ককাটেল পাখির প্রতিদিনের খাবার
ককাটিয়েল হল কাকাতুয়া পরিবারের একটি পাখি । ককাটিয়েলকে ক্যারিওন এবং উইরো নামেও ডাকা হয় । বাংলাদেশে এটি 'ককাটেল' বা 'ককাটেল পাখি' নামেই বেশি পরিচিত । ককাটিয়েল মূলত অস্ট্রেলিয়া অঞ্চলের এন্ডেমিক প্রাণী; এর বৈজ্ঞানিক নাম Nymphicus hollandicus । বন্য প্রজাতি হিসেবে একে অস্ট্রেলিয়া ছাড়া কোথাও পাওয়া না গেলেও বিশ্বব্যাপি এটি খাঁচায় পোষা গৃহপালিত পাখি হিসেবে পালিত হয় । সহজে বাচ্চা উৎপাদন, সৌন্দর্য ও আরও কিছু কারণে এটি বাজিরিগার এর পরে খাঁচায় পোষা দ্বিতীয় বৃহত্তম প্রজাতি ।
ককাটিয়েল Nymphicus গণ এর একমাত্র প্রজাতি । পূর্বে এটিকে ঝুঁটিওয়ালা তোতা বা ছোট কাকাতুয়া হিসেবে বিবেচনা করা হত । সাম্প্রতিককালের মলিকিউলার গবেষণা ককাটিয়েলকে এটির নিজস্ব উপগোত্র Nymphicinaeতে অন্তর্ভুক্ত করেছে । এটি এখন কাকাতুয়ার পরিবার Cacatuidae গোত্রের ক্ষুদ্রতম উপগোত্র হিসেবে পরিচিত । ককাটিয়েলের উৎপত্তি ও বিচরণ অস্ট্রেলিয়ায় । অস্ট্রেলিয়ান জলাভূমি, বুনো ঝোপঝাড় ও গুল্মভুমিগুলোতে এদের আবাসস্থল, বসবাস ।
খাঁচাবন্দি ককাটিয়েল সাধারণত ১৬ থেকে ২৫ বছর বাঁচে । রেকর্ড অনুযায়ী কিছু কিছু ক্ষেত্রে ককাটিয়েল ১০ থেকে ১৫ বাঁচে; ককাটিয়েলের ৩২ বছর বেঁচে থাকারও রেকর্ড আছে । একটি ককাটিয়েল পাখি অবশ্য ৩৬ বছর বেঁচে ছিল । এগুলো সাধারণত নির্ভর করে খাবার, পরিবেশ আর ওড়ার জায়গার উপর।
পাখি প্রেমিদের কাছে অত্যন্ত পছন্দের একটি সৌখিন পাখি ককাটেল। যার আদি নিবাস সুদূর অস্ট্রেলিয়া। এরা প্যারাকিট বা টিয়া প্রজাতির পাখি। আদুরে ককাটেল এর সৌন্দর্যের জন্য বিখ্যাত। বন্য ককাটেল ধূসর বর্ণের হয়।
সৌখিন পাখি পালকদের দীর্ঘদিনের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে এদের এখন এদের অনেক মিউটেশনের সৃষ্টি হয়েছে। এদের মধ্যে লুটিনো, ফন, গ্রে, রুবিনো, হোয়াইট ফেস, সিলভার প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। মাথায় ঝুটি দেখে এ পাখিকে সহজেই অন্য পাখি থেকে আলাদা করা যায়। মজার ব্যাপার হচ্ছে ককাটেলের মেল এবং ফিমেল পাখি দেখতে হুবহু একই রকম। আপনি যদি অভিজ্ঞ ব্রিডার না হন তবে, এদের শনাক্ত করতে বেশ ঝামেলাই পোহাতে হবে আপনাকে। শুধু পাখি চেনা ই নয় এদের খাবার দাবার, পালন পদ্ধতি কিংবা ব্রিডিং কৌশল জানার জন্য অভিজ্ঞ ককাটেল পালকদের পরামর্শ নেয়া উচিত। নবীন ব্রিডারদের যাতে ককাটেল পালন সহজ হয় তাই এদের প্রতিদিনের খাবারের একটি তালিকা দেয়া হল;
