সুপার-ঘূর্ণিঝড়-আম্পান!

  • ব্রেকিং নিউস

    কালিম পাখি, কায়িম পাখি, সুন্দরী পাখি, কাম পাখি, বুরি পাখি (Purple Swamphen)!

    3ac83c1187e1a60baa6c4abb73bb4e02-5ae5dd5f774a9

    কালিম পাখির ইংরেজি নাম Purple Swamp Hen. বাংলা অর্থ দাড়ায় বেগুনি কাদার মুরগি। বাংলায় এর অনেকগুলো নাম: কালিম পাখি, কালেম পাখি, কায়িম পাখিকামিয়া পাখি, কাম পাখি, কায়েম পাখি, করমা পাখি, সুন্দরী পাখি (হাওর অঞ্চলে), বুরি পাখি ইত্যাদি।কালেম বা কালিম পাখি হল জলাভূমির পাখি। তবে এরা জল-ডাঙা উভয় স্থানে বিচরণ করে। কালিম পাখি খুবই দুঃসাহসী, লড়াকু ও মারকুটে স্বভাবের। এ পাখির আরও একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য আছে। পোষ মানলে কালিম পাখি আর উড়ে যায় না।

    কালিম এর মাথা ফিকে, ডানা সবুজ দীপ্তিময়। লেজের অংশ কালো পালকে ঢাকা। লেজতল-ঢাকনি সাদা। এছাড়া দেহের সর্বত্র রঙ নীলচে বেগুনি। ঠোঁটের গোড়া থেকে পেছন পর্যন্ত লাল বর্ম বা মুকুট রয়েছে। সাধারণত স্ত্রী পাখির বর্ম পুরুষ পাখির বর্ম থেকে ছোট হয়। স্ত্রী ও পুরুষ উভয়েরই চোখ রক্ত-লাল। ঠোঁট টকটকে লাল, ঠোঁটের আগা ফিকে। পা দীর্ঘ, শক্ত ও লাল। পায়ের সন্ধি বাদামি। অপ্রাপ্তবয়স্ক পাখির দেহ অনুজ্জ্বল; গলা ফিকে। মুখ, ঘাড়ের উপরিভাগ ও বুকে ধূসর আমেজ থাকে। ঠোঁট, পা ও পায়ের পাতা অনুজ্জ্বল লাল।নাদুসনুদুস স্বাস্থ্যবান এই পাখিরা সব সময় যেমন সতর্ক থাকে, তেমনি যেন রেগেও থাকে। শিকারিদের বন্দুকের গুলি যদি পায়ে লাগে, তবু কাবু হয় না। পা মুখে কামড়ে ধরে উড়ে পালায়।

    খাদ্যঃ- বেগুনি কালেমের খাদ্য তালিকার বড় অংশ জুড়ে রয়েছে জলজ উদ্ভিদ। এর প্রধান খাদ্য বীজ, শস্যদানা, কচি ঘাস, কচি পাতা, তৃণমূল, কচি জলজ উদ্ভিদ ও তার নরম কাণ্ড, শাপলাসহ পদ্মফুলের ভেতরের অংশ ইত্যাদি। এছাড়া এরা জলজ পোকামাকড় ও পোকামাকড়ের লার্ভা, মাকড়শা, কেঁচো, জোঁক, শামুক, চিংড়ি, ব্যাঙ, ব্যাঙাচি, ছোট মাছ, মাছের ডিম ইত্যাদি খায়। জলজ সাপ, গিরগিটি, ছোট পাখি, পাখির ছানা, ডিম, মৃত দেহাবশেষ ইত্যাদি খাওয়ার কথাও জানা যায়।খাবার খাওয়ার সময় এরা লেজের নিচে সাদা অংশ প্রদর্শন করে এবং চাক চাক শব্দ করে ডাকে ।

