মেইড ইন জিঞ্জিরা আলপিন থেকে হেলিকপ্টার
ইতিহাস অনুসন্ধানে জানা গেছে, ৬০-এর দশকের শেষদিকে জীবিকার সন্ধানে ফরিদপুর থেকে কিছু লোক এসে বসবাস শুরু করে বুড়িগঙ্গার তীর কেরানীগঞ্জে। ধীরে ধীরে এখানে যুক্ত হয় কুমিল্লা, চাঁদপুর, ফেনী এলাকার বিভিন্ন পেশাভিত্তিক উদ্যোক্তারা। কালপরিক্রমায় মুখরিত হয়ে উঠে এই জিঞ্জিরার খ্যাতি। বলা হয়ে থাকে আলপিন থেকে হেলিকপ্টার সবকিছু তৈরি হয় এই জিঞ্জিরায়। জিঞ্জিরা বলতেই নকলপ্রবণ একটি শিল্পকে বোঝানো হয়। বাস্তব সত্য হলো জিঞ্জিরা খ্যাত কেরানীগঞ্জে নকল আছে সত্যি।তবে এ কথা অস্বীকার করার সুযোগ নেই যে- বাংলাদেশকে ক্ষুদ্র যন্ত্রাংশ তৈরিতে সক্ষমতা এনে দিয়েছে এই জিঞ্জিরা। জিঞ্জিরার এসব শিল্পজাত পণ্য দেশের চাহিদা মিটিয়ে অর্থনীতির চাকা সচল রাখছে। কর্মসংস্থান হয়েছে লাখো মানুষের। শুধু কারিগরি জ্ঞান দিয়ে উৎপাদন করছেন নানা ধরনের ক্ষুদ্র যন্ত্রাংশ, সাশ্রয় হচ্ছে শত কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা। দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির আকাশ ছোঁয়া স্বপ্ন জিঞ্জিরার হালকা প্রকৌশল শিল্পের মাধ্যমেই পূরণ হতে পারে । সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা আর দেশীয় কারিগরদের দক্ষতাসহ আন্তরিক উদ্যম মিলিয়ে জিঞ্জিরা হয়ে উঠতে পারে বাংলাদেশের ভিতর অারেক চীন-জাপান। বর্তমানে জিঞ্জিরা কেন্দ্রিক এসব ক্ষুদ্র কারখানাগুলো থেকে বছরে অন্তত ২৫ হাজার কোটি টাকার পণ্য উৎপাদিত হচ্ছে। এখানে উৎপাদিত অনেক পণ্যই এখন দেশের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে। এক্ষেত্রে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা তো দূরে থাক উল্টো 'নকলবাজ' বা 'জালিয়াত' নামের দুর্নামের সিলমোহর মারা হচ্ছে এই 'ইঞ্জিনিয়ারদের' কপালে। অথচ সহযোগিতা দেওয়া গেলে এই জিঞ্জিরা হয়ে উঠতে পারে বাংলাদেশের ভিতর অারেক চীন-জাপান। রাজধানীঘেঁষা কেরানীগঞ্জের জিঞ্জিরা এলাকায় ছোট-বড় দুই হাজার কারখানা থাকলেও দেশ জুড়ে একই আদলের শিল্প-কারখানা গড়ে উঠেছে ৪০ হাজারেরও বেশি। বাংলাদেশ ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্প মালিক সমিতি (বাইশিমাস) সূত্রে জানা যায়, দুই হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগের হালকা প্রকৌশল শিল্পে বছরে টার্নওভার প্রায় ৩৫ হাজার কোটি টাকা। এ খাত থেকে সরকারের রাজস্ব আয় আড়াইশ কোটি টাকারও বেশি। এর সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে ৬ লাখ কর্মীসহ পরোক্ষভাবে জড়িয়ে আছে ৬০ লাখ লোকের ভাগ্য।
শুধু নকল নয় সৃষ্টিতে আছে অভিনবত্ব
