সুপার-ঘূর্ণিঝড়-আম্পান!

  • ব্রেকিং নিউস

    আসুন বাংলাদেশের কিছু মাছ চিনে নেই (পর্ব -১)

    আমরা বাঙালি। আমাদেরকে এক সময় বলা হত, 'মাছে ভাতে বাঙালি'। কিন্তু এই দ্রব্যমূল্যের উর্ধগতির বাজারে মাছের মূল্যেরও উর্ধ্বগতি আজ আমাদের এই বৈশিষ্ট্যকে ইতিহাসে পরিণত করেছে। এক সময় মাছ ছিলো বাঙালির প্রতিদিনের খাদ্য। কিন্তু আজ অনেকে আমাদের দেশী অনেক মাছই চেনে না। বাংলাদেশের মাছ নিয়ে তাই লিখতে বসেছি এই ব্লগ। আজ প্রথম পর্ব দিলাম। যদি পাঠকের ভালো লাগে তাহলে আরও কিছু মাছের নাম, বৈশিষ্ট্য ও ছবি নিয়ে আসবো আপনাদের সামনে। যারা সরাসরি দেখতে চান তাহলে বাজারে গিয়ে ছবি দেখে মিলিয়ে নিবেন। কিনতে না পারলে কি আর করা!! আজকের পর্বে দশটা মাছের নাম, বৈশিষ্ট্য ও ছবি দিলাম।

    খলিশাঃ খলিশা মাছ বাংলাদেশের সর্বত্র পাওয়া যায়। গ্রামে-গঞ্জে যারা থাকেন তারা এই মাছ খুব ভালই চেনেন। তাই খাল-বিল বা ডোবায় জন্ম নেয় এই মাছ। খলিশা মাছের দেহের উপরিভাগ সবুজাভ এবং দেহ ডোরাকাটা। খলিশা মাছের প্রধান খাদ্য হলো, মশার শুক ও মূককীট। তাই মশা নিয়ন্ত্রণে খলিশা মাছের ভূমিকা অপরিসীম। এ ছাড়াও এদের খাদ্য তালিকার বড় অংশ জুড়ে রয়েছে শ্যাওলা বা অ্যালগী (algae)। এরা ডিম পাড়ার মাত্র ১৪-১৫ ঘন্টার মধ্যে পোনা নির্গত হয়।

    ছবিঃ


    আইর মাছঃ প্রায় ফুটখানেক লম্বা আঁশবিহীন মাছ। মিঠা পানি ও সমুদ্র তীরবর্তী লোনা পানিতে জন্ম নেয়। তাই সারা বাংলাদেশেই এই মাছ প্রচুর পরিমানে পাওয়া যায়। বড়শি দিয়ে এই মাছ ধরা খুব সহজ। এরা এদের চেয়ে ছোট মাছ ও বিভিন্ন জলজ পোকা মাকড় খেয়ে জীবন ধারণ করে। তাই মাছের চাষ করতে গেলে আইর মাছ পুকুরে রাখা বিপজ্জনক। কারণ, এরা পোনা মাছ খেতে পছন্দ করে।

    ছবিঃ


    টেংরাঃ টেংরা মাছ আমাদের দেশের অতি পরিচিত মাছগুলোর একটি। যেহেতু দেশী মাছ নিয়ে এই ব্লগ, তাই টেংরাকে বাদ দেয়া চলে না। এই মাছ বাংলাদেশের সর্বত্র পাওয়া যায়। এই মাছের ভর্তা খেতে দারুণ মজা! এই মাছ কর্দমাক্ত ও আগাছাযুক্ত জলাশয়ে পাওয়া যায়। বর্ষাকালে এই মাছ বাজারে প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। এই মাছ একুরিয়ামেও রাখা যায়।

    ছবিঃ


    ঘুংগাঃ ঘুংগা নামের এই মাছকে কাবাশী ট্যাংরাও বলা হয়। এরা দেখতেও ট্যাংরার মতই। তবে পেটের দিক হলুদাভ। খেতে অতি সুস্বাদু এই মাছ বাংলাদেশের সর্বত্র পাওয়া যায়। জাল ও বড়শি দ্বারা এই মাছ প্রচুর পরিমাণে ধৃত হয়।