    বিচরণঃ- বাংলাদেশের সর্বত্র এখন আর দেখতে পাওয়া যায় না। এরা সাধারণত হাওর, বিল, নলবন ও তৃণপূর্ণ স্রোতহীন জলাভূমিতে বিচরণ করে। যেসব জায়গায় ভাসমান বা অর্ধভাসমান পানা, গুল্ম, লতা, শাপলা ইত্যাদি প্রচুর পরিমাণে রয়েছে সেসব জলাশয় এদের পছন্দের বিচরণস্থল। কচুরিপানা কালেম পাখির প্রিয় স্থান। এছাড়াও লোনা পানির জলাশয়, কাদাভূমি, ধানক্ষেত, বনের ধারে ও মৌসুমী জলাশয়গুলোতেও এরা বিচরণ করতে পারে।

    .com/proxy/

    বেগুনি কালেম আবাসিক, পরিযায়ী অথবা খাদ্য থাকা সাপেক্ষে আংশিক পরিযায়ী স্বভাবের। এছাড়া বাসস্থান শুকিয়ে গেলেও এরা আংশিক পরিযান করে। সাধারণত ১০-১০০টির দলে দেখা যায়। তবে প্রজনন মৌসুমে জোড়ায় জোড়ায় অথবা ছোট দলে বিচরণ করে। এসব দলে বেশ কয়েকটি প্রজননক্ষম পুরুষ ও স্ত্রী সদস্য থাকে। এসব দলে অপ্রাপ্তবয়স্ক কালেমও থাকতে পারে। ভোরে ও সন্ধ্যায় এদের ডাকাডাকি ও গতিবিধি বেড়ে যায়। অন্যসব জলচর (যেমন- পাতি কুট) পাখির সাথে মিলে এরা খাবার খুঁজে বেড়ায়। এরা উড়তে পছন্দ করে না, তবে উড়ে অনেকদূর পর্যন্ত যেতে সক্ষম। এরা খুব ভাল সাঁতারু। এদের পা লিপ্তপদ না হলেও এরা সেই তুলনায় চমৎকার সাঁতার কাটতে পারে।

    প্রাকৃতিক প্রজননঃ-
    বর্ষাকালই হল কালিম পাখির প্রধান প্রজনন ঋতু।‘জোড়’ না মিললে বা ভালো সঙ্গী না পেলে এরা ডিম পাড়ে না।মজার বিষয় হচ্ছে, স্ত্রী কালিমের মন জয় করে তবেই পুরুষ কালিমকে মিলনে যেতে হয়। আর স্ত্রী কালিমের মন জয় করার জন্য পুরুষ কালিমকে শারীরিক কসরত দেখাতে হয়। কসরত প্রদর্শনকালে ঠোঁটে কচি ঘাস বা ডগা নিয়ে পুরুষ কালিমটি স্ত্রী কালিমের চারপাশে ঘুরে ঘুরে নৃত্য করে। নৃত্যে মুগ্ধ হলেই কেবল স্ত্রী কালিম মিলনে সম্মতি দেয়।গ্রীষ্ম-শরতে ভাসমান জলজ উদ্ভিদ-গুল্ম-কচুরিপানা ও ঝোপঝাড়ের তলায় ডাল-লতা দিয়ে বাসা বানিয়ে ডিম পাড়ে। একেকটি কালিম তিন (০৩) থেকে সাত (০৭) টি ডিম পাড়ে। ছানা ফোটে ১৮ থেকে ২৩ দিনে। ছানারা হয় শ্লেটি-কালো। তাতে ধূসরের আভা ছড়ানো। মাথা-কপাল জোড়া শিল্ড থাকে, রং ওই লালই। পা ও পায়ের আঙুলও লাল। মা-বাবা পাখি ছানাদের নিয়ে চরাই করে। ছানাদের বড় করতে মা-বাবা পাখির যৌথ চেষ্টা থাকে।মুরগি ছানাদের মতো ছানারা মা-বাবার পিঠে চড়ে, তেমনি মায়ের দুই পাখা ও বুকের তলায় বসে অদৃশ্য হয়ে থাকে।কিশোরগঞ্জ ও শেরপুর-জামালপুরে পোষা কালিম পাখি তথা গৃহপালিত বা ফুল টেম দেশী প্রজাতির ছোট বুরি পাখি পালন করতে দেখা যায়। 

    dsc_7039

    আমাদের দেশে দু প্রজাতির কালিম পাখি পালন করা হয়। যথা-
    ১. দেশী প্রজাতি (P. P. poliocephalus)
    ২. বিদেশী প্রজাতি (P. P. caspius)