বিশ্বাস করুন আর নাই বা করুন- কুড়িয়ে পাওয়া পরিত্যক্ত কাঁচামাল দিয়ে জিঞ্জিরার বেশিরভাগ কারখানায় তৈরি হচ্ছে দেশীয় পণ্য-রফতানি হচ্ছে বিদেশেও। জিঞ্জিরার কারিগরদের কাছে ভাঙা হাঁড়ি, কাঁচ, ছেঁড়া জুতা, বিনষ্ট করা বোতল-প্যাকেট কোন কিছুই ফেলনা থাকছে না। ব্যবহারের পর ফেলে দেয়া জিনিসপত্র, উচ্ছিষ্ট হাড়হাড্ডি নিপুণ দক্ষতায় তৈরি করছে তাক লাগানো জিনিসপত্তর। বাসাবাড়ির আঙিনা, ড্রেন-ডাস্টবিন থেকে সংগৃহীত প্লাস্টিক বোতল, জুতা-স্যান্ডেল, পাইপ, ভাঙা জগ, বালতি, গামলা কাটিং মেশিনে কেটে ক্র্যাসিং মেশিনে গলিয়ে রং ও রাসায়নিক পদার্থ মিশিয়ে প্লাস্টিক পণ্যসামগ্রী তৈরির কাঁচামাল হিসেবে ‘দানা’ তৈরি করে সরবরাহ এবং তা চীন, নেপাল ও মালয়েশিয়ায় রফতানি করা হচ্ছে। আধুনিক মেশিনের সাহায্যে লোহা, স্টিলসহ অন্যান্য ধাতবখ- গলিয়ে বানানো হচ্ছে দা, বঁটি, ছুরি হাঁড়ি-পাতিল, কড়াইসহ নানা পণ্য। তামা থেকে বানানো হচ্ছে বৈদ্যুতিক তার। ছেঁড়া-ফাটা পোশাকের অংশগুলো থেকে ক্র্যাসিং করে ঝুট তুলা তৈরি হচ্ছে। ভাঙ্গা কাঁচ দিয়ে তৈরি হচ্ছে হারিকেন চিমনি, বৈয়াম, বোতল আর প্রায় দুই শ’ মডেলের রেশমি কাঁচের চুরি, চুমকি, পুঁথি ইত্যাদি। বৈদ্যুতিক খুঁটি, বাসাবাড়ির ভেন্টিলেটরে বানানো পাখির বাসা থেকে তারখ- সংগ্রহ করে তৈরি হচ্ছে রকমারি শো-পিস। নারিকেলের খোল- ছোবড়া দিয়ে বিভিন্ন আকারের শোপিস, ফুলদানি, একতারা, সিগারেটের এ্যাস্ট্রে, শিশুর খেলনাসহ তৈরি হচ্ছে নানা রকম পণ্য। এখানে শুধু দেখে নিজের কল্পনা শক্তির উপর নির্ভর করে তৈরি করা হয় সামগ্রী। এসব স্ব-শিক্ষিত মেধাবি জনশক্তির কর্ম নিপুণতা দেখলে বিস্মিত না হয়ে উপায় নেই।
আবার নকল পন্য যে তৈরী হয় না তা নয়। যেমন- জিঞ্জিরার আগানগর, বাঁশপট্টি, থানাঘাট, ফেরিঘাট এলাকার বাসা বাড়িতে গোপনে গড়ে উঠেছে ছোট ছোট কারখানা, যেখানে ফ্লাঙ্, ওয়াটার হিটার, শ্যাম্পু, সাবান, আফটার শেভ লোশন, ত্বকে ব্যবহারের ক্রিমসহ বিদেশি জনপ্রিয় ব্র্যান্ডের নকল পণ্য তৈরি হয়।
জিঞ্জিরা শিল্প নিয়ে কথা হয় বাংলাদেশ শিল্প কারিগরি সহায়তা কেন্দ্রের (বিটাক) পরিচালক ড. ইহসানুল করিমের সঙ্গে। তিনি বলেন, জাপান, চীন, তাইওয়ান, দক্ষিণ কোরিয়ার মতো শিল্পোন্নত সব দেশই শুরুতে হালকা প্রকৌশল খাতে সমৃদ্ধি অর্জন করেছে। এ শিল্পকে এগিয়ে নিতে প্রতিবেশী ভারত ও পাকিস্তানে টাইম বাউন্ড ভিশন ডকুমেন্ট পর্যন্ত প্রণয়ন করা হয়েছে। অথচ বাংলাদেশে সমন্বিত উদ্যোগ না নেওয়ায় 'নকলবাজ' বা 'জালিয়াত' দুর্নামের সিলমোহরেই আটকে আছে জিঞ্জিরা শিল্পের আকাশ ছোঁয়া সম্ভাবনা। ড. ইহসানুল করিম বলেন, হালকা প্রকৌশল শিল্পকে এগিয়ে নিতে সরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিলে মাত্র ৫ বছরের মধ্যেই ৫০ লাখ তরুণের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে।
