সুপার-ঘূর্ণিঝড়-আম্পান!

  • ব্রেকিং নিউস

    গেইল ছাড়াই রংপুরের দুর্দান্ত জয়

    সংক্ষিপ্ত স্কোর
    সিলেট সিক্সার্স : ১২৭/৮ (২০ ওভার), কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস : ১৩০/৬ (১৯.৫ ওভার)
    রংপুর রাইডার্স : ১৬৯/৩ (২০ ওভার), খুলনা টাইটানস : ১৬১/৫ (২০ ওভার)
    গেইল ছাড়াই রংপুরের জয়

    বিস্তারিতঃ
    ক্রিস গেইল একাদশে নেই! এই খবরটা যেন রংপুর রাইডার্সের চেয়েও বড় ধাক্কা ক্রিকেটামোদীদের জন্য। ক্লান্তির কারণে প্রথম ম্যাচে খেলতে পারেননি। দ্বিতীয় ম্যাচেও গতকাল ছিলেন না টি-২০ সম্রাট!
    তবে মাঠেও এসেছিলেন। কিন্তু ড্রেসিংরুমে বসেই উপভোগ করলেন রংপুর রাইডার্সের জয়। রোমাঞ্চকর ম্যাচে গতকাল খুলনাকে ৮ রানে হারায় মাশরাফিরা।
    ম্যাচের শেষ দিকে তৈরি হয়েছিল নাটকীয় পরিস্থিতি। জয়ের জন্য শেষ ওভারে খুলনার দরকার ছিল ২০ রান। জয়ের পাল্লা রংপুরের দিকে ঝুঁকে পড়লেও উইকেটে কার্লোস ব্রাথওয়েট ছিলেন বলেই আত্মবিশ্বাসী ছিল খুলনা। কেননা এই ক্যারিবীয় মারকুটে ব্যাটসম্যান ২০১৬ সালে টি-২০ বিশ্বকাপের ফাইনালে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ম্যাচে শেষ ওভারে টানা চার ছক্কা হাঁকিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে জিতিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু গতকাল পারলেন না।
     শেষ ওভারে গতকাল ক্যাপ্টেন মাশরাফি বল তুলে দিয়েছিলেন অভিজ্ঞ ফরহাদ রেজার হাতে। প্রথম বলে চার। দ্বিতীয় বলে দুই। তৃতীয় বলে ক্যাচ মিস করেন স্বয়ং মাশরাফি। তারপরও হয়নি। পরের তিন বলেই হয় সিঙ্গেলস। হেরে যায় খুলনা। টি-২০র ‘ভয়ঙ্কর’ ব্যাটসম্যান প্রোটিয়া তারকা এবি ডি ভিলিয়ার্স খেলবেন প্রথম ছয় ম্যাচ পর। তাই গেইলকে নিয়েই ছিল রংপুরের পরিকল্পনা। কিন্তু প্রথম দুই ম্যাচে ক্যারিবীয় তারকা না থাকায় রাইডার্সের ব্যাটিং লাইনআপের শক্তিমত্তা কিছুটা কম ছিল। প্রথম ম্যাচে  তো ১০০ রানও হয়নি। তবে গেইল না থাকলেও গতকাল রাইডার্সের জার্সিতে বাইশগজে ঝড় তুলেছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার রিলে রুশো ও ইংলিশ তারকা রবি বোপারা। ওপেনিংয়ে নেমে ৫২ বলে অপরাজিত ৭৬ রানের ইনিংস খেলেছেন রুশো। তার ইনিংসে ছিল দুই ছক্কার সঙ্গে আটটি দৃষ্টিনন্দন বাউন্ডারির মার। বোপারা ২৯ বলে খেলেছেন ৪০ রানের হার না মানা ইনিংস। এক ছক্কার সঙ্গে তিনটি বাউন্ডারি। আগের দিনও ৪৪ রান করেছিলেন এই ইংলিশ তারকা।
    চতুর্থ উইকেট জুটিতে রুশো-বোপারা মিলে ৬১ বলে করেছেন ১০৪ রান। এই জুটিই রংপুর রাইডার্সকে এনে দেয় ১৬৯ রানের লড়াকু স্কোর। গতকাল প্রথম ১০ ওভারে সুবিধা করতে পারেনি রংপুর। তিন উইকেট হারিয়ে করেছিল ৬৫ রান। ওপেনার মেহেদী মারুফ ১৩ বলে মাত্র ৫ রান করে আউট হয়েছেন। পাওয়ার প্লের সুবিধাটা যথাযথভাবে নিতে পারেনি রাইডার্স। তবে দ্বিতীয় উইকেটে দারুণ শুরু করেছিলেন অ্যালেক্স হেলস। কিন্তু বাইশগজে স্থায়ী হতে পারেননি। একটি করে ছক্কা-চারে ৯ বলে ১৫ রান করে আউট হয়ে যায়। থিতু হতে পারেননি  মোহাম্মদ মিথুন। তিনিও ১৭ বলে ১৯ রান করে  ড্রেসিং রুমের পথ ধরেন। এরপর রুশো-বোপারা জুটির ক্যারিশমা।