    ১. দেশী প্রজাতিঃ দেশী প্রজাতির ছোট কালেম বা কালিম পাখি ভারত উপমহাদেশের নিজস্ব প্রজাতির  পাখি। ভারত, শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ, আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ, চীন, উত্তর মায়ানমার এবং উত্তর থাইল্যান্ড এদের মূল আবাস।এরা হাওর বাওর জলাভূমিতে বাস করে।৫০ বছর আগেও সারা বাংলাদেশের বিল-হাওরে, জলাভূমিতে বেগুনি কালিম পাখির দেখা মিলত। অবাধ শিকার, চারণ ভূমির দূষণ আর দখলে এখন এরা বেশ কোণঠাসা কয়েকটি হাওরাঞ্চলে। বর্তমানে এই প্রজাতিটি বেশ ঝুঁকির মুখে রয়েছে। ফকিরহাট-বাগেরহাট তথা বৃহত্তর খুলনায় এটি ‘বুরি’ নামে ব্যাপকভাবে পরিচিত। তাছাড়া গাজীপুর, ময়মনসিংহ, কিশোরগঞ্জ, শেরপুর, পাবনা, নাটোর, কুষ্টিয়া, সিলেটে কেউ কেউ দেশী প্রজাতির ছোট কালিম পাখি পালন করে থাকেন। 

    95787516_ed506e9d88


    দেশী প্রজাতির বিবরণঃ-  দেশী প্রজাতির বেগুনি কালিম মুরগির চেয়ে বেশ ছোট ও বুনো স্বভাবের।বৈজ্ঞানিক নাম porphyrio porphyrio poliocephalus বা P. P. poliocephalus ।এটি দেশী প্রজাতির ছোট আকারের বেগুনি, নীল-সবুজ রঙের একটি সুন্দর পাখি।এদের পা দুটি লম্বা ও চিকন। এর ডানার গোড়া আর বুক নীল, পিঠের দিকটা কালচে সবুজ। মাথার লাল মুকুটটি বেশ ছোট। এর দৈর্ঘ্য কমবেশি ৪৫ সেমি, ডানা ২৬ সেমি, ঠোঁট ৪.৫ সেমি, পা ১৯ সেমি, লেজ ১০ সেমি ও ওজন ৫০০-৬৫০ গ্রাম। মানুষ দেখলে বেশ ভয় পায়। টেম করা কঠিন ও বেশ সময় সাপেক্ষ। টেম করতে চাইলে ছোট থেকে পালন করতে হয়। 

    ২. বিদেশী প্রজাতিঃ বড় নীল কালিম পাখির এই প্রজাতিটির মূল আবাস কাস্পিয়ান সাগর, উত্তর-পশ্চিম ইরান থেকে তুরস্ক পর্যন্ত বিস্তৃত। এরা এদেশে পরিযায়ী হয়ে আসে, তাই এদের কে দেশী প্রজাতির সাথে অনেকে গুলিয়ে ফেলে।মূলত এ প্রজাতিটিকেই সারাদেশের খামারীরা লালন পালন ও ব্রিড কর থাকেন। 

    Purple+Moorhen+KNP2

    বিদেশী প্রজাতির বিবরণঃ- বিদেশী প্রজাতির বড় নীল কালিম দেখতে বেগুনি, নীল-সবুজ রঙের হয়। এরা মুরগির চেয়ে একটু ছোট আকারের এবং শান্ত স্বভাবের গৃহপালিত পাখি। বৈজ্ঞানিক নাম porphyrio porphyrio caspius বা P. P. caspius এদের পা দুটি বড় ও মোটা। এর ডানার গোড়া আর বুক নীল, পিঠের দিকটা বেগুনী সবুজ। মাথা ও মাথার লাল মুকুটটি বেশ বড়। এর দৈর্ঘ্য কমবেশি ৫৫ সেমি, ডানা ৩২ সেমি, ঠোঁট ৫.৫ সেমি, পা ২৩ সেমি, লেজ ১২ সেমি ও ওজন ৯০০-১২০০ গ্রাম। মানুষ দেখলে ভয় পায় না। খামারে জন্ম তাই টেম করা সহজ ও কম সময় লাগে। টেম করতে চাইলে ছোট থেকে পালন করা ভাল। খামার থেকে এডাল্ট বা প্রাপ্ত বযস্ক বা রানিং ক্রয় করলেও বাড়িতে মুরগীর মত ছেড়ে পালা যায়। 