অাশাবাদ
শুধু নকল নয় সৃষ্টিতে আছে অভিনবত্ব
বিশ্বাস করুন আর নাই বা করুন- কুড়িয়ে পাওয়া পরিত্যক্ত কাঁচামাল দিয়ে জিঞ্জিরার বেশিরভাগ কারখানায় তৈরি হচ্ছে দেশীয় পণ্য-রফতানি হচ্ছে বিদেশেও। জিঞ্জিরার কারিগরদের কাছে ভাঙা হাঁড়ি, কাঁচ, ছেঁড়া জুতা, বিনষ্ট করা বোতল-প্যাকেট কোন কিছুই ফেলনা থাকছে না। ব্যবহারের পর ফেলে দেয়া জিনিসপত্র, উচ্ছিষ্ট হাড়হাড্ডি নিপুণ দক্ষতায় তৈরি করছে তাক লাগানো জিনিসপত্তর। বাসাবাড়ির আঙিনা, ড্রেন-ডাস্টবিন থেকে সংগৃহীত প্লাস্টিক বোতল, জুতা-স্যান্ডেল, পাইপ, ভাঙা জগ, বালতি, গামলা কাটিং মেশিনে কেটে ক্র্যাসিং মেশিনে গলিয়ে রং ও রাসায়নিক পদার্থ মিশিয়ে প্লাস্টিক পণ্যসামগ্রী তৈরির কাঁচামাল হিসেবে ‘দানা’ তৈরি করে সরবরাহ এবং তা চীন, নেপাল ও মালয়েশিয়ায় রফতানি করা হচ্ছে। আধুনিক মেশিনের সাহায্যে লোহা, স্টিলসহ অন্যান্য ধাতবখ- গলিয়ে বানানো হচ্ছে দা, বঁটি, ছুরি হাঁড়ি-পাতিল, কড়াইসহ নানা পণ্য। তামা থেকে বানানো হচ্ছে বৈদ্যুতিক তার। ছেঁড়া-ফাটা পোশাকের অংশগুলো থেকে ক্র্যাসিং করে ঝুট তুলা তৈরি হচ্ছে। ভাঙ্গা কাঁচ দিয়ে তৈরি হচ্ছে হারিকেন চিমনি, বৈয়াম, বোতল আর প্রায় দুই শ’ মডেলের রেশমি কাঁচের চুরি, চুমকি, পুঁথি ইত্যাদি। বৈদ্যুতিক খুঁটি, বাসাবাড়ির ভেন্টিলেটরে বানানো পাখির বাসা থেকে তারখ- সংগ্রহ করে তৈরি হচ্ছে রকমারি শো-পিস। নারিকেলের খোল- ছোবড়া দিয়ে বিভিন্ন আকারের শোপিস, ফুলদানি, একতারা, সিগারেটের এ্যাস্ট্রে, শিশুর খেলনাসহ তৈরি হচ্ছে নানা রকম পণ্য। এখানে শুধু দেখে নিজের কল্পনা শক্তির উপর নির্ভর করে তৈরি করা হয় সামগ্রী। এসব স্ব-শিক্ষিত মেধাবি জনশক্তির কর্ম নিপুণতা দেখলে বিস্মিত না হয়ে উপায় নেই।
অর্থনীতিতে নীরব ভূমিকায় জিঞ্জিরা
জাতীয় অর্থনীতিতে এই জিঞ্জিরার অবদান অনস্বীকার্য। কেরানীগঞ্জ শিল্প ও ব্যবসা বাণিজ্যের কেন্দ্র হিসেবে ব্যাপক পরিচিত। কেরানীগঞ্জের জিঞ্জিরা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় ৬-৭ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে গড়ে উঠেছে হালকা ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্প। তাওয়াপট্টি, টিনপট্টি, আগানগর, বাঁশপট্টি, কাঠপট্টি, থানাঘাট, ফেরিঘাট এলাকার বাসাবাড়ি ভাড়া নিয়ে বিস্তৃতি ঘটেছে দুই সহস্রাধিক ক্ষুদ্র ও হালকা শিল্পের। ফ্লাক্স থেকে মোবাইল ফোন পর্যন্ত সবকিছুই তৈরি হচ্ছে জিঞ্জিরায়। অনুসন্ধানে জানা গেছে, একটি