‘পয়সা থাকলেও খাবেন, না থাকলেও খাবেন’
হোটেলের নাম ‘গরিবে নেওয়াজ’। মূলত দরিদ্রদের জন্যই খাবারের এ দোকানটি দিয়েছেন আব্দুর রশিদ সরদার। সেজন্য হোটেলটির পাশে ঝুলছে একটি সাইনবোর্ডও।সেখানে লেখা রয়েছে যে কথাটি - ‘তেল মাথায় দেন, গামছা নেন, গোসল করেন, ভাত খান, পয়সা থাকলেও খাবেন, না থাকলেও খাবেন।’
সাতক্ষীরা সদরের বাঁকাল এলাকায় সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সংলগ্ন এই হোটেলটি।প্রতিদিন হাজারো মানুষ চিকিৎসার উদ্দেশ্যে আনাগোনা হয় হাসপাতালে।দুদর্শাগ্রস্থ সেসব মানুষের হাহাকার আবদুর রশীদের হৃদয়ে নাড়া দেয়।সেজন্য হাসপাতালের গেটের কাছেই তিনি এই ‘গরিবে নেওয়াজ’ হোটেল খুলেছেন।অভাব ও বিপদে থাকা মানুষদের বিনামূল্যে খাওয়ান তিনি তার ওই হোটেলে।
এ বিষয়ে আব্দুর রশিদ বলেন, কেউ যদি বলেন টাকা নাই তাহলে তাকে বিনামূল্যে খাওয়াই।হাসপাতালে আসা রোগী ও রোগীর স্বজনদেরকে তিনি বিপদগ্রস্ত বলে মনে করেন।আর বিপদগ্রস্তদের নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী সাহায্য করতে আগ্রহী বলে জানান আব্দুর রশিদ।সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার কুলিয়া ইউনিয়নের চরবালিথা গ্রামের বাসিন্দা আব্দুর রশিদ সরদার।তবে স্ত্রী ফজিলা খাতুন ও ছেলে সাগরকে নিয়ে বর্তমানে ওই হোটেলেই থাকেন।এ বিষয়ে স্থানীয়রা জানান, ছয় বছর এখানে ভ্যানে করে খাবার বিক্রি করতেন আব্দুর রশিদ। তখন থেকেই এমন বদান্যতার কারণে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন তিনি।
গত তিন বছর আগে তিনি ‘গরিবে নেওয়াজ’ হোটেলটি খোলেন। তবে স্বভাবে বদলাননি তিনি।সেই প্রথম দিকের ভ্যানে ভাত বিক্রেতার মতোই গরিবদের সাহায্যে এগিয়ে আসছেন।সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অনেক কর্মীরা আব্দুর রশিদের হোটেলে খেতে আসেন জানিয়ে হাসপাতালের জুনিয়র মেকানিক মিজানুর রহমান বলেন, চাচা দূর থেকে আসা মানুষদের অনেক উপকার করেন। কেউ তার কাছে এসে বিপদের কথা জানালে তিনি তাকে বিনামূল্যে খাওয়ান।আবদুর রশিদ বলেন, গরিব মানুষ বলতেই অসহায়। আর গরিব রোগী যে কতোটা অসহায় তা আমি রোজই এই মেডিকেলের গেটে বসে দেখতে পাই।এসব দুস্থ, অসহায়দের জন্য এই হোটেল খুলেছেন বলে জানান তিনি।
No comments
If you have any doubt, please let me know that with your valuable comments.