    পালন পদ্ধতিঃ- Purple Swamp Hen বা বেগুনি কালিম পাখি মাংস ও তৃনভূজী একটি পাখি।আপনি চাইলে এদের খোলা জায়গায় বা ছাড়া পদ্ধতি এমন কি খাঁচায়ও পালন করতে পারবেন। এটির আচরন এবং জীবন প্রনালী ৮০% মুরগির মত। আচরন গত দিক দিয়ে গৃহপালিত কালিম পাখি ৩ প্রকারের হয়।


    ১. ফুল টেমঃ- ফুল টেম করা বা পোষ মানানো কালিম পাখি বা এদের বাচ্চা গুলো একদম বিড়ালের মতো ঠান্ডা।টেম করতে চাইলে বাচ্চা অবস্থা থেকে পোষা ভালো। আপনি যে পরিবেশে রাখবেন সে পরিবেশে সহজে মানিয়ে যাবে এবং আপনার সাথে অন্তরঙ্গ বন্ধুর মত সম্পর্ক হবে।ভালমতে টেম করতে পারলে বা টেম করা পাখি পোষলে এগুলো প্রায় কুকুর বা বিড়াল এরমত পা এর কাছে এসে মাথা ডানে বামে নাচিয়ে দুলাবে বা খাবারের জন্য আওয়াজ করবে। হাত থেকে খাবার খাবে এবং পিছনে পিছনে ঘুরবে। বিদেশী প্রজাতির বড় নীল কালিম পাখি দেশী প্রজাতির ছোট কালিম দ্রুত ফুল টেম বা পুরো শিকারী হয়। 


    ২. সেমি টেমঃ- সেমি টেম করা বা চটলা কালিম পাখি দেশি মুরগীর মতই স্বভাবের হয়। এরা খোলা পরিবেশে মুরগীর মতই সারা বাড়িতে ঘুরে বেড়াবে, খাবার খাবে এবং সন্ধ্যায় নিদিষ্ট ঘরে থাকে। এমনকি এদের বাচ্চা গুলোও মুরগির বাচ্ছার মত পেরেন্টস বা বাবা-মায়ের সাথে ঘুরে ঘুরে খাবার খাবে।কাছে গেলে বা ধরতে চাইলে মুরগীর মতই দৌড় দেয়। এরা মূলত দেশী প্রজাতির ফুল টেম করা কালিম পাখির বাচ্চা। বাচ্চা অবস্থায় মা বাবা থেকে আলাদা না করলে টেম পাখির বাচ্চাও সেমি টেম হয়।  


    ৩. সেমি ওয়াইল্ডঃ- যেসব কালিম পাখির জন্ম কোন  খামার বা বাড়িতে গৃহপালিত কালিম পাখি থেকে হয় নি তারাই সেমি ওয়াইল্ড বা আংশিক বন্য শ্রেণীর কালিম। এদেরকে বাচ্ছা বা পূর্ণ বয়স্ক অবস্থায় শিকার করে কালিম পালন কারীদের কাছে সরবরাহ করা হয়। ফাঁদ পেতে এদের ধরা হয় বলে এরা খুব ভয়ে থাকে। তাই এরা খাঁচায় থাকতে চায় না ও মানুষ দেখলে প্রচন্ড ভয় পায়। এদের গৃহপালিত বা টেম করতে বেশ সময় লাগে। প্রথম বার বাচ্চা দেওয়ার পর এরা পুরোপুরি টেম না হলেও সেমি টেম হয়। এবং এদের বাচ্চা গুলোও সেমি টেম হয়।সেমি ওয়াইল্ড কালিম কয়েকবার বাচ্ছা দেওয়ার পর সেমি টেম হয়। তাই ১-২ মাসের বাচ্ছা অবস্থা থেকে পালন করলে সহজেই টেম করা যায়।  
    Purple+Moorhen+KNP4 

