সুপার-ঘূর্ণিঝড়-আম্পান!

  • ব্রেকিং নিউস

    আয়্যাম কেমানি বা আইয়াম সেমানি বা কাদাথনাথ মুরগি !!

    মুরগির ঝোল কিংবা ঝাল ফ্রাই, ফ্রায়েড চিকেন বা রোস্ট যেভাবেই পাখি প্রজাতির এই প্রাণীটির মাংস খাওয়ার কথা ভাবতে পারেন একজন সাধারণ বাংলাদেশি, তাতে কালো মুরগির কথা ভাবেন না প্রায় কেউই। কারণ খুব সাধারণ, বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষের কাছে কালো মুরগি পরিচিত নয়। কিন্তু এই কালো মুরগিকে বলা হয় বিশ্বের সবচেয়ে দামি মুরগি।  

    বাংলাদেশে এই মুরগি এখন বাণিজ্যিকভাবে চাষ করা হচ্ছে। আর পোল্ট্রি মালিকেরা বলছেন গত কয়েক বছর ধরে খামারীদের কাছে তা ক্রমে জনপ্রিয়ও হয়ে উঠতে শুরু করেছে। 

    কাদাকনাথ এর উৎপত্তি?

    কালো জাতের মুরগির এর আসল নাম আয়্যাম কেমানি, ইন্দোনেশীয় ভাষায় আয়্যাম মানে মুরগি এবং কেমানি অর্থ পুরোপুরি কালো। এটি মূলত ইন্দোনেশিয়ার জাভা দ্বীপের প্রাণী। সেখানে কোন এক ব্রিডার রেড জঙ্গল ফাউলে সাথে গ্রিন জঙ্গল পাউলে প্রজনন করেন। তারপর তিনি দেখতে পান, জন্মানো বাচ্চাগুলো পুরোপুরি কালো। পালক, চামড়া, ঠোঁট, নখ, ঝুঁটি, জিভ, মাংস এমনকি হাড় পর্যন্ত কালো রঙের।

    ভারতে এই জাতটি আসার পর বিবর্তিত হয়ে ভারতের মধ্য প্রদেশ, উত্তর প্রদেশ এই মুরগি কাদাকনাথ বা কালো মাসি নামে পরিচিতি লাভ করে।  ভারতের মধ্য প্রদেশ থেকেই মুলত বাংলাদেশে আনা হয়েছে কালো মুরগি।  শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক মাকসুদা বেগম বিবিসিকে বলেছেন, একে বাংলাদেশে কেদারনাথ ব্রিড বা কালোমাসি বলে চেনেন কৃষিবিজ্ঞানীরা। 
     
    জাত উন্নয়নে বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইন্সটিটিউট এবং কৃষি বিজ্ঞানীরা নানা ধরণের গবেষণা করছেন, যাতে দেশি কোন জাতের মুরগির সঙ্গে এর কৃত্রিম প্রজনন ঘটানো যায় কিনা, যাতে এর উৎপাদন ক্ষমতা বাড়ে। তাছাড়া কিছু বাংলাদেশী ব্রিডার এর প্রজনন ও সংকরায়ন নিয়ে কাজ করছে। এর মধ্যে ইঞ্জিঃ আল মেরাজ মোল্লার এম.এস এগ্রো লিঃ অন্যতম। ইতিমধ্যেই দেশি ব্রিডাররা কাদাখনাথের কিছু ভ্যারাইটি যেমন- গলাছিলা কাদাথনাথ, মাল্টি কালারের অধিক ডিম দেওয়া কাদাথনাথ ব্রিড করতে সক্ষম হয়েছে। 

    জাত বা প্রকারভেদ: 

    ১. আয়্যাম কেমানি বা আইয়াম সেমানি ( আসল জাত, ইন্দোনিশিয়ান), ডিম কালো রং বা ক্রিম কালার

    ২. কাদাখনাথ বা কালি মাসি ( ভারত, বিবর্তিত জাত), ডিম সাদা

    ৩. সেমানি ক্ল্যাসিক বা আইয়াম সেমানি ক্ল্যাসিক (বাংলাদেশী জাত), ডিম সাদা ও ক্রিম কালারের

    ৪. তুর্ক সেমানি বা গাজী সেমানি বা তুর্কি কাদাকনাথ মুরগি (তুরস্ক), ডিম বাদামি

    ৫. বাংলানাথ (বাংলাদেশে সংকরায়নকৃত), ডিম সাদা ও তুলনামুলক ছোট। 

    কালো মুরগির বৈশিষ্ট্য?

    - কালো মুরগির মাথার ঝুঁটি থেকে পা, অর্থাৎ এর সমস্ত অঙ্গের রং কালো। পালক, চামড়া, ঠোঁট, নখ, ঝুঁটি, জিভ, মাংস এমনকি হাড় পর্যন্ত কালো রঙের। 

    -কিন্তু এদের রক্ত অন্যান্য মুরগির মতই লাল রংঙের। 

    - গবেষক, সরকারি কর্মকর্তা এবং খামারিরা জানিয়েছেন, কালো মুরগি একটি বিরল প্রজাতির মুরগি।  

    - অরিজিনাল বা আসল আইয়াম সেমানি ও ভারতের কালি মাসি বা কাদাখনাথ বছরে ১২০ থেকে ১৫০টি ডিম পাড়ে একেকটি মুরগি। 

    - আইয়াম সেমানি ক্ল্যাসিক বা সেমানি ক্ল্যাসিক বছরে ১৮০-২২০টি ডিম দিয়ে থাকে। (এম. এস এগ্রো লিঃ কর্তৃক উদ্ভাবিত জাত)

    - তবে, এই মুরগি ডিমে তা দেয় না। বাচ্চা ফোটাতে দেশি মুরগির নিচে তা দেয়া হয়, কিংবা ইনকিউবেটরে কৃত্রিমভাবে তা দিয়ে বাচ্চা ফোটানো হয়।

    কালো মুরগির পুষ্টিগুণঃ 

    কালো মুরগি নানা ধরণের রোগ সারায় বলে মনে করেন অনেকে। ঔষধি গুনাগুণের জন্য এই মুরগির কদর অনেক বাংলাদেশে। শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক মাকসুদা বেগম বলেছেন, দেশি মুরগির চেয়ে এই মুরগির মাংসের স্বাদ বেশি।  এছাড়া খাদ্যগুণের বিচারে কালো মুরগির মাংসে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং আয়রন রয়েছে।  

    এছাড়া সাধারণ মুরগির তুলনায় এই মুরগির মাংসে কোলেস্টরেলের মাত্রাও অনেক কম থাকে।  কোলেস্টরেল কম থাকে বলে এই মুরগি রক্তচাপ এবং রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।  এই মুরগির মাংসে ফ্যাটি অ্যাসিড উপাদান অনেক বেশি থাকে। কিন্তু প্রোটিনের মাত্রা অন্য সব মুরগির মাংস থেকে কয়েক গুণ বেশি।

    সূত্রঃ বিবিসি

     

    No comments

    If you have any doubt, please let me know that with your valuable comments.

    পৃষ্ঠা

    সর্বশেষ খবর

    COVID-19 থেকে বাঁচার উপায় !