ব্রয়লার মুরগি খেলে কমবে রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা, ক্যান্সারও হতে পারে!
একাধিক গবেষণায় একথা প্রমাণিত হয়েছে যে ব্রয়লার মুরগি শরীরের পক্ষে একেবারেই ভালো নয়। আসলে যেভাবে ব্রয়লার মুরগিদের বড় করা হয়, তা একেবারেই সঠিক পদ্ধতি নয়। সর্বোপরি, বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির তোয়াক্কা না করেই তাদের ব্রিড করানো হয়, যার সরাসরি প্রভাব পড়ে আমাদের শরীরের উপর। মুরগি মোটাসোটা হবে তো তা থেকে বেশি মাংস পাওয়া যাবে, ফলে লাভ হবে বেশি। এই লোভে যেভাবে মুরগিদের মোটা করা হয় তা একেবারেই স্বাস্থ্যকর নয়। তাই সাবধান!
আসুন জেনে নেওয়া যাক ব্রয়লার মুরগীর বিপদগুলো...
১. ব্রয়লার মুরগির বাচ্চা মাত্র পাঁচ সপ্তাহেই প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে যায়! মাত্র এক কেজি আটশো গ্রাম ম্যাশ খাওয়ালেই এক কেজির নিট মাংস! দুই কেজি ওজনের মুরগি জবাইয়ের আগে ম্যাশ খাচ্ছে মাত্র তিন কেজি ছয়শো গ্রাম! রহস্যটা কী? ম্যাশের সঙ্গে মেশানো হচ্ছে ভিটামিন, ক্যালসিয়াম। ইনজেকশন পুশ করে দেওয়া হচ্ছে অ্যান্টিবায়োটিক। চড়চড় করে বড় হচ্ছে মুরগি, হু হু করে বাড়ছে ওজন। এই ব্রয়লারের মুরগিই বিক্রি হচ্ছে বাজারে। তারপর চেটেপুটে খাচ্ছি আমরা।
কিন্তু জানি কি, পিছনে লুকিয়ে রয়েছে কী ভয়ঙ্কর বিপদ? সাম্প্রতিক একটি গবেষণা বলছে, পোলট্রির মুরগি খেলে একাধিক অ্যান্টিবায়োটিক আর কাজ করবে না আমাদের শরীরে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাই ধীরে ধীরে নষ্ট হয়ে যাবে। ছোটখাটো পেটের রোগ, গ্যাস, অম্বল, সর্দিকাশি, ইনফেকশনের ক্ষেত্রেও অ্যান্টিবায়োটিক আর কাজ করবে না। ফলে রোগ সারাতে উচ্চমাত্রার অ্যান্টিবায়োটিকের সাহায্য নিতে হবে ডাক্তারদের। যে অ্যান্টিবায়োটিকের একাধিক কুপ্রভাব পড়বে আমাদের শরীরে।
২. কাঁচা মাংসে প্রচুর মাত্রায় ব্যাকটেরিয়া থাকে। আর দোকানে যেভাবে একাধিক মুরগিকে এক সঙ্গে রাখা হয় তাতে দু-পাঁচটার শরীরে সেই ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়াগুলি প্রবেশ করে না যাওয়াটা কোনও অস্বাভাবিক নয়। আর এমনটা যে হয় না, সে কথা কেউ নিশ্চিত করে বলতে পারে কি? শুধু তাই নয়, যখন মুরগী কাটা হয় তখনও জীবিত মুরগির শরীর থেকে কাঁচা মাংসে ব্যাকটেরিয়া চলে যাওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়। আর এই জীবাণু যদি আমাদের শরীরে প্রবেশ করে তাহলে আর রক্ষা নেই।
৩. কয়েকজন বিশেষজ্ঞের মতো মাত্রাতিরিক্ত ব্রয়েলার মুরগি খেলে রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধা পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও বৃদ্ধি পায়। তবে এই যুক্তির স্বপক্ষে এখন পর্যন্ত কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
৪. ব্রয়লার চিকেন খেলে ফুড পয়জনিং হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। একাধিক গবেষণয়া দেখা গেছে প্রায় ৬৭ শতাংশ ব্রয়েলার মুরগির শরীরে ই-কোলাই ব্যাকটেরিয়া থাকে, যা কোনও ভাবেই কিন্তু আমাদের শরীরের জন্য ভালো নয়।
৫. বাজার থেকে ব্রয়লার মুরগির মাংস কিনে কখনই বাকি খাবার বা সবজির সঙ্গে সেটি রাখবেন না। শুধু তাই নয়, যে ছুরি দিয়ে মাংসটা কাটবেন তা দিয়ে ওই সময় সবজি কাটবেন না। আর যে প্লেটে কাঁচা মাংসটা রাখবেন তা ভালো করে ধুয়ে নিয়ে তবেই অন্য় কাজে লাগাবেন। যেমনটা আগেও বলেছি কাঁচা মাংসে অনেক সময়ই ব্যাকটেরিয়া থাকে। এই নিয়মটা মানলে সেই জীবাণু বাকি খাবারে ছড়িয়ে যাওরা সুযোগ পায় না। ফলে শরীর খারাপ হওয়ার আশঙ্কা কিছুটা হলেও কমে।
দেশি মুরগি কি ক্ষতিকারক নয়? একেবারেই না। কারণ কি জানেন? দেশি মুরগি একেবারে প্রকৃতির নিয়ম মেনে বড় হয়। ফলে ব্রয়লার মুরগির মতো তাদের শরীরে কোনও কেমিকেলের উপস্থিতি যেমন পরিলক্ষিত হয় না, তেমনি দেশি মুরগি অনেকাংশেই ব্যাকটেরিয়া মুক্ত হয়। ফলে তা থেকে আমাদের শরীর খারাপ হওয়ার আশঙ্কা থাকে না।
সূত্র: বোল্ডস্কাই
No comments
If you have any doubt, please let me know that with your valuable comments.