    খোলা বা ছাড়া পদ্ধতিঃ- টেম করা কালিম পাখিকে আপনি চাইলে মুরগীর মত ছেড়ে পোষতে পারবেন।এরা দেশী মুরগীর মত ঘুরে ঘুরে খাবার খায়। তবে খোলা ছাদে বা শহরে পরিবেশে বাড়ীর বাউন্ডারি না থাকলে খোলা পদ্ধতিতে বা ছেড়ে পালা ঠিক নয়।কারণ হারিয়ে যেতে পারে বা মানুষ চুরিও করতে পারে।আর বাসায় যদি বাউন্ডারি থাকে সে ক্ষেত্রে অল্প ক্লিপিং করে ছেড়ে রাখতে পারেন যাতে করে দেয়ালে উঠতে না পারে।তবে ক্লিপিং পদ্ধতি অন্যান্য পাখি থেকে একটু ভিন্ন।এমন ভাবে ক্লিপিং করতে হবে যাতে করে পাখায় ভর করে ব্রিড করতে পারে।
    কালিম পাখি খুব ভাল উড়তে পারে।তবে পোষা বা হোম ব্রিড বিশেষ করে টেম করা পাখি উড়ার প্রবনতা বা মন মানুষিকতা ৮০% হারিয়ে ফেলে। তবে যখন রাজপাখ হয় বা বড় পাখ হয় তখন হঠাৎ দেশী মুরগীর মত একটু উড়াল দেয়।তবে চিন্তার কিছু নেই এক জায়গাতেই থাকে।সাধারণত কোথাও পালিয়ে যায় না।


    খাঁচায় পালনঃ- কালিম পাখি খাঁচায় পোষাটা সবচেয়ে ভাল।কারণ কালিম পাখি একটু চঞ্চল স্বভাবের হয়ে থাকবে।সুতরাং মাঝে মাঝে দেশী মুরগীর মত উড়াল দেয়।তখন খোলামেলা জায়গা না থাকলে কবুতরের মত রাস্তা চিনে নাও আসতে পারে বা কেউ হয়ত চুরি করে বা আটকে রাখতে পারে।তখনত আর সাধের পাখি খুঁজে পাবেন না।অনেকের মনে করে এগুলো পোষতে পানি লাগে।এটা সম্পুর্ন ভুল ধারনা। এটা পোষতে কোন রকম পানি লাগে না।২৪-২৪-২৪ কেজ এ খুব সুন্দর ব্রিড করাতে পারবেন।মেল ফিমেল জোড়া করে রাখতে হবে।একট মেল দুইটা ফিমেল করে পোষা যাবে না।নিয়মিত কেজ এ বা উঠানে গোসলের জন্য পানির পট রাখতে হবে।তবে সব সময় না পরিবেশ বুঝে গোসলের পট রাখবেন।মাঝে মাঝে মোল্টিং হয় তাই পাখঝড়া দেখলে ভয়ের কিছু নেই।ওরা মূলত একটু বেশী পানি খায়।তাই মলে একটু পানি পানি থাকে।এটা দেখে কেউ অযথা পাতলা পায়খানা মনে করে ঔষধ দিবেন না।যদি পাতলা পায়খানা হয় তবে মল ভাঙ্গা ভাঙ্গা এবং ছড়ানো থাকে।কালিম পাখির দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অন্য পাখিদের তুলনায় অনেক বেশি।

    Kalim


    খাঁচায় পাখির খাবারঃ- কালিম পাখিকে খাবার হিসেবে খাঁচায় ভাত, ধান, গম, ভুট্টা, পাখির সিড মিক্স, শামুক, চিংড়ি, ব্যাঙ, ব্যাঙাচি, ছোট মাছ, কচুরি-পানা, কচি ঘাস, কচি পাতা, বাঁধাকপি, পোকা মাকড় ইত্যাদি দেওয়া যেতে পারে।তবে মাছ ৭ দিনে ১দিন বা ২দিন দিলে চলে।তাছাড়া বিভিন্ন পোকামাকড় যেমন- ঘাস ফড়িং, তেলাপোকা ইত্যাদি খুব পছন্দ করে। বাচ্চা অবস্থায় বা বাচ্চা ফুটলে প্রায় ১ মাস নরম খাবার হিসাবে ভাত বা সিদ্ধ ভুট্টা, ঘাস বাধ্যতামূলক।