পাওয়ার প্রেস ভারত থেকে আমদানি করতে প্রয়োজন হয় ৭ থেকে ৮ লাখ টাকা। অথচ এই জিঞ্জিরায় দেশীয় প্রযুক্তিতে যে পাওয়ার প্রেস তৈরি করা হয় তার দাম পড়ে সর্বোচ্চ ১ লাখ টাকা। জিঞ্জিরায় এখন তৈরি হয় উন্নত মানের সামগ্রী। এখানকার উৎপাদিত পণ্য দেশীয় চাহিদা পূরণ করে রফতানি হয় পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা ও মিয়ানমারে। জিঞ্জিরাকে অনুসরণ করে দেশজুড়ে এ রকম শিল্প-কারখানা গড়ে উঠেছে ৪০ হাজারেরও বেশি। বাংলাদেশ ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্প মালিক সমিতি (বাইশিমাস) সূত্র জানায়, দুই হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগের হাল্কা প্রকৌশল শিল্পে বছরে টার্নওভার ৩০ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। এ খাত থেকে সরকারের রাজস্ব আয় আড়াইশ কোটি টাকারও ওপরে। এর সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে ছয় লাখ কর্মীসহ পরোক্ষভাবে জড়িয়ে আছে ৬০ লাখ লোকের ভাগ্য।
অসম্ভবকে সম্ভব করে জিঞ্জিরা
অসম্ভবকে সম্ভব করছে জিঞ্জিরার দক্ষ কারিগররা- যাদের নেই কোন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা, নেই কোন প্রশিক্ষণ। এখানে তৈরি হয় পুলিশ ও সেনাবাহিনীর ব্যাজ, হার্ডওয়্যার সামগ্রী থেকে প্রসাধনী সামগ্রী, কলম, মোমসহ হাজারো আইটেম। কেরানীগঞ্জের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প কারখানায় কর্মরত শ্রমিকরা অত্যন্ত দক্ষ। স্থানীয়ভাবে ‘ইঞ্জিনিয়ার’ নামে খ্যাত লেখাপড়া না জানা কারিগররা বিখ্যাত সব কোম্পানির মালামাল তৈরি করছেন। জনশ্রুতি হলেও বাস্তব সত্যি হলো পৃথিবীর যে কোন পণ্য-যন্ত্রাংশ একবার দেখলেই তা জিঞ্জিরার ইঞ্জিনিয়াররা হুবহু বানিয়ে দিতে পারেন। এসব কারখানায় শ্যালো মেশিনের লাইনার, পিস্টন, নজেল, পাম্প, টিউবওয়েল, ট্রলি, ধান ভাঙা ও মাড়াই, আখ মাড়াইয়ের যন্ত্র, মোবাইল ফোনের ক্যাসিং, ব্যাটারি, চার্জারসহ নানা পার্টস, লেদ মেশিন, হস্তচালিত নলকূপ, চিনিকলের পিনিয়াম, ওসাকনি প্লেট, জুট মিলের স্ট্যান্ড, ব্র্যাকেট, হ্যাদার, টেক্সটাইল মিলের প্লেট, হুইল, সিমেন্ট কারখানার মিডিয়া বল, বাস-ট্রাকের গিয়ারবক্স, লাইনার দোলনা, পাথরভাঙা মেশিনের চাকা, পুলি, বেবি-ট্যাক্সির ড্রাম, পুলি, লাইনার, হাউসিং ড্রাম, হপস, জগ, প্রেসার প্লেট এবং রিক্সা-সাইকেলের সব যন্ত্রাংশ, হোফার মেশিন, সেফার মেশিন, লেদ মেশিন, ড্রিল ও গ্রেননিং মেশিনসহ আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতি পুরোপুরি দেশী প্রযুক্তিতে প্রায় অর্ধেক দামে প্রস্তুত হচ্ছে আমাদের জিঞ্জিরায়। তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায়, একটি ক্রিম সেপারেশন মেশিন চীন ও কোরিয়া থেকে আমদানি করতে খরচ পড়ে ৬০-৭০ হাজার টাকা। অথচ জিঞ্জিরায় দেশী প্রযুক্তিতে প্রস্তুতকৃত এই মেশিনটির দাম পরে মাত্র ৩০ হাজার টাকা।