    রংপুরের দেওয়া ১৭০ রানের টার্গেটটা খুলনা টাইটান্সের জন্য সহজ হয়ে গিয়েছিল পল স্টার্লিং ও জুনায়েদ সিদ্দিকের ৯০ রানের উদ্বোধনী জুটির পর। কিন্তু দ্রুত তিন উইকেট হারিয়ে উল্টো বিপদে পড়ে যায় টাইটান্স। খুলনার মারকুটে ব্যাটসম্যান স্টার্লিংকে থামিয়ে দেন ক্যাপ্টেন মাশরাফি। নিজের তৃতীয় ওভারের প্রথম বলেই আইরিশ তারকাকে সরাসরি  বোল্ড করেন। অবশ্য তার আগেই হাফ সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন স্টার্লিং। তিনি আউট হয়েছেন ৪৬ বলে ৬১ রানের ইনিংস খেলে। স্টার্লিংয়ের ইনিংসে ছিল এক ছক্কার সঙ্গে আটটি বাউন্ডারি। 
    পাওয়ার প্লেতে রংপুরের পেসার শফিউল ইসলামের ওপর চড়াও হয়েছিলেন খুলনার দুই ওপেনার। তিন বাউন্ডারি ও এক ছক্কায় ওভার থেকে আসে ১৯ রান। এরপরও মাশরাফির ক্যারিশম্যাটিক নেতৃত্বে জিতে যায় রংপুর।
    এবারের বিপিএলে চমক দেখাচ্ছে মিরপুর শেরেবাংলা  স্টেডিয়ামের উইকেট। দিনে  লো-স্কোরিং কিন্তু রাতে রান-বন্যা! প্রথম ম্যাচে কুমিল্লাকে মাত্র ১২৮ রানের টার্গেট দিয়েও লড়াই জমিয়ে তুলেছিল সিলেট সিক্সার্স। শেষ পর্যন্ত পাকিস্তানি অলরাউন্ডার শহীদ আফ্রিদির ঝড়ো ব্যাটিংয়ে এক বল হাতে রেখে জয় ভিক্টোরিয়ান্স।
    বিপিএলে উদ্বোধনী দিনে প্রথম ম্যাচটিও ছিল লো-স্কোরিং। ওই ম্যাচে প্রথমে ব্যাটিং করে মাত্র ৯৮ রান করেছিল রংপুর রাইডার্স। ছোট্ট টার্গেটে পৌঁছাতেও ঘাম ছুটে গিয়েছিল চিটাগাং ভাইকিংসের। একই উইকেটে দ্বিতীয় ম্যাচেই ঠিকই ঢাকা ডায়নামাইটস করেছিল ১৮৯ রান।
    গতকালও একই অবস্থা। দিনের বেলায় লো-স্কোরিং ম্যাচের পর সেই একই উইকেটে রংপুর রাইডার্সের ১৬৯ রানের জবাবে খুলনা করে ১৬১ রান।
    মিরপুরের উইকেটের রহস্য সম্পর্কে ভিক্টোরিয়ান  কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দীনের ভাষ্য, ‘ইতিহাস বলে এই সময়ে মিরপুরে লো-স্কোরিং ম্যাচ হবেই। যেহেতু পিচটা কালো মাটিতে করা। তা ছাড়া এখন শীতকাল, প্রতিদিন খেলা হচ্ছে, কিউরেটরদের জন্য ডিফিকাল্ট ভালো উইকেট বানানো। আবার রাতের বেলা পানি দিয়ে উইকেটটা তৈরি করতে হয়ে, একটু ডিফিকাল্ট। আমরাও আশা করি না ভালো উইকেট হবে। সবসময়  লো-স্কোরিং ম্যাচ হবে। রাতের বেলা কুয়াশা পড়ে হালকা হয়, এই কারণে রানটা বেশি হয়। দিনের  বেলা রান কম হবে। দেখতে মনে হবে উইকেট ভালো। কিন্তু ব্যাটসম্যানদের জন্য কঠিন।’
    তবে উইকেটে যত রহস্যই লুকিয়ে থাকুক না কেন,  শেষ পর্যন্ত জয় নিয়ে মাঠ ছাড়তে পেরেই খুশি রাইডার্স দলপতি মাশরাফি।

    No comments

    If you have any doubt, please let me know that with your valuable comments.

    পৃষ্ঠা

    সর্বশেষ খবর

    COVID-19 থেকে বাঁচার উপায় !