    কালিম পাখির রোগ বালাইঃ- Purple Swamp Hen বা বেগুনি কালিম পাখি বা বুরি পাখির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অন্য পাখিদের চেয়ে অনেক বেশি। তাই সাধারণত কোন রোগ হয় না। তবে বন্য কালিম পাখিকে ফাঁদ পেতে ধরলে অনেক সময় মানুষের ভয়ে মারা যায়। আবার বহু দূরে পরিবহন করলে যেমন- পঞ্চগড় থেকে ঢাকায় নিয়ে আসলে এরা পরিবহন জনিত ধকল সামলাতে না পেরেও মারা যায়। তাছাড়া অসুস্থ গৃহপালিত (যেমন- রানীক্ষেতে আক্রান্ত মুরগি বা কবুতর) পাখির সাথে রাখলেও রানীক্ষেত হয়ে মারা যায়। যদি বাড়িতে পালন করতে চান তবে জঙ্গলী বা বুনো কালিম পাখি শিকারী বা  অবৈধভাবে বিক্রয়কারী দোকানীদের কাছ থেকে না কিনে, টেম করা সুস্থ কালিম পাখি বা কালিম পাখির বাচ্চা খামারীদের কাছ থেকে কিনুন।

    কালিম পাখির রোগ বালাইয়ের প্রতিরোধ  ও প্রতিকারঃ সহজ ও সাধারণ কয়েকটি কাজ করলে আপনার সাধের কালিম পাখি রোগ বালাই মুক্ত ও অকাল মৃত্যু থেকে ইনশাল্লাহ রক্ষা পাবে-
    ক. বুনো বা জঙ্গলী কালিম না কিনে খামার থেকে টেম করা কালিম ক্রয় করা।
    খ. কালিম পাখিকে অন্য পশু-পাখি থেকে আলাদা পালন করা। 
    গ. কালিম পাখিকে বহু দূরে পরিবহন  করে না নেয়া। 
    ঘ. অসুস্থ্তার লক্ষণ বা ঝিমাতে দেখলে Doxy-A (VET) বা Tylovet দেওয়া যেতে পারে। 
    ঙ. কালিম পাখির ঘর ও খাঁচা পরিষ্কার, পরিচ্ছন্ন রাখা। 
    চ. কালিম পাখির জন্য নিয়মিত সুষম খাবার (ধান/ভাত,মাছ,ঘাস,পোকা-মাকড়, কেঁচো) প্রদান নিশ্চিত করা। 
    ছ. কালিম পাখি যেন কোন প্রকার ভয় না পায় বা হিংস্র জন্তু (শিয়াল, বন বিড়াল, পাগল কুকুর) আক্রমন না করতে পারে সেদিকে নজর রাখা। 
    জ. খাঁচার কালিম পাখিকে নিয়মিত কিছু সময়ের জন্য বাহিরে ছাড়া। তাতে পাখির মন ভাল থাকবে। 
    ঞ. কালিম পাখিকে (খাঁচার পাখি বা ছাড়া ) নিয়মিত গোসলের জন্য গামলায় পানি দেয়া। 

    কালিম পাখির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অন্য গৃহপালিত পাখিদের থেকে অনেক বেশি। তাই রানীক্ষেত রোগ প্রতিরোধে RDV টিকা দেওয়ার প্রয়োজন নেই। 