    ছবিঃ


    জুংলাঃ অনেকটা অপরিচিত মাছ। ৬ ইঞ্চি দৈর্ঘের এই মাছের পিঠের পাখনা দেহের উচ্চতা হতে দীর্ঘতর। হালকা ধূসর বর্ণের। বক্ষদেশের কাঁটা ভেতরের দিকে খাঁজ কাটা থাকে।

    ছবিঃ


    রিটাঃ পায় এক ফুট দীর্ঘ এই মাছ স্বাদু ও লোনা পানিতে পাওয়া যায়। এই সুস্বাদু মাছের গাত্রবর্ণ সবুজাভ বাদামী। এরা ঘোলা পানিতে বেশী থাকে। (ঘোলা পানিতে মাছ শিকার কথাটা এদের থেকেই এসেছে কি?) এরা পোকা মাকড় ও অন্য মাছ খেয়ে জীবন ধারন করে। পোনা অবস্থায় বিভিন্ন জলজ উদ্ভিদের মূল খেয়ে বেঁচে থাকে।

    ছবিঃ


    কাকিয়া, কাইক্কা বা কাক্‌লিঃ এদের প্রধান বৈশিষ্ট্য হল, দীর্ঘ চোঙ্গার মত দেহ এবং এর উভয় চোয়ালের অতি দীর্ঘকার ঠোঁট ও তাতে তীক্ষ্ণ দাঁতের সমাবেশ। সাধারণত নদীতে ও খালে এবং বর্ষাকালে সর্বত্র দেখা যায়। এদের পিঠের দিকটা কালচে ধূসর ও বুকের দিকে সাদা। এরা পেটুক ধরণের; ক্ষুদ্রাকার মাছ খায়।

    ছবিঃ


    চান্দাঃ অনেকটা গোলাকার ও সূক্ষ্ণ আঁশ যুক্ত। দুই পাশ উজ্জ্বল রূপালী। এরা পরিষ্কার পানিতে থাকতে পছন্দ করে, নদী, নালা, খাল, বিল সর্বত্র এদের দেখা মেলে। প্রায় ২ ইঞ্চি দীর্ঘ, দেহের বর্ণ হলুদাভ সাদা। এরা দিনে ১২০ টার মত মশার শুককীট ও মূককীট খেতে পারে। তাই মশা নিধনে এই মাছ কাজে লাগতে পারে।

    ছবিঃ


    ইলিশ মাছঃ বাংলাদেশের জাতীয় মাছ। তাই এই মাছ সবাই চেনে। এরা প্রকৃতপক্ষে লোনা পানির মাছ। তবে ডিম পাড়ার সময় হলে এরা নদীতে চলে আসে। মে-অক্টোবর মাসে ইলিশ মাছে বেশী পাওয়া যায়। রূপালী রঙের এই মাছ বাংলাদেশে একসময় প্রচুর পাওয়া যেত। তবে ইদানিং এই মাছ দুর্লভ হয়ে উঠছে।

    ছবিঃ


    চাপিলা, খয়রাঃ এরা দেখতে ছোট আকারের ইলিশ মাছের মত। ৪/৫ ইঞ্চি, রূপালী গাত্র বিশইষ্ট মাছটির ঘাড় ও পিঠ কালো ভাবাপন্ন। লেজ দ্বিধাবিভক্ত। এরা প্রধানত নদী-নালার মাছ, যদিও বর্ষাকালে বিল ও খালে ছড়িয়ে পড়ে। এরা পানির উপরের দিকে থাকে।

    ছবিঃ


    ধৈর্য সহকারে পড়ার জন্য ধন্যবাদ। ভুল হলে ধরিয়ে দেবার জন্য পাঠকগণকে অনুরোধ করছি।

    No comments

    If you have any doubt, please let me know that with your valuable comments.

    পৃষ্ঠা

    সর্বশেষ খবর

    COVID-19 থেকে বাঁচার উপায় !