবেন ঃ
পরে তারা ডিম পাড়লে ৪/৫ দিন পর আর বাচ্চা ৮/১০ দিন বয়স হলে তাদের বাবা মা কে এবং অসুস্থ কবুতর সুস্থ হলে বা নতুন কবুতর কিণে আণলে কৃমির লক্ষণ থাকলে ,আলাদা করে ওষুধ খাইয়ে নিবেন ।
১০) কয়দিন দিবেন বা করাবেন ঃ
৬০-৯০ দিনে ১ দিন ১ বার/ ১ বেলা দিবেন কখনোই ২ দিন বা দুই বেলা দিবেন নাহ ।
বি ঃ দঃ
এইখানে যে কোম্পানির ঔষধ এর নাম দেওয়া হইছে তা আমি ব্যাবহার করি , কিন্তু আপনি যেকোনো কোম্পানির ঔষধ ব্যাবহার করতে পারেন ।
আমার লেখার উদ্দেশ্য হল আপনাকে একটা ধারণা দেওয়া ।
ওষুধ গূলো ব্যাবহার করে , রোদ থেকে দূরে , শুষ্ক আবহাওয়ায় রাখুন , বাতাস না ঢূকে এমন ভাবে রাখুন ভালো থাকবে ।
লিকুইড ঔষধ ফ্রিজ নরমাল এ রাখলে ও ভাল থাকে বলে জানি ।
আমার জানা খুব কম , যারা ভাল জানে তাদের পরামর্ষ নিয়ে চিকিৎসা করুন ।
তাদের সাথে আলোচনা না করে বা বিভিন্ন গ্রুপ এ পোস্ট না করে ,আমার পরামর্শে চিকিৎসা করবেন নাহ ।তারা সময় না পেলে ৭ দিন অপেক্ষা করুন । তবুও ভুল চিকিৎসা করবেননা , অথবা যাচাই করে চিকিৎসা করুন ।
সূত্র- Tarique Bin Shahid
No comments
If you have any doubt, please let me know that with your valuable comments.