    ব্রিডিং পেয়ার নির্বাচনঃ- প্রথমে ব্রিডের জন্যে পেয়ার নির্বাচন করতে হবে।এ ক্ষেত্রে ৬-৭ মাস বয়স বা গলার এক ধরনের সুর বা ডাক না ছাড়লে ১০০% মেল ফিমেল চেনা যায় না।এক্ষেত্রে মেল ফিমেল চিনার উপায় একটু কষ্ট কর।গলার কন্ঠস্বর শুনে চিনতে হয়।মেল কন্ঠ মোটা, খষখষে।আর ফিমেল কন্ঠ চিকন, কোন প্রকার খষখষে ভাব থাকে না।তাছাড়া বাচ্চা অবস্থায় শরীরের আকৃতি দেখে চেনা যায়, তবে এটাতে ভুল হবার সম্ভাবনা থাকে। বাচ্চা অবস্থায় এগুলো একদম কালো থাকে এবং ৩ মাস বয়স থেকে নীলপাখ আসতে থাকে। এক বছর বয়সে ব্রিডের উপযোগী হয়ে উঠে।তবে ৮ মাসেও ব্রিড করে আবার অনেক ক্ষেত্রে একটু বেশি সময়ও লাগে।


    ডিম- বাচ্ছাঃ- খাঁচায় কালিম পাখি সাধারণত বছরে ২ বার ডিম দেয়। তবে ১দিন বয়সের বাচ্চা বাবা-মা থেকে আলাদা করলে ৩-৪ বার পর্যন্ত ডিম দেয়।এরা প্রতিবার ৬টি থেকে ১০টি পর্যন্ত ডিম দেয়।তবে কালিম পাখি মাঝে মাঝে ৪টি ডিমও দেয়।যখন ডিমের সময় হবে তখন কবুতরের ডিম পাড়ার মালসা বা পাত্র খড় সহ খাঁচায় দিয়ে দিবেন ।



    মেল ফিমেল পাল্টাপাল্টি করে ডিম তা দেয়।ফস্টারিং বা ইনকুবেটর লাগে না। বরং প্রয়োজনে অন্য পাখির ডিম ওদের দিয়ে ফস্টারিং করতে পারবেন। এদের ডিম থেকে ১৮-২১ দিনে বাচ্চা ফুটে।৩-৪দিন পর বাচ্চাদের নিয়ে মুরগীর মত বেরিয়ে পরে। কালিম পাখি বাচ্ছাদের মুখে তুলে খাইয়ে দেয় এবং বাচ্চারাও নিজে নিজে খায়।
    ফুল টেম করার ইচ্ছে না থাকলে পার্পল মোড়হেন এর ডিমকে মুরগী বা ডিম ফোটানোর মেশীন দিয়ে বা অন্য কোন উপায়ে ফুটানোর চেষ্ট না করাই ভাল।কারণ বাচ্চা বাঁচানো কষ্টকর হয়ে যায়।বাচ্চাকে প্রথম ৪-৫ দিন হাতে বা হেন ফিড করাতে হয়। আর হেন ফিড করানো অনেক বেশি ধৈর্যের ব্যাপার । 

    .com/proxy/


    এটি বিভিন্ন দেশে পাওয়া যায় তবে ওয়াইল্ড বা বন্য পরিবেশ থেকে অনেক অসাধু ব্যক্তি এগুলো শিকার করে, খেয়ে, বিক্রি করে এদের সংখ্যা অনেক কম বানিয়ে ফেলেছে।তাই এদের ডিম এবং মাংস খাওয়া থেকে সবাই বিরত থাকবেন।কারন এটা খুবই দূর্লব একটি আবাসিক ও পরিযায়ী পাখি।বাড়ীর আঙ্গিনা,বাগানবাড়ী, রিসোর্ট,খাচাঁর সৌন্দর্য বাড়াতে কালিম পাখি পালন করা যায় । কারণ এটি খুবই সুন্দর একটি পাখি, যা দেখে যেকোন আগন্তুক বা ভিজিটর মুগ্ধ হবে। 





    খামারে জন্মানো বিদেশী প্রজাতির বড় কালমি পাখি বা বাচ্চার জন্য যোগাযোগ করুন- ০১৬১১-৩৯৩৩০৭


    আরোও পড়ুন- পার্পল মোরহেন (কালিম) নিজের বাচ্চা নিজেরাই খেয়ে ফেলা সমস্যা।

                           পার্পল মোড়হেন (কালিম) পালন জনিত সমস্যা ও সমাধান

    No comments

    If you have any doubt, please let me know that with your valuable comments.

    পৃষ্ঠা

    সর্বশেষ খবর

    COVID-19 থেকে বাঁচার উপায় !