১| সীড মিক্স
২| যেকোনো ১ টি শাক / পাতা : পালং / কলমি /পুদিনা পাতা / সজনে পাতা / নিম পাতা / লাল শাক / ধনে পাতা ইত্যাদি
৩| যেকোনো ১ টি সবজি : এসপারাগাস/ ব্রকোলি/ বরবটি/বাধা কপি/ মিষ্টি কুমড়া/ ঝিঙ্গা / চিচিঙ্গা/শসা/সজনে ডাটা /মটরশুটি/সীম/ সীম এর বিচি/ কাচা পেপে/ পটল/ ঢেঁড়শ
৪| যেকোনো ১ টি ফল : আপেল / স্ট্রবেরি/ ফুটি / তরমুজ/ পেপে/ নাশপাতি/ পেয়ারা /কামরাঙ্গা/ আমড়া৫| কাটল ফিশবোন্ (সাগরের ফেনা)
৬| ফুটানো এবং ফিল্টার করা টাটকা পানি : সকালে ১ বার & সন্ধায় ১ বার বদলে দিবেন
৭| সজনে পাতা লিফ – সাপ্তাহিক 2 দিন (এতে প্রচুর পরিমানে ক্যালসিয়াম , প্রোটিন, সবরকমের ভিটামিন ও মিনারেল আছে)
৮| অঙ্কুরিত বীজ – সাপ্তাহিক ২ দিন৯| সেদ্ধ বুটের ডাল – সাপ্তাহিক ২ দিন
১0| শুকনো কুমড়ো বীজ – সাপ্তাহিক ২ দিন
১১| ঘৃতকুমারী টুকরা – সাপ্তাহিক ২ দিন
১২| সপ্তাহে ১ বার অথবা চিকিত্সার প্রয়োজন অনুযায়ী – তুলসী দ্রবণ (ঠান্ডায়), aloe vera /ঘৃতকুমারী দ্রবণ (গরমে, হজম & পালকের সমস্যায়)| সকাল থেকে ৬ ঘন্টা রেখে এরপর বদলে দিয়ে সাধারণ পানি দিবেন|
*শাক সবজি ফল দেয়ার আগে সবসময় বড় একবাটি পানিতে ভালমত ডলে ধুবেন ৩ বার|
*ফল দেয়ার আগে বিচি ফেলে দিবেন|
*ফল দেয়ার আগে বিচি ফেলে দিবেন|
ককাটিয়েল পাখির সীডমিক্স অনুপাত -
চিনা ৩ কেজি, কাউন ১ কেজি ৫০০ গ্রাম, সূর্যমুখী বীজ ২৫০ গ্রাম, পোলাও চালের ধান ১ কেজি ৫০০ গ্রাম, ক্যানারি ১ কেজি, গুজি তিল ২৫০ গ্রাম
সীডমিক্স অবশ্যই ভালো করে ধুয়ে টানা ৩ দিন কড়া রোদে ভালো করে শুকিয়ে নিতে হবে।
শাক সবজি
- এসপারাগাস (বাংলায় শতমূলী)
- ব্রকোলি
- গাজর
- বরবটি
- সবুজ শাক সবজি (বাধা কপি,পালং শাক,কলমি শাক,লেটুস পাতা প্রভৃতি)
- মটর
- মরিচ(যেকোনো রঙ সবুজ কিংবা লাল)
- মিষ্টি কুমড়াঝিঙ্গা / চিচিঙ্গা
- শসা
ফল
- আপেল
- কলা
- জাম জাতীয় রসালো ফল(ব্ল্যাক বেরি/ কালো জাম , ব্লুবেরি,ক্রানবেরি,রাজবেরি,স্ট্রবেরি)
- ফুটি / খরমুজ
- চেরি ফল
- আঙ্গুর
- লেবু
- আম
- তরমুজ
- কমলা
- পেপে
- পিচ
- নাশপাতি
- পেয়ারা
No comments
If you have any doubt, please let me know that with your valuable comments.