অবারিত হোক সম্ভাবনার দুয়ার
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, কিছুদিন আগেও চীন, জাপান, কোরিয়াসহ বিভিন্ন দেশের যন্ত্রাংশের একচেটিয়া দখল ছিল বাংলাদেশের বাজার। অল্প দিনের মধ্যেই জিঞ্জিরায় তৈরি যন্ত্রাংশ সেই স্থান পূরণ করে চলছে। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই সরকারি অনুমোদন না পাওয়ার কারণে নিজেদের তৈরি মূল্যবান সব যন্ত্র-সরঞ্জামাদির গায়েও মেড ইন চীন, জাপান, কোরিয়াসহ বিভিন্ন দেশের নামে সিলমোহর মেরে তা বাজারজাতে বাধ্য হন তারা। সরকারের সহযোগিতা পেলে হয়তো অদূর ভবিষ্যতে এখানেই খুব অল্প খরচে প্লেন- হেলিকপ্টার থেকে শুরু করে মিসাইল, রকেট ও স্যাটেলাইটের যন্ত্রাংশও তৈরী করা সম্ভর হবে।আবার নকল পন্য যে তৈরী হয় না তা নয়। যেমন- জিঞ্জিরার আগানগর, বাঁশপট্টি, থানাঘাট, ফেরিঘাট এলাকার বাসা বাড়িতে গোপনে গড়ে উঠেছে ছোট ছোট কারখানা, যেখানে ফ্লাঙ্, ওয়াটার হিটার, শ্যাম্পু, সাবান, আফটার শেভ লোশন, ত্বকে ব্যবহারের ক্রিমসহ বিদেশি জনপ্রিয় ব্র্যান্ডের নকল পণ্য তৈরি হয়।
জিঞ্জিরা শিল্প নিয়ে কথা হয় বাংলাদেশ শিল্প কারিগরি সহায়তা কেন্দ্রের (বিটাক) পরিচালক ড. ইহসানুল করিমের সঙ্গে। তিনি বলেন, জাপান, চীন, তাইওয়ান, দক্ষিণ কোরিয়ার মতো শিল্পোন্নত সব দেশই শুরুতে হালকা প্রকৌশল খাতে সমৃদ্ধি অর্জন করেছে। এ শিল্পকে এগিয়ে নিতে প্রতিবেশী ভারত ও পাকিস্তানে টাইম বাউন্ড ভিশন ডকুমেন্ট পর্যন্ত প্রণয়ন করা হয়েছে। অথচ বাংলাদেশে সমন্বিত উদ্যোগ না নেওয়ায় 'নকলবাজ' বা 'জালিয়াত' দুর্নামের সিলমোহরেই আটকে আছে জিঞ্জিরা শিল্পের আকাশ ছোঁয়া সম্ভাবনা। ড. ইহসানুল করিম বলেন, হালকা প্রকৌশল শিল্পকে এগিয়ে নিতে সরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিলে মাত্র ৫ বছরের মধ্যেই ৫০ লাখ তরুণের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে।
অাশাবাদ
তাই আমাদের সকলের অাশা, অনুরোধ ও দাবি যে, বাংলাদেশ সরকার খুব দ্রুত একটি পদক্ষেপ নিবে ও জিঞ্জিরার এই হালকা প্রকৌশল শিল্পের প্রতি সুনজর দিয়ে একে একটি বিশেষ খাত হিসেবে বিবেচনা করে সরকারের রাজস্ব বাড়ানোর সাথে সাথে বহু বেকার যুবকের কর্মস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করবে।
No comments
If you have any doubt, please let me know that with your valuable comments.