মধ্যপ্রাচ্যের নেতৃত্ব নিতে চায় চীন?
মধ্যপ্রাচ্যে চীন কূটনৈতিকভাবে সু-কৌশলে তার আধিপত্য বিস্তার করছে। দেশটি আবর দেশগুলোর সঙ্গে সমভাবে ব্যবসা-বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে। সম্প্রতি কাতারের সঙ্গে গ্যাসের চুক্তি করেছে। এতে দেশিটি কাতার থেকে ৬ লাখ টন গ্যাস আমদানি করবে। এ ছাড়া সৌদি আরবের সঙ্গে রয়েছে নিবিড় সম্পর্ক। ২০১৭ সালে সৌদির রাজা সালমান চীন সফর করেছেন। চীন ইরান ও ইসরাইলের সঙ্গে তার সম্পর্ক টিকিয়ে রাখছে। বিশ্লেষকদের ধারণা আগামীতে ভূ-মধ্যসাগরীয় আরব দেশগুলোতে চীন তার কূটনৈতিক অবস্থানের দিকে জোর দিয়েছে। তারা মধ্যপ্রাচ্যের ব্যবসা-বাণিজ্যের নিয়ন্ত্রণ নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। যদিও চীন বলছে তারা মধ্যপ্রাচ্যের শান্তি চায়। তবে এ নিয়ে জোরদার কোনো ভূমিকা রাখছে না।
কাতারের সঙ্গে সৌদি জোটের বিরোধ থাকলেও কাতারের সঙ্গে একচেটিয়া ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়া সৌদির সঙ্গেও ভালো সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে দেশটির সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করছে।২০১৭ সাল থেকে কাতারের সঙ্গে সৌদি আরব, আরব আমিরাত, বাহরাইন এবং ইথিওপিয়া কূটনৈতিক, বাণিজ্যিক ও পরিবহন সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করে। সৌদি আরবের আঞ্চলিক শত্রু ইরানের সঙ্গে সন্ত্রাসবাদের সমর্থন ও সম্পর্ক গড়ে তোলার অভিযোগ আনা হয়েছে কাতারের বিরুদ্ধে। কাতার এটি অস্বীকার করে আসছে।২০১৮ সালের মাঝামাঝি কাতারের সঙ্গে তুরস্কের সম্পর্ক জোরদার হয়। এ ক্ষেত্রে দুই দেশ গত বছর একে অন্যকে বাণিজ্যিকভাবে সহযোগিতা করে আসছে।এদিকে বৃহস্পতিবার চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং গ্যাসসমৃদ্ধ দেশ কাতারকে মধ্যপ্রাচ্যে বিরোধ নিষ্পত্তির আহ্বান জানিয়েছেন। এদিকে কাতার বেইজিংয়ের এমন আমন্ত্রণে স্বাগত জানিয়েছে। এ খবর জানিয়েছে, তুরস্কভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ইয়েনি শাফাক।
চীনের রাষ্ট্রীয় টিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বেইজিংয়ের গ্রেট হলে চীনা জনগণের উদ্দেশে দেয়া এক ভাষণে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বলেন, ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে আঞ্চলিক সাহায্য-সহযোগিতা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এ সময় কাতারপ্রধান শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি উপস্থিত ছিলেন।চীন প্রেসিডেন্ট বলেন, ভূমধ্যসাগরীয় আরব দেশগুলোতে বিরোধ ও অসঙ্গতি যা রাজনীতিক এবং কূটনৈতিক বোঝায় তা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করতে চীন সবধরনের সহযোগিতা করবে।জিনপিং বলেন, চীন সবসময় গঠনমূলক ভুমিকা পালন করবে উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদ দেশগুলোকে। তবে সরাসরি কীভাবে উপসাগরীয় দেশগুলোকে সহযোগিতা করবে তা উল্লেখ করেনি।এ সময় রাষ্ট্রীয় টিভির ওই প্রতিবেদকের সামনে থানিকে চীনের প্রেসিডেন্ট বলেন, পুরনো বন্ধু ভালো বন্ধু।আল থানি শিকে ব্যক্তিগত এমন সম্পর্কের জন্য তিনিও খুশি জানিয়ে বলেন, আমরা চীনে বড় বিনিয়োগের জন্য প্রস্তুত, অবকাঠামোগত বা অন্য যে কোনো ক্ষেত্রে আমরা আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখি।তিনি বলেন, অদূর ভবিষ্যতে আমরা চীনকে তরল গ্যাস সরবরাহ করতে প্রস্তুত আছি। আমি চীনে ওপর অনেক খুশি।
গত অক্টোবরে কাতারের জ্বালানি মন্ত্রণালয় চীনের সঙ্গে ৬ লাখ টন তরল গ্যাস সরবরাহের চুক্তি করেছে।জানুয়ারির শুরুর দিকে, রাষ্ট্রমালিকানাধীন কাতার এয়ারওয়েজ জানিয়েছে, চীনা বাজারে প্রবেশাধিকার পেতে চীনের সাউদার্ন এয়ারলাইন্সের ৫ শতাংশ শেয়ার অর্জন করেছে।মধ্যপ্রাচ্যে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করার আহ্বান জানিয়ে চীন বেশির ভাগ বিরোধ নিষ্পত্তির বাইরে থেকেছে।চীন বাণিজ্যিকভাবে মধ্যপ্রাচ্যে তার ভূমিকা পরিচালনা করছে। ওই অঞ্চলের তেলের জন্য তার কূটনীতি অব্যাহত আছে। চীন চেষ্টা করছে আরব অঞ্চলে তার অবস্থান সৃষ্টির জন্য। এদিকে গত বছর সৌদি রাজা সালমান বেইজিং সফর করেছিল।চীন মধ্যপ্রাচ্যে সুন্দর কূটনৈতিক ভূমিকা নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে। এ ছাড়া চীনের ইরান ও ইসরাইলের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রয়েছে।
No comments
If you have any doubt, please let me know that with your